ধানসিঁড়ি নিউজ।।আজ ১৭ মে বেলা ১২ টায় উপজেলা প্রশাসন, মেহেন্দিগঞ্জ, বরিশাল এর আয়োজনে উপজেলা সম্মেলন কক্ষে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ আম্পান মোকাবিলায় মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির ২য় জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়।

উপজেলা চেয়ারম্যান এর সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সাংসদ পংকজ নাথ এমপি। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিজুস চন্দ্র দে, পৌর মেয়র কামাল খান ও ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ খোরশেদ আলম ভুলু, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানবৃন্দ ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তাবৃন্দ৷

সভার শুরুতে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সভাকে আবহাওয়ার সর্বশেষ অবস্থা অবহিত করেন। তিনি জানান, দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন দক্ষিণপশ্চিম বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় আম্পান কার্যতঃ একই এলাকায় (১১.৮ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৬.০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) স্থির থেকে প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়েছে।

এটি আজ ১৭ মে বিকাল তিনটায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১৩২৫ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬০ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৫০ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্র বন্দর থেকে ১২৩০ কিঃ মিঃ দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরও ঘনীভূত হয়ে উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর হতে পারে। প্রবল ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিঃ মিঃ এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৮৯ কিঃ মিঃ যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১৭০ কিঃ মিঃ পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। গভীর নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকট সাগর খুবই বিক্ষুব্ধ রয়েছে। চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দর সমূহকে ৪ পুনঃ ৪ নম্বর স্থায়ী হুঁশিয়ারী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত সকল মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে যাতে স্বল্পতম সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে। সেই সাথে তাদেরকে গভীর সাগরে বিচরণ না করতে বলা হয়েছে।

এ পর্যায়ে, উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির ২য় জরুরি সভায় বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ আম্পান মোকাবিলায় নিম্নোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গ্রহণ করা হয়ঃ
১. মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় ৪৮ টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখতে হবে যেখানে সামাজিক দূরত্ব রক্ষা করে প্রায় ১৫ হাজার মানুষ আশ্রয় নিতে পারবে।
২. প্রয়োজনে যাতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকেও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা যায়, তার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
৩. উপজেলার সকল স্থানে, পৌরসভা ও ইউনিয়ন পর্যায়ে মাইকিং করে আবহাওয়ার সর্বশেষ তথ্য প্রচার করতে হবে।
৪. মাঠে থাকা বোরো ধান দ্রুত কেটে ফেলার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কৃষকদের পরামর্শ দিতে হবে৷ প্রয়োজন হলে তাদের ধান কাটায় সহযোগিতা করতে হবে।
৫. প্রাণীসম্পদ রক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করতে হবে।
৬. সিপিপি, রেড ক্রিসেন্টসহ সকল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো দূর্যোগ মোকাবেলায় সকল ধরণের প্রস্তুতি রাখতে হবে।
৭. উপজেলা পর্যায়ে দুর্যোগ মোকাবেলায় কন্ট্রোল রুম চালু করে সংশ্লিষ্ট মোবাইল নম্বর বহুল প্রচার করতে হবে।

অতঃপর সভাপতি সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন৷