ঢাকা ১২:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ জানুয়ারী ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যাত্রী ভোগান্তীর আর এক নাম – বিআরটিসি পরিবহণ

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১২:০২:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৯
  • ১০৯২ বার পড়া হয়েছে

স্টাফ রিপোর্টার: বরিশাল নথুল্লাবাদ বিআরটিসি বাস ডিপো থেকে অসংখ্য বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করে, তার মধ্যে একটি রুট হলো বরগুনা জেলার সর্ব দক্ষিণে পাথরঘাটা থানা। সেখানে ঢাকা মেট্রো- ব ১১-১৮৯২ নম্বরের একটি মাত্র বিআারটিসি গাড়ি চলাচল করে।

এই রুটে চলাচলকারী নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, এই গাড়িটি চলাচলের একেবারেই অনুপযুক্ত। চলার পথে প্রায়শই গাড়িটি বিকল হয়ে পড়ে, পার্টস খুলে পড়ে যায়। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। ফিটনেস বিহীন এই গাড়িটি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি পাথরঘাটা কেন যায় না জনমনে এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আজ ১৫ আগস্ট রোজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় এই গাড়িটি প্রায় ৫৫ জন যাত্রী নিয়ে পাথরঘাটার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। যাত্রা শুরু করে লঞ্চঘাট হয়ে সাগরদী পর্যন্ত যাওয়ার পরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে গাড়ি ঘুড়িয়ে পুনরায় নথুল্লাবাদ বাস ডিপোতে নিয়ে আসে। যাত্রীরা এর কারণ জানতে চাইলে গাড়ির ড্রাইভার বলেন, গাড়িতে সমস্যা হয়েছে। ঠিক করে যেতে হবে, সময় লাগবে। এতে যাত্রীরা আপত্তি জানালে গাড়ির স্টাফরা যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। বাকবিতন্ডায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায় যাত্রীরা ডিপোর গেট বন্ধ করে দেয় যাতে অন্য কোনো গাড়ি যেতে না পারে।

পাথরঘাটার যাত্রী সেলিমা শাহনেওয়াজ বলেন, গাড়িটি ডিপো ছেড়ে প্রথমে লঞ্চ ঘাটে যায়। সেখান থেকে পুনরায় ডিপোতে এসে গাড়ি রেখে ড্রাইভার, হেলপার সটকে পড়ে। কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলে কাউন্টার থেকে বলা হয়, গাড়ি ঠিক করে তার পরে যাবে। তাতে কয়েক ঘণ্টা দেরি হতে পারে। এতে যাত্রীরা আপত্তি জানায় এবং এই গাড়িতে যাবে না অন্য গাড়ি দিতে বলে। কাউন্টার থেকে বলা হয়, অন্য কোনো গাড়ি যাবে না। এতে যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে পড়লে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে।

এক পর্যায় বিএমপিকে মুঠোফোনে বিষয়টি অবহিত করা হলে তাৎক্ষণিক ফোর্সসহ দারোগা জনাব সুমন ঘটনাস্থলে চলে আসেন। তিনি ডিপো পরিচালককে ফোন করে ডেকে আনেন এবং দ্রুত যাত্রীদের সমস্যা সমাধান করতে বলেন। পরিচালকের নির্দেশে একটি নতুন বাসে যাত্রী নিয়ে সকাল ৯.৩০টার দিকে পাথরঘাটার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পুলিশের এরূপ আন্তরিকতা ও নতুন বাস পাওয়াতে যাত্রীরা অত্যন্ত খুশি হয়ে ধানসিড়ি নিউজ এর প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।

বিআরটিসি নথুল্লাবাদ ডিপোর টিকিট মাস্টার মোঃ শাহ আলমের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের কিছু করার নেই। কর্তৃপক্ষকে চলাচল অনুপযুক্ত গাড়িটির কথা একাধিকবার জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ঘষেমেজে অকেজো গাড়িটিই চালানো হচ্ছে।”

যাত্রী মোঃ আমীর হোসেন বলেন, “আমি পাথরঘাটার নিয়মিত যাত্রী। সবসময় এই ভাঙা গাড়িটিই পাথরঘাটা আসা-যাওয়া করে। গাড়িটি যখন তখন যেখানে সেখানে নষ্ট হয়ে যায়। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। ৬/৭ ঘণ্টার পথে কেন একটা ভালো গাড়ি না দিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তী দেয় তা বোধগম্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “সড়ক ও সেতুমন্ত্রী যেখানে ফিটনেস বিহীন গাড়ি রাস্তায় না চালানোর জন্য বার বার কঠিন নির্দেশনা দিচ্ছেন সেখানে খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১০০% ফিটনেস বিহীন গাড়ি কিভাবে রাস্তায় চলে? কর্তৃপক্ষ কি এগুলো দেখছেন না? সরকারি গাড়িরই যদি ফিটনেস না থাকে তাহলে আমরা কাকে কি বলবো? পাথরঘাটা রুটে একটি ভালো গাড়ি দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট জোড় দাবী জানাচ্ছি।”

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

যাত্রী ভোগান্তীর আর এক নাম – বিআরটিসি পরিবহণ

আপডেট সময় : ১২:০২:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৯

স্টাফ রিপোর্টার: বরিশাল নথুল্লাবাদ বিআরটিসি বাস ডিপো থেকে অসংখ্য বাস বিভিন্ন রুটে চলাচল করে, তার মধ্যে একটি রুট হলো বরগুনা জেলার সর্ব দক্ষিণে পাথরঘাটা থানা। সেখানে ঢাকা মেট্রো- ব ১১-১৮৯২ নম্বরের একটি মাত্র বিআারটিসি গাড়ি চলাচল করে।

এই রুটে চলাচলকারী নিয়মিত যাত্রীদের অভিযোগ, এই গাড়িটি চলাচলের একেবারেই অনুপযুক্ত। চলার পথে প্রায়শই গাড়িটি বিকল হয়ে পড়ে, পার্টস খুলে পড়ে যায়। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। ফিটনেস বিহীন এই গাড়িটি ছাড়া অন্য কোনো গাড়ি পাথরঘাটা কেন যায় না জনমনে এই প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

আজ ১৫ আগস্ট রোজ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টায় এই গাড়িটি প্রায় ৫৫ জন যাত্রী নিয়ে পাথরঘাটার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। যাত্রা শুরু করে লঞ্চঘাট হয়ে সাগরদী পর্যন্ত যাওয়ার পরে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলে গাড়ি ঘুড়িয়ে পুনরায় নথুল্লাবাদ বাস ডিপোতে নিয়ে আসে। যাত্রীরা এর কারণ জানতে চাইলে গাড়ির ড্রাইভার বলেন, গাড়িতে সমস্যা হয়েছে। ঠিক করে যেতে হবে, সময় লাগবে। এতে যাত্রীরা আপত্তি জানালে গাড়ির স্টাফরা যাত্রীদের সাথে দুর্ব্যবহার করে। বাকবিতন্ডায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায় যাত্রীরা ডিপোর গেট বন্ধ করে দেয় যাতে অন্য কোনো গাড়ি যেতে না পারে।

পাথরঘাটার যাত্রী সেলিমা শাহনেওয়াজ বলেন, গাড়িটি ডিপো ছেড়ে প্রথমে লঞ্চ ঘাটে যায়। সেখান থেকে পুনরায় ডিপোতে এসে গাড়ি রেখে ড্রাইভার, হেলপার সটকে পড়ে। কাউন্টারে জিজ্ঞেস করলে কাউন্টার থেকে বলা হয়, গাড়ি ঠিক করে তার পরে যাবে। তাতে কয়েক ঘণ্টা দেরি হতে পারে। এতে যাত্রীরা আপত্তি জানায় এবং এই গাড়িতে যাবে না অন্য গাড়ি দিতে বলে। কাউন্টার থেকে বলা হয়, অন্য কোনো গাড়ি যাবে না। এতে যাত্রীরা উত্তেজিত হয়ে পড়লে পরিস্থিতি জটিল হয়ে পড়ে।

এক পর্যায় বিএমপিকে মুঠোফোনে বিষয়টি অবহিত করা হলে তাৎক্ষণিক ফোর্সসহ দারোগা জনাব সুমন ঘটনাস্থলে চলে আসেন। তিনি ডিপো পরিচালককে ফোন করে ডেকে আনেন এবং দ্রুত যাত্রীদের সমস্যা সমাধান করতে বলেন। পরিচালকের নির্দেশে একটি নতুন বাসে যাত্রী নিয়ে সকাল ৯.৩০টার দিকে পাথরঘাটার উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পুলিশের এরূপ আন্তরিকতা ও নতুন বাস পাওয়াতে যাত্রীরা অত্যন্ত খুশি হয়ে ধানসিড়ি নিউজ এর প্রতিনিধির মাধ্যমে প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।

বিআরটিসি নথুল্লাবাদ ডিপোর টিকিট মাস্টার মোঃ শাহ আলমের কাছে ঘটনা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমাদের কিছু করার নেই। কর্তৃপক্ষকে চলাচল অনুপযুক্ত গাড়িটির কথা একাধিকবার জানানো হলেও কর্তৃপক্ষ গুরুত্ব দিচ্ছেন না। ঘষেমেজে অকেজো গাড়িটিই চালানো হচ্ছে।”

যাত্রী মোঃ আমীর হোসেন বলেন, “আমি পাথরঘাটার নিয়মিত যাত্রী। সবসময় এই ভাঙা গাড়িটিই পাথরঘাটা আসা-যাওয়া করে। গাড়িটি যখন তখন যেখানে সেখানে নষ্ট হয়ে যায়। এতে যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ে। ৬/৭ ঘণ্টার পথে কেন একটা ভালো গাড়ি না দিয়ে যাত্রীদের ভোগান্তী দেয় তা বোধগম্য নয়।”

তিনি আরও বলেন, “সড়ক ও সেতুমন্ত্রী যেখানে ফিটনেস বিহীন গাড়ি রাস্তায় না চালানোর জন্য বার বার কঠিন নির্দেশনা দিচ্ছেন সেখানে খোদ সরকারি প্রতিষ্ঠানে ১০০% ফিটনেস বিহীন গাড়ি কিভাবে রাস্তায় চলে? কর্তৃপক্ষ কি এগুলো দেখছেন না? সরকারি গাড়িরই যদি ফিটনেস না থাকে তাহলে আমরা কাকে কি বলবো? পাথরঘাটা রুটে একটি ভালো গাড়ি দেয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট জোড় দাবী জানাচ্ছি।”