নিউজ ডেস্ক।।পাঁচ দশকের বেশি সময় পর প্রতিবেশি দুই দেশের সামরিক বাহিনীর সংঘর্ষে প্রথমবারের মতো ভারতীয় এক সেনা কর্মকর্তা ও দুই সৈন্যের মৃত্যুর পর ঝামেলা না বাড়াতে ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে চীন। সোমবার রাতের ওই সংঘর্ষের পর ভারতের উদ্দেশে চীন বলেছে, একপাক্ষিক কোনও ব্যবস্থা নেবেন না অথবা ঝামেলা বাড়াবেন না।
মঙ্গলবার চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ভারতকে সতর্ক করে দিয়ে এই মন্তব্য করেছে বলে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স। হিমালয় পর্বত অঞ্চলের বিতর্কিত লাদাখ সীমান্তে দুই পক্ষের সৈন্যদের সংঘাতে প্রায় ৫৩ বছর পর প্রথম প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে সোমবার রাতে।
এই সংঘাতে উভয় পক্ষের সৈন্য হতাহত হয়েছে বলে ভারতীয় সেনাবাহিনীর এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে। তবে লাদাখের এই সংঘর্ষে চীনের কোনও সৈন্য হতাহত হয়েছে কিনা তা এখনও নিশ্চিত করেনি বেইজিং।
ভারতীয় জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা এনডিটিভিকে বলেছেন, গোলাবর্ষণে নয়; বরং পাথর নিক্ষেপ এবং লাঠির আঘাতে ভারতীয় সৈন্যরা মারা গেছেন। উত্তেজনা প্রশমনে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশি এ দুই দেশের জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তারা বর্তমানে লাদাখে বৈঠকে বসেছেন।
ভারতীয় সৈন্যদের বিরুদ্ধে সীমান্ত অতিক্রম করে চীনা ভূখণ্ডে প্রবেশের অভিযোগ এনেছে বেইজিং। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঝ্যাও লিজিয়ান বলেছেন, ভারতীয় সৈন্যরা সোমবার অন্তত দু’বার সীমান্ত অতিক্রম করে অনুপ্রবেশের পর চীনা কর্মকর্তাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। যে কারণে দু’পক্ষের সৈন্যদের গুরুতর শারীরিক সংঘাত হয়েছে। সৈন্যদের সীমান্ত অতিক্রম এবং সংঘাতে জড়ানোর এ ঘটনায় দিল্লির কাছে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে বেইজিং।
তিনি বলেন, আমরা আবারও আন্তরিকভাবে অনুরোধ করছি, বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গি বদল করে ভারত তাদের সম্মুখসারির সৈন্যদের সংযত রাখবে। চীনা এই কর্মকর্তা বলেন, সীমান্ত অতিক্রম করবেন না, ঝামেলা বাড়ানোর উসকানি দেবেন না। সীমান্ত পরিস্থিতি জটিল করে তোলে এমন কোনও একপাক্ষিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন না।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হিমালয় অঞ্চলের গালওয়ান উপত্যকায় প্রতিবেশি এ দুই দেশের সৈন্যরা পরস্পরের ভূখণ্ডে অনুপ্রবেশের পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এনে মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছে। উভয় দেশের সৈন্যরা কিছুদিন আগেও একবার শারীরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
লাদাখে মোতায়েনকৃত সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে গত ১০ দিন ধরে উভয় দেশের মধ্যে আলোচনা চললেও তাতে কোনও পক্ষই সাড়া দেয়নি।