নিউজ ডেস্ক: রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলায় ভাইয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে শহর থেকে স্বামী-সন্তানসহ প্রাইভেট কারে রওনা হয়েছিলেন দুই বোন। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন সাতজন। গুরুতর আহত হয়েছেন আরও দুজন।
শনিবার দুপুর ১২টার দিকে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ মহাসড়কের সাহাব্দিপুর এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়জনের পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন- গোদাগাড়ী উপজেলার কেল্লাবারুইপাড়া গ্রামের রমজান আলীর স্ত্রী আসিয়া বেগম (৩৫), রাজশাহী নগরীর মুন্নাফের মোড় এলাকার মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে মোসাব্বির হোসেন আকাশ (৪০), তার স্ত্রী হোসনে আরা (৩৪), মেয়ে মুসফিরা খাতুন (৭), ছেলে আদিব আল হাসান (১) এবং নগরীর মেহেরচণ্ডি এলাকার মতিউর রহমানের ছেলে মাহবুবুর রহমান (৩৫)।
নিহত মাহবুবুর রহমান প্রাইভেটকারের চালক ছিলেন। আহত দুজন হলেন- নিহত আসিয়া বেগমের স্বামী রমজান আলী (৪২) এবং তার মেয়ে রাফিয়া খাতুন (১২)।
তারা গোদাগাড়ী পৌরসভার মহিষালবাড়ি মহল্লায় বিয়েবাড়িতে যাচ্ছিলেন। এই এলাকার মুক্তিযোদ্ধা জান মোহাম্মদের মেয়ের সঙ্গে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার দেবীনগর চর চাকলাম গ্রামের গোলাম মোর্তজার ছেলে সেলিমের বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল।
দুর্ঘটনায় নিহত যাদের পরিচয় পাওয়া গেছে তারা বর সেলিমের বোন, ভগ্নিপতি, ভাগ্নে এবং ভাগ্নি। পরিচয় না পাওয়া অজ্ঞাত নারী তার বোনের গৃহকর্মী হতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বরসহ বরযাত্রীরা চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে কনের বাড়িতে যান। আর রাজশাহী শহর থেকে বরের দুই বোনের পরিবার একটি প্রাইভেটকার নিয়ে বিয়েবাড়িতে যাচ্ছিল। রমজান আলী তার পরিবার নিয়ে ঢাকায় থাকেন। রাতে তিনি রাজশাহী এসে ভাইরা ভাইয়ের বাড়িতে ছিলেন। সকালে দুটি পরিবার একসঙ্গে বিয়েবাড়ির বাড়ির উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। পথে সাহাব্দিপুর এলাকায় দুর্ঘটনা ঘটে।
গোদাগাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খাইরুল ইসলাম জানান, প্রাইভেটকারটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশে একটি গাছে ধাক্কা খেয়ে দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই এক নারীসহ তিনজন নিহত হন। গুরুতর আহত তিন শিশুসহ ছয়জনকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়।
রামেক হাসপাতালের উপপরিচালক সাইফুল ফেরদৌস জানান, হাসপাতালে পৌঁছার আগেই এক নারী ও এক শিশু মারা যায়। আর চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরে আরও এক শিশু এবং এক নারী মারা যান। এখন হাসপাতালে দুজন চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের অবস্থাও সংকটাপন্ন।
দুপুরে বিয়েবাড়িতে গিয়ে দেখা গেছে, কোনো অতিথি নেই। কনেপক্ষের কিছু আত্মীয়-স্বজন আছেন। বর সেলিমকে একটি খাটে শুইয়ে রাখা হয়েছে। কিছুক্ষণ পরপর তিনি অচেতন হয়ে পড়ছেন। কনেপক্ষের স্বজনরা জানান, দুর্ঘটনার পর দুই পক্ষের মুরব্বিদের পরামর্শে বর-কনের বিয়ে পড়ানো হয়েছে।