ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কুরবানি করা যাদের উপর ওয়াযিব

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১০:০৯:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০১৯
  • ৪০২ বার পড়া হয়েছে

ইসলামি ডেস্কঃ ইসলামি শরিয়তে কুরবানি একটি ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। অনেকেই বলে থাকেন আমার ওপর কুরবানি জরুরি নয়। যার কাছে কুরবানির দিনগুলোতে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে ওই ব্যক্তির জন্য কুরবানি আবশ্যক।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পর প্রতি বছরই কুরবানি করেছেন। তিনি কখনো কুরবানি পরিত্যাগ করেননি বরং তিনি কুরবানি পরিত্যাগকারীদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন।

কুরবানি করবেন যারা
কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য নিসাব পরিমান অতিরিক্ত সম্পদ সারা বছর গচ্ছিত বা জমা থাকতে হবে এমন নয়। বরং জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত এ ৩ দিন যার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, ওই ব্যক্তিই কুরবানি করবেন।

সোনা-রূপা কিংবা সম্পদের হিসাব ধরলে-
জীবন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ভরণ-পোষণ ছাড়া অতিরিক্ত ন্যূনতম ৫৫ হাজার টাকা থাকলেই কুরবানি করা আবশ্যক। যেহেতু প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি বছর কুরবানি করেছেন। কুরবানির রয়েছে অনেক ফজিলত ও দিক-নির্দেশনা, সেহেতু কুরবানি করা প্রত্যেক সচ্ছল ব্যক্তির জন্য কুরবানি করা জরুরি।

যদি এককভাবে সোনা-রূপা অথবা টাকা নিসাব পরিমাণ না থাকে কিংবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত একাধিক বস্তু, সোনা, রূপা ও টাকা একত্রিত করলে সাড়ে ৫২ ভরি রূপা কিংবা সাড়ে ৭ ভরি সোনার দামের সম পরিমাণ হয় তবে ওই ব্যক্তির জন্যও কুরবানি করা আবশ্যক।

আবার যদি কোনো ব্যক্তি এমন পরিমাণ জায়গা-জমি রয়েছে, যা নিসাব পরিমাণ সম্পদের সমান। আর ওই ব্যক্তি এ সব জায়গা-জমির ফসল কিংবা আয়-ইনকাম ছাড়াই সংসার-জীবন পরিচালনায় সক্ষম তবে ওই ব্যক্তিও কুরবানি করবেন।

যারা কুরবানি করার যোগ্যতা বা সামর্থ রাখে কিন্তু কুরবানি করে না, তাদের ব্যাপারে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুরবানি করল না, সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে।’

হজরত ইব্রাহিম (আঃ) এর সুন্নাত এ কুরবানি পালনে মুসলিম উম্মাহর জন্য রয়েছে অনেক সাওয়াব ও মর্যাদা। যে কারণে বিশ্বনবি প্রতি বছরই কুরবানি করতেন। কুরবানির সাওয়াব তুলে ধরে বিশ্বনবী বলেন-

হজরত যায়েদ ইবনে আকরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম বিশ্বনবীকে জিজ্ঞাসা করলেন, কুরবানি কী?
বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কুরবানি হলো তোমাদের পিতা হজরত ইব্রাহীম (আঃ) সুন্নত।
আবার প্রশ্ন করা হলো- এতে আমাদের সাওয়াব কী?

উত্তরে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,‘কুরবানির পশুর প্রত্যেকটি পশমের বদলে একটি করে সাওয়াব রয়েছে। ভেড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘ভেড়ার প্রত্যেকটি পশমের বদলেও একটি করে সাওয়াব রয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ)

মুসলিম উম্মাহ বিশ্বনবির ছোট একটি হাদিসের উৎসাহে কুরবানি করতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহবোধ করেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কুরবানির দিন কুরবানির চেয়ে উত্তম আমল আর নেই। কেয়ামতের দিন কুরবানির পশুকে শিং, পশম ও খুরসহ পেশ করা হবে এবং কুরবানির জন্তুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহ তাআলার কাছে তা কবুল হয়ে যায়। তাই তোমরা খুব আনন্দ চিত্তে কোরবানি কর।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার দুই প্রিয় নবীর সুন্নত বাস্তবায়নে বিশুদ্ধ নিয়তে কুরবানি আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

কুরবানি করা যাদের উপর ওয়াযিব

আপডেট সময় : ১০:০৯:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০১৯

ইসলামি ডেস্কঃ ইসলামি শরিয়তে কুরবানি একটি ফজিলতপূর্ণ ইবাদত। অনেকেই বলে থাকেন আমার ওপর কুরবানি জরুরি নয়। যার কাছে কুরবানির দিনগুলোতে নেসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে ওই ব্যক্তির জন্য কুরবানি আবশ্যক।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতের পর প্রতি বছরই কুরবানি করেছেন। তিনি কখনো কুরবানি পরিত্যাগ করেননি বরং তিনি কুরবানি পরিত্যাগকারীদের ওপর অভিসম্পাত করেছেন।

কুরবানি করবেন যারা
কুরবানি ওয়াজিব হওয়ার জন্য নিসাব পরিমান অতিরিক্ত সম্পদ সারা বছর গচ্ছিত বা জমা থাকতে হবে এমন নয়। বরং জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ সূর্যাস্ত পর্যন্ত এ ৩ দিন যার কাছে প্রয়োজনের অতিরিক্ত নিসাব পরিমাণ সম্পদ থাকে, ওই ব্যক্তিই কুরবানি করবেন।

সোনা-রূপা কিংবা সম্পদের হিসাব ধরলে-
জীবন পরিচালনার জন্য প্রয়োজনীয় ভরণ-পোষণ ছাড়া অতিরিক্ত ন্যূনতম ৫৫ হাজার টাকা থাকলেই কুরবানি করা আবশ্যক। যেহেতু প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রতি বছর কুরবানি করেছেন। কুরবানির রয়েছে অনেক ফজিলত ও দিক-নির্দেশনা, সেহেতু কুরবানি করা প্রত্যেক সচ্ছল ব্যক্তির জন্য কুরবানি করা জরুরি।

যদি এককভাবে সোনা-রূপা অথবা টাকা নিসাব পরিমাণ না থাকে কিংবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত একাধিক বস্তু, সোনা, রূপা ও টাকা একত্রিত করলে সাড়ে ৫২ ভরি রূপা কিংবা সাড়ে ৭ ভরি সোনার দামের সম পরিমাণ হয় তবে ওই ব্যক্তির জন্যও কুরবানি করা আবশ্যক।

আবার যদি কোনো ব্যক্তি এমন পরিমাণ জায়গা-জমি রয়েছে, যা নিসাব পরিমাণ সম্পদের সমান। আর ওই ব্যক্তি এ সব জায়গা-জমির ফসল কিংবা আয়-ইনকাম ছাড়াই সংসার-জীবন পরিচালনায় সক্ষম তবে ওই ব্যক্তিও কুরবানি করবেন।

যারা কুরবানি করার যোগ্যতা বা সামর্থ রাখে কিন্তু কুরবানি করে না, তাদের ব্যাপারে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কঠোর হুশিয়ারি দিয়েছেন। হাদিসে এসেছে-
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি কুরবানি করল না, সে যেন আমার ঈদগাহে না আসে।’

হজরত ইব্রাহিম (আঃ) এর সুন্নাত এ কুরবানি পালনে মুসলিম উম্মাহর জন্য রয়েছে অনেক সাওয়াব ও মর্যাদা। যে কারণে বিশ্বনবি প্রতি বছরই কুরবানি করতেন। কুরবানির সাওয়াব তুলে ধরে বিশ্বনবী বলেন-

হজরত যায়েদ ইবনে আকরাম রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘সাহাবায়ে কেরাম বিশ্বনবীকে জিজ্ঞাসা করলেন, কুরবানি কী?
বিশ্বনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘কুরবানি হলো তোমাদের পিতা হজরত ইব্রাহীম (আঃ) সুন্নত।
আবার প্রশ্ন করা হলো- এতে আমাদের সাওয়াব কী?

উত্তরে বিশ্বনবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,‘কুরবানির পশুর প্রত্যেকটি পশমের বদলে একটি করে সাওয়াব রয়েছে। ভেড়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ‘ভেড়ার প্রত্যেকটি পশমের বদলেও একটি করে সাওয়াব রয়েছে।’ (মুসনাদে আহমদ)

মুসলিম উম্মাহ বিশ্বনবির ছোট একটি হাদিসের উৎসাহে কুরবানি করতে সবচেয়ে বেশি আগ্রহবোধ করেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘কুরবানির দিন কুরবানির চেয়ে উত্তম আমল আর নেই। কেয়ামতের দিন কুরবানির পশুকে শিং, পশম ও খুরসহ পেশ করা হবে এবং কুরবানির জন্তুর রক্ত মাটিতে পড়ার আগেই আল্লাহ তাআলার কাছে তা কবুল হয়ে যায়। তাই তোমরা খুব আনন্দ চিত্তে কোরবানি কর।’

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তার দুই প্রিয় নবীর সুন্নত বাস্তবায়নে বিশুদ্ধ নিয়তে কুরবানি আদায় করার তাওফিক দান করুন। হাদিসে ঘোষিত ফজিলত ও মর্যাদা লাভ করার তাওফিক দান করুন। আমিন