অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলার প্রধান সাক্ষী থেকে আসামি বনে যাওয়া রিফাতের স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির জামিন আবেদন আবারও নামঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার বিকেল ৩টার দিকে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন। একই সঙ্গে জামিন চাওয়ায় আদালতের বিচারককে মিন্নির মোবাইল কললিস্ট ও ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানা পুলিশের ওসি (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির।
আদালত সূত্রে জানা যায়, আদালতের বিচারককে দেখানো মিন্নির ওই মোবাইল কললিস্টে রিফাত হত্যায় জড়িতদের সঙ্গে কথোপকথনের প্রমাণ রয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজসহ আরও কিছু ভিডিও আদালতকে দেখানো হয়, যেটি প্রমাণ করে এ ঘটনায় মিন্নির সম্পৃক্ততা রয়েছে। পরে এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করে মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন বিচারক।
তবে আসামিপক্ষের আইনজীবী গোলাম মোস্তফা কাদের বলেন, রিফাত হত্যাকাণ্ডের আগে এবং পরে নিহত নয়ন বন্ডের সঙ্গে মিন্নির যে যোগাযোগ হয়েছে তাতে বুঝা যায় এ ঘটনায় মিন্নির সম্পৃক্ততা আছে। তবে এটি তাদের স্বাভাবিক যোগাযোগও হতে পারে।
এর আগে মঙ্গলবার দুপুর ১টার দিকে মিন্নির জামিনের শুনানির সময় ওসি হুমায়ুন কবিরকে আদালতে তলব করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামান। ওই সময় আদালতের বিচারককে মিন্নির মোবাইল কললিস্ট ও ঘটনার ভিডিও ফুটেজ দেখান মামলার তদন্ত কর্মকর্তা।
বেলা ১১টায় পূর্ব নির্ধারিত তারিখে বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিন্নির জামিন শুনানি শুরু হয়। প্রথমে শুনানি শুরু করেন মিন্নির আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন অন্তত ২০ জন আইনজীবী। আসলামসহ মিন্নির পক্ষে উপস্থিত থাকা অন্যান্য আইনজীবীরা এক ঘণ্টা শুনানি করে মিন্নির জামিন দেয়ার বিষয়ে নানা যুক্তি আদালতে উপস্থাপন করেন।
এরপর বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের পিপি অ্যাডভোকেট ভূবন চন্দ্র হালদারসহ অন্তত ৪০ জন আইনজীবী মিন্নির জামিনের বিরোধিতা করে নানা যুক্তি তুলে ধরে একঘণ্টা শুনানি করেন।
এ বিষয়ে মিন্নির আইনজীবী মো. মাহবুবুল বারী আসলাম বলেন, দীর্ঘ তিন ঘণ্টারও বেশি সময় আদালতে মিন্নির জামিন শুনানি হয়েছে। আদালত বাদী এবং আসামি উভয়পক্ষের সব আইনজীবীর বক্তব্য শুনেছেন। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের উপস্থাপন করা তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাইয়ের জন্য মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন বিচারক। পরে সব তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করা হয়। এরপর মিন্নির জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
তিনি আরও বলেন, আদালতের বিচারক সব আইনজীবীর বক্তব্য মনযোগসহকারে শোনায় আমরা সন্তুষ্ট হয়েছি। আদালতের আদেশ বের হলে মিন্নির বাবার সঙ্গে কথা বলে উচ্চ আদালতে আবারও মিন্নির জামিনের আবেদন করেন।
এ বিষয়ে বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবিলক প্রসিকিউটর ভূবন চন্দ্র হালদার বলেন, রিফাত হত্যা মামলায় মিন্নির যে ভূমিকা ছিল তা আমরা আদালতে তুলে ধরেছি। একপর্যায়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে তলব করেন আদালত। পরে তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে হাজির হয়ে মিন্নির মোবাইল কল লিস্ট এবং বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজ বিচারকের কাছে উপস্থাপন করেন। বাদী ও রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তি তর্কে সন্তুষ্ট হয়ে মিন্নির জামিন নামঞ্জুর করেন বিচারক।
গত ২২ জুলাই বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রথমবার মিন্নির জামিনের আবেদন করেন অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। পরে ওইদিনই শুনানি শেষে আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজী তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
এরপর গত ২৩ জুলাই মিস কেস দাখিল করে বরগুনার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আসাদুজ্জামানের আদালতে ফের জামিনের আবেদন করেন মিন্নির অ্যাডভোকেট মো. মাহবুবুল বারী আসলাম। পরে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নথি তলব করে মঙ্গলবার (৩০ জুলাই) এ জামিন শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।
গত ১৬ জুলাই মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বরগুনার মাইঠা এলাকার বাবার বাসা থেকে বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোরসহ মিন্নিকে জিজ্ঞাসাবাদ ও তার বক্তব্য রেকর্ড করতে বরগুনা পুলিশ লাইন্সে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর দীর্ঘ ১০ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় মিন্নিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
১৭ জুলাই বুধবার বিকেল ৩টার দিকে বরগুনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মিন্নিকে হাজির করে সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে মিন্নির পাঁচদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
শিরোনাম :
- হোম
- Uncategorized
- আবারও মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলেন আদালত।
আবারও মিন্নির জামিন আবেদন নামঞ্জুর করলেন আদালত।
-
বার্তা কক্ষ
- আপডেট সময় : ০৫:৫১:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই ২০১৯
- ৩৭২ বার পড়া হয়েছে
ট্যাগস :
জনপ্রিয় সংবাদ