ঢাকা ০৩:৫১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মহিপুর থানা এলাকার এক যুবককে বেঁধে মারধরের ঘটনা অতি সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া সেই ভিকটিম উদ্ধার

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১
  • ৬৭৫ বার পড়া হয়েছে

নিখোঁজ রায়হানকে খুঁজে পাওয়ার পর যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল পুলিশের কাছে। ভাইরালকৃত ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন, অভিযুক্ত গ্রেফতার, ভিকটিম উদ্ধারঃ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউব এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মহিপুর থানার এক যুবককে বেধে মারধরের একটি ঘটনা অতি সম্প্রতি ভাইরাল হয়। উক্ত ভিডিওতে দেখা যায় যে, কয়েক জন যুবক অপর এক যুবককে রশি ও কাপড় দিয়ে বেধে মারধর করছে। এ সংক্রান্তে ভিকটিম মোঃ রায়হান (২৬) এর পিতা মোঃ কাসেম হাওলাদার বাদী হয়ে ০৯ জনকে আসামি করে মহিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন যার নম্বর- ০৫, তারিখ ০৭-০২-২০২১ ধারা- ১৪৩/৩৪২/৩২৩/৩০৭/৩৬৪/৩৭৯/৫০৬ পিসি। মামলাদায়ের পর পরই এজাহার নামীয় অভিযুক্ত মোঃ ইউসুফ বেপারীকে গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনাটি নজরে আসার সাথে সাথেই পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান পিপিএম মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান এর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম গঠন করে দেন। তারা বিষয়টি নিয়ে গভীর ও নিবিঢ় তদন্ত করে। প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তে দেখা যায় যে,পূর্ব থেকেই উভয় পক্ষ উক্ত ঘটনাস্থলে বসে মাদক গ্রহণ করছিল।

উল্লেখ্য যে, ভিকটিম মোঃ রায়হান এর বিরুদ্ধে মহিপুর থানায় মাদক ও চুরিসহ সর্ব মোট ০৫ টি মামলা রয়েছে এবং তা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। অপর পক্ষে প্রধান অভিযুক্ত ইমাম সিকদারের বিরুদ্ধেও মহিপুর থানায় ০৭ টি মাদক মামলা রয়েছে। মহিপুর থানা পুলিশ বারংবার তাদের গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছে। এজাহার নামীয় অন্যান্যদের নামেও একাধিক মাদক মামলা রয়েছে এবং এলাকায় তাদের অতীত রেকর্ড (PC & PR) সন্তোষজনক নয়। চৌকশ আভিযানিক দলের গভীর ও নিবিডঢ় তদন্তে প্রথম থেকেই ধরনা করা হচ্ছিল যে, ভিকটিম আত্মগোপনে রয়েছে।

উক্ত চৌকশ দলটি ভিকটিমকে উদ্ধারসহ অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার জন্য বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় মামলার এজাহার নামীয় ৩নং অভিযুক্ত (যাকে ভাইরাল হওয়ায় ভিডিওতে দেখে গেছে) ইলিয়াস খান(২৬) পিতা মোঃ আইউব আলী খান সাং পশ্চিম কুয়াকাটা, থানা মহিপুর, পটুয়াখালীকে গত ০৮/০২/২০২১ খ্রিঃ ১৪.৩০ ঘটিকায় গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাকে জিজ্ঞসাবাদে সে জানায় যে, ঘটনার তারিখ ও সময় ০৪/০২/২০২১ বেলা ১১.০০ টায় ভিকটিমের সাথে বাইকে করে অভিযুক্ত ইমাম ও মাহিম আলিপুর থেকে ফাসিপাড়া গ্রামস্থ রাখাইন পল্লীতে যায়। উক্ত অভিযুক্ত ইলিয়াস খানসহ একত্রে সবাই সেখানে চোলাই মদ সেবন করে।

অভিযুক্ত ইমাম ভিকটিম রায়হান এর নিকট পূর্বের ইয়াবা বিক্রির ৩০,০০০/ টাকা পায়। উক্ত টাকা না দেওয়ায় ভিকটিম রায়হানকে পুরাতন ছেড়া জালের রশি দিয়ে হাত বেধে ইমাম ও রাজা মারধর করে এবং প্রমান হিসেবে রাখার জন্য মাহিম মারধরের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ভিডিও টি সোশ্যাল মিডিয়াতে ছেড়ে দেয়া হয়। মারধরের পর ইলিয়াস খান, মাহিম, ইউসুফ, ইমাম পূনরায় ভিকটিম রায়হান এর সাথে মিলে ইয়াবা সেবন করে। অতঃপর ভিকটিমকে একটি ভাড়া করা বাইকে তুলে দেয়। বাইক ভাড়া ইলিয়াস খান দেয়। ভিকটিমের গায়ের গেঞ্জি ছিড়ে যাওয়ায় ইমাম তার গায়ের লাল গেঞ্জিটি ভিকটিমকে পরতে দেয়।

ধৃত অভিযুক্ত ইলিয়াসের দেওয়া তথ্য মতে ০৮-০২-২০২১ খ্রিঃ ভিকটিম রায়হানকে মারধরের ঘটনাস্থল হতে মাটি খুড়ে ১০ লিটার চোলাই মদ ও বিভিন্ন জার, ড্রামে ভর্তি ৫৭৫ লিটার পচুই(মদ তৈরির উপকরণ) স্থানিয় সাংবাদিক ও নিরপেক্ষ সাক্ষীগণের সম্মুখে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সংক্রান্তে মহিপুর থানায় মাদক আইনে একটি মামলা রুজু হয়েছে। উক্ত অভিযুক্ত আরো জানায় যে, ঘটনার পর ০৪-০২-২০২১ তারিখ বেলা ১৫:৩০ ঘটিকায় ভিকটিমকে সুস্থ অবস্থায় বাইকে করে বাড়ীতে পাঠিয়ে দিয়েছে।

বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনার করার পর অদ্য ১০-০২-২০২১ খ্রিঃ সকাল ০৮:৩০ ঘটিকায় মহিপুর থানার দক্ষ আভিযানিক দলটি উক্ত মামলার ভিকটিম মোঃ রায়হান(২৬)কে মহিপুর থানার আলীপুর স্লুইজ গেট এলাকা থেকে উদ্ধার করে। সে সুস্থ এবং স্বাভাবিক রয়েছে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বর্ণিত বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান পিপিএম মহোদয় অদ্য ১০/০২/২০২১ তারিখ ১২:০০ ঘটিকায় পুলিশ অফিস সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন।

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিরোজপুরে বাস অটো মুখোমুখি সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে খোঁজ খবর নেন জামাতে ইসলামির নেতৃবৃন্দ।

মহিপুর থানা এলাকার এক যুবককে বেঁধে মারধরের ঘটনা অতি সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া সেই ভিকটিম উদ্ধার

আপডেট সময় : ০৫:৫৭:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ফেব্রুয়ারী ২০২১

নিখোঁজ রায়হানকে খুঁজে পাওয়ার পর যেসব চাঞ্চল্যকর তথ্য দিল পুলিশের কাছে। ভাইরালকৃত ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন, অভিযুক্ত গ্রেফতার, ভিকটিম উদ্ধারঃ

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ইউটিউব এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় মহিপুর থানার এক যুবককে বেধে মারধরের একটি ঘটনা অতি সম্প্রতি ভাইরাল হয়। উক্ত ভিডিওতে দেখা যায় যে, কয়েক জন যুবক অপর এক যুবককে রশি ও কাপড় দিয়ে বেধে মারধর করছে। এ সংক্রান্তে ভিকটিম মোঃ রায়হান (২৬) এর পিতা মোঃ কাসেম হাওলাদার বাদী হয়ে ০৯ জনকে আসামি করে মহিপুর থানায় মামলা দায়ের করেন যার নম্বর- ০৫, তারিখ ০৭-০২-২০২১ ধারা- ১৪৩/৩৪২/৩২৩/৩০৭/৩৬৪/৩৭৯/৫০৬ পিসি। মামলাদায়ের পর পরই এজাহার নামীয় অভিযুক্ত মোঃ ইউসুফ বেপারীকে গ্রেফতার করা হয়।

ঘটনাটি নজরে আসার সাথে সাথেই পটুয়াখালী জেলার পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান পিপিএম মহিপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ মনিরুজ্জামান এর নেতৃত্বে একটি চৌকস টিম গঠন করে দেন। তারা বিষয়টি নিয়ে গভীর ও নিবিঢ় তদন্ত করে। প্রাপ্ত তথ্য উপাত্তে দেখা যায় যে,পূর্ব থেকেই উভয় পক্ষ উক্ত ঘটনাস্থলে বসে মাদক গ্রহণ করছিল।

উল্লেখ্য যে, ভিকটিম মোঃ রায়হান এর বিরুদ্ধে মহিপুর থানায় মাদক ও চুরিসহ সর্ব মোট ০৫ টি মামলা রয়েছে এবং তা বিজ্ঞ আদালতে বিচারাধীন। অপর পক্ষে প্রধান অভিযুক্ত ইমাম সিকদারের বিরুদ্ধেও মহিপুর থানায় ০৭ টি মাদক মামলা রয়েছে। মহিপুর থানা পুলিশ বারংবার তাদের গ্রেফতার করে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করেছে। এজাহার নামীয় অন্যান্যদের নামেও একাধিক মাদক মামলা রয়েছে এবং এলাকায় তাদের অতীত রেকর্ড (PC & PR) সন্তোষজনক নয়। চৌকশ আভিযানিক দলের গভীর ও নিবিডঢ় তদন্তে প্রথম থেকেই ধরনা করা হচ্ছিল যে, ভিকটিম আত্মগোপনে রয়েছে।

উক্ত চৌকশ দলটি ভিকটিমকে উদ্ধারসহ অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনার জন্য বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এরই ধারাবাহিকতায় মামলার এজাহার নামীয় ৩নং অভিযুক্ত (যাকে ভাইরাল হওয়ায় ভিডিওতে দেখে গেছে) ইলিয়াস খান(২৬) পিতা মোঃ আইউব আলী খান সাং পশ্চিম কুয়াকাটা, থানা মহিপুর, পটুয়াখালীকে গত ০৮/০২/২০২১ খ্রিঃ ১৪.৩০ ঘটিকায় গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। তাকে জিজ্ঞসাবাদে সে জানায় যে, ঘটনার তারিখ ও সময় ০৪/০২/২০২১ বেলা ১১.০০ টায় ভিকটিমের সাথে বাইকে করে অভিযুক্ত ইমাম ও মাহিম আলিপুর থেকে ফাসিপাড়া গ্রামস্থ রাখাইন পল্লীতে যায়। উক্ত অভিযুক্ত ইলিয়াস খানসহ একত্রে সবাই সেখানে চোলাই মদ সেবন করে।

অভিযুক্ত ইমাম ভিকটিম রায়হান এর নিকট পূর্বের ইয়াবা বিক্রির ৩০,০০০/ টাকা পায়। উক্ত টাকা না দেওয়ায় ভিকটিম রায়হানকে পুরাতন ছেড়া জালের রশি দিয়ে হাত বেধে ইমাম ও রাজা মারধর করে এবং প্রমান হিসেবে রাখার জন্য মাহিম মারধরের ঘটনার ভিডিও ধারণ করে। পরবর্তীতে ভিডিও টি সোশ্যাল মিডিয়াতে ছেড়ে দেয়া হয়। মারধরের পর ইলিয়াস খান, মাহিম, ইউসুফ, ইমাম পূনরায় ভিকটিম রায়হান এর সাথে মিলে ইয়াবা সেবন করে। অতঃপর ভিকটিমকে একটি ভাড়া করা বাইকে তুলে দেয়। বাইক ভাড়া ইলিয়াস খান দেয়। ভিকটিমের গায়ের গেঞ্জি ছিড়ে যাওয়ায় ইমাম তার গায়ের লাল গেঞ্জিটি ভিকটিমকে পরতে দেয়।

ধৃত অভিযুক্ত ইলিয়াসের দেওয়া তথ্য মতে ০৮-০২-২০২১ খ্রিঃ ভিকটিম রায়হানকে মারধরের ঘটনাস্থল হতে মাটি খুড়ে ১০ লিটার চোলাই মদ ও বিভিন্ন জার, ড্রামে ভর্তি ৫৭৫ লিটার পচুই(মদ তৈরির উপকরণ) স্থানিয় সাংবাদিক ও নিরপেক্ষ সাক্ষীগণের সম্মুখে উদ্ধার করা হয়েছে। এ সংক্রান্তে মহিপুর থানায় মাদক আইনে একটি মামলা রুজু হয়েছে। উক্ত অভিযুক্ত আরো জানায় যে, ঘটনার পর ০৪-০২-২০২১ তারিখ বেলা ১৫:৩০ ঘটিকায় ভিকটিমকে সুস্থ অবস্থায় বাইকে করে বাড়ীতে পাঠিয়ে দিয়েছে।

বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনার করার পর অদ্য ১০-০২-২০২১ খ্রিঃ সকাল ০৮:৩০ ঘটিকায় মহিপুর থানার দক্ষ আভিযানিক দলটি উক্ত মামলার ভিকটিম মোঃ রায়হান(২৬)কে মহিপুর থানার আলীপুর স্লুইজ গেট এলাকা থেকে উদ্ধার করে। সে সুস্থ এবং স্বাভাবিক রয়েছে। তাকে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

বর্ণিত বিষয়টি নিয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মইনুল হাসান পিপিএম মহোদয় অদ্য ১০/০২/২০২১ তারিখ ১২:০০ ঘটিকায় পুলিশ অফিস সম্মেলন কক্ষে প্রেস ব্রিফিং করেন।