ঢাকা ০৮:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সোনাগাজীর ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের পলায়নের ঘটনায় অশনিসংকেত দেখছে টিআইবি

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০১:৩৩:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০১৯
  • ৩৭১ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক:

নুসরাত হত্যাকাণ্ডে বিতর্কিত ভূমিকার জন্যে সমালোচিত সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রেপ্তারী পরোয়ানা মাথায় নিয়েই পালিয়ে যাওয়ার যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রোববার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, এই ঘটনায় নুসরাত হত্যাকাণ্ডে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে পুলিশ কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক, যা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এটা রীতিমতো অশনিসংকেত।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে আমরা জেনেছি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাবেক ওসির বিরুদ্ধে গত ২৭ মে পরোয়ানা জারির পর তা ফেনীর পুলিশ সুপার কার্যালয় হয়ে রংপুর রেঞ্জে পৌঁছাতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লেগে যায়। এখন আবার রংপুর রেঞ্জ বলছে, কাজটি বিধি মোতাবেক হয়নি। এই সুযোগে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ‘পালিয়ে গেলেন’ বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাধারণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে যেখানে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া আটক করাই স্বাভাবিক, সেখানে বহুল আলোচিত একটি মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব পালনে এ ধরণের দৃশ্যমান ব্যর্থতার ফলে যৌক্তিকভাবেই নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে পুলিশের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এর আগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর দেয়া অভিযোগপত্র থেকে সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসির অব্যহতিও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডকে ‘আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা’ এবং ‘হত্যাকারীদের সুরক্ষা প্রদানে যোগসাজশের’ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও অভিযোগপত্রে তাকে অব্যহতি দেয়ার কোনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ রয়েছে কি না বা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য হওয়ায় তাকে দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে কি না- আমরা সেই প্রশ্ন তুলেছিলাম। এখন তার পলিয়ে যাওয়ার খবরে আমাদের সেই আশঙ্কা আরো জোরালো হলো। ঘটনাপ্রবাহ থেকে তাকে কার্যত পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্ন উঠা খুবই স্বাভাবিক।
নুসরাত হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে আবারও বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলছেন, দেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা গভীরতম উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এমন অবস্থায় পুলিশ বাহিনীর কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ভূলুণ্ঠিত হবে। তাই ওসি মোয়াজ্জেমকে দ্রুত আটক করে বিচারের মুখোমুখি করার পাশাপাশি নুসরাতের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবী জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিরোজপুরে বাস অটো মুখোমুখি সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে খোঁজ খবর নেন জামাতে ইসলামির নেতৃবৃন্দ।

সোনাগাজীর ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনের পলায়নের ঘটনায় অশনিসংকেত দেখছে টিআইবি

আপডেট সময় : ০১:৩৩:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১০ জুন ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

নুসরাত হত্যাকাণ্ডে বিতর্কিত ভূমিকার জন্যে সমালোচিত সোনাগাজী থানার সাবেক ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন গ্রেপ্তারী পরোয়ানা মাথায় নিয়েই পালিয়ে যাওয়ার যে খবর গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
রোববার এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলেছে, এই ঘটনায় নুসরাত হত্যাকাণ্ডে উক্ত পুলিশ কর্মকর্তার ভূমিকার সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে পুলিশ কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছা নিয়েই প্রশ্ন উঠা স্বাভাবিক, যা দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এটা রীতিমতো অশনিসংকেত।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবর থেকে আমরা জেনেছি, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাবেক ওসির বিরুদ্ধে গত ২৭ মে পরোয়ানা জারির পর তা ফেনীর পুলিশ সুপার কার্যালয় হয়ে রংপুর রেঞ্জে পৌঁছাতে এক সপ্তাহেরও বেশি সময় লেগে যায়। এখন আবার রংপুর রেঞ্জ বলছে, কাজটি বিধি মোতাবেক হয়নি। এই সুযোগে ওসি মোয়াজ্জেম হোসেন ‘পালিয়ে গেলেন’ বলা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে সাধারণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে যেখানে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া আটক করাই স্বাভাবিক, সেখানে বহুল আলোচিত একটি মামলার ক্ষেত্রে পুলিশ প্রশাসনের দায়িত্ব পালনে এ ধরণের দৃশ্যমান ব্যর্থতার ফলে যৌক্তিকভাবেই নুসরাত হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিতে পুলিশের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
এর আগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) এর দেয়া অভিযোগপত্র থেকে সোনাগাজী থানার তৎকালীন ওসির অব্যহতিও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, নুসরাত হত্যাকাণ্ডকে ‘আত্মহত্যা বলে ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা’ এবং ‘হত্যাকারীদের সুরক্ষা প্রদানে যোগসাজশের’ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকার পরও অভিযোগপত্রে তাকে অব্যহতি দেয়ার কোনো যুক্তিগ্রাহ্য কারণ রয়েছে কি না বা আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার সদস্য হওয়ায় তাকে দায়মুক্তি দেয়া হচ্ছে কি না- আমরা সেই প্রশ্ন তুলেছিলাম। এখন তার পলিয়ে যাওয়ার খবরে আমাদের সেই আশঙ্কা আরো জোরালো হলো। ঘটনাপ্রবাহ থেকে তাকে কার্যত পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্ন উঠা খুবই স্বাভাবিক।
নুসরাত হত্যাকাণ্ডে স্থানীয় পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে আবারও বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলছেন, দেশে নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা গভীরতম উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এমন অবস্থায় পুলিশ বাহিনীর কর্মকাণ্ডে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার ভূলুণ্ঠিত হবে। তাই ওসি মোয়াজ্জেমকে দ্রুত আটক করে বিচারের মুখোমুখি করার পাশাপাশি নুসরাতের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগের নিরপেক্ষ বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবী জানান ড. ইফতেখারুজ্জামান।