ঢাকা ০১:০৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চামড়ার দাম নেই, কারণ কী?

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০১:৪০:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৯
  • ২৪৬ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন নিউজ ডেস্ক: এবারের কোরবাণীর পশুর চামড়ার মূল্য অস্বাভাবিকভাবে কম দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা যা কিনা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যেরও ৪/৫ গুণ কম। এর কারণে জনমণে প্রশ্ন, এর কারণ কী?

রাজধানীর আদাবর এলাকার বাসিন্দা রবিন খান। আজ গরুর চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছেন। তাঁকে এক লাখ টাকায় কেনা গরুর চামড়ার দাম এক ব্যবসায়ী বলেছেন ৩০০ টাকা! পরে তিনি সেই চামড়া স্থানীয় এতিমখানায় দান করেছেন। এ ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন আরও কয়েকজন।
এবার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম একেবারেই কম বলা চলে। যাঁরা কোরবানি দিয়েছেন তাঁরা যেমন চামড়ার দাম পাননি, তেমনি দাম পাচ্ছেন না মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও।

ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তারা চামড়া সংগ্রহ করবে আরও ১০/১২ দিন পর। ওই সময় পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা যদি চামড়া সংরক্ষণ করতে পারেন, তাহলে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বলছেন, আর্থিক সংকটে আড়তদারেরা চামড়া কিনতে পারছেন না। আবার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম একবারেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, চামড়ার দাম নিয়ে অন্তরালে কেউ কেউ নোংরা খেলা খেলে নিজেরা লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় চামড়া কেনার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। চামড়া কেনা নিয়ে হানাহানির ঘটনাও ঘটতো। তবে গত কয়েকবছরের চেয়ে এবারের অবস্থা বেশ খারাপ। এবার মৌসুমি ব্যবসায়ী সেভাবে দেখাও যায়নি।

বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার চামড়ার অস্থায়ী বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি পিস ছোট চামড়ার দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের প্রতিটি চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং বড় চামড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দাম গত বছরের তুলনায় অর্ধেক।

সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় কয়েকজন মৌসুমি ব্যবসায়ী অভিযোগ করলেন, আড়তদার ও ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট করে চামড়ার বাজার কমিয়ে দিয়েছেন। সাধারণত: মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কেনেন আড়তদার ও ট্যানারি মালিকেরা।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু বলেন, রাজধানী থেকে প্রতি বর্গফুট লবণছাড়া চামড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় সংগ্রহ করা হচ্ছে। সে হিসাবে ছোট প্রতি পিস চামড়ার দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের প্রতিটি চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং বড় চামড়ার দাম ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টিপু সুলতান বলেন, এ বছর চামড়া খাতে খুব খারাপ অবস্থা। ট্যানারি মালিকদের কাছে আমাদের বকেয়া প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। অনেকেই টাকা পাননি। আমাদের প্রায় আড়াই শ আড়তদারের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জন চামড়া কিনতে পারছেন। টাকার অভাবে চামড়া কিনতে না পারার কারণে অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আবার এখন দাম আছে তার চেয়েও দাম আরও কমে যেতে পারে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

চামড়ার দাম নেই, কারণ কী?

আপডেট সময় : ০১:৪০:৫৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৩ অগাস্ট ২০১৯

অনলাইন নিউজ ডেস্ক: এবারের কোরবাণীর পশুর চামড়ার মূল্য অস্বাভাবিকভাবে কম দিচ্ছে ব্যবসায়ীরা যা কিনা সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্যেরও ৪/৫ গুণ কম। এর কারণে জনমণে প্রশ্ন, এর কারণ কী?

রাজধানীর আদাবর এলাকার বাসিন্দা রবিন খান। আজ গরুর চামড়া বিক্রি করতে গিয়ে হোঁচট খেয়েছেন। তাঁকে এক লাখ টাকায় কেনা গরুর চামড়ার দাম এক ব্যবসায়ী বলেছেন ৩০০ টাকা! পরে তিনি সেই চামড়া স্থানীয় এতিমখানায় দান করেছেন। এ ধরনের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন আরও কয়েকজন।
এবার কোরবানির পশুর চামড়ার দাম একেবারেই কম বলা চলে। যাঁরা কোরবানি দিয়েছেন তাঁরা যেমন চামড়ার দাম পাননি, তেমনি দাম পাচ্ছেন না মৌসুমি ব্যবসায়ীরাও।

ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন বলছে, তারা চামড়া সংগ্রহ করবে আরও ১০/১২ দিন পর। ওই সময় পর্যন্ত ব্যবসায়ীরা যদি চামড়া সংরক্ষণ করতে পারেন, তাহলে সরকার নির্ধারিত দামে চামড়া বিক্রি করতে পারবেন।

সংশ্লিষ্ট কেউ কেউ বলছেন, আর্থিক সংকটে আড়তদারেরা চামড়া কিনতে পারছেন না। আবার ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, সিন্ডিকেট করে চামড়ার দাম একবারেই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে এ ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা বলছেন, চামড়ার দাম নিয়ে অন্তরালে কেউ কেউ নোংরা খেলা খেলে নিজেরা লাভবান হওয়ার চেষ্টা করছেন।

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় চামড়া কেনার জন্য রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় মৌসুমি ব্যবসায়ীদের আনাগোনা ছিল চোখে পড়ার মতো। চামড়া কেনা নিয়ে হানাহানির ঘটনাও ঘটতো। তবে গত কয়েকবছরের চেয়ে এবারের অবস্থা বেশ খারাপ। এবার মৌসুমি ব্যবসায়ী সেভাবে দেখাও যায়নি।

বিকেলে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার চামড়ার অস্থায়ী বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, প্রতি পিস ছোট চামড়ার দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের প্রতিটি চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং বড় চামড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই দাম গত বছরের তুলনায় অর্ধেক।

সায়েন্স ল্যাবরেটরি এলাকায় কয়েকজন মৌসুমি ব্যবসায়ী অভিযোগ করলেন, আড়তদার ও ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট করে চামড়ার বাজার কমিয়ে দিয়েছেন। সাধারণত: মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চামড়া কেনেন আড়তদার ও ট্যানারি মালিকেরা।

বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক টিপু বলেন, রাজধানী থেকে প্রতি বর্গফুট লবণছাড়া চামড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় সংগ্রহ করা হচ্ছে। সে হিসাবে ছোট প্রতি পিস চামড়ার দাম ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, মাঝারি আকারের প্রতিটি চামড়া ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং বড় চামড়ার দাম ৮০০ থেকে এক হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

টিপু সুলতান বলেন, এ বছর চামড়া খাতে খুব খারাপ অবস্থা। ট্যানারি মালিকদের কাছে আমাদের বকেয়া প্রায় সাড়ে ৩০০ কোটি টাকা। অনেকেই টাকা পাননি। আমাদের প্রায় আড়াই শ আড়তদারের মধ্যে ২০ থেকে ৩০ জন চামড়া কিনতে পারছেন। টাকার অভাবে চামড়া কিনতে না পারার কারণে অনেক চামড়া নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আবার এখন দাম আছে তার চেয়েও দাম আরও কমে যেতে পারে।