অনলাইন নিউজ ডেস্ক: সৌদি আরবে নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মী সুমি আক্তার আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যে দেশে ফিরবেন বলে তিনি তার স্বামীকে জানিয়েছেন। এখন তিনি বাংলাদেশ সরকারের দায়িত্বশীল কর্মকর্তার তত্ত্বাবধানে রয়েছেন।
সোমবার রাতে সুমিকে তার কর্মস্থল জেদ্দার দক্ষিণ-দক্ষিণে নাজরান এলাকার কর্মস্থল থেকে উদ্ধার করে থানা হেফাজতে নিয়ে যাওয়া হয়। মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে এসব তথ্য কালের কণ্ঠকে জানান সুমির স্বামী নূরুল ইসলাম।
নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ঘণ্টাখানেক আগে (মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টার দিকে) সুমির সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। সে ভালো আছে। সুমি বলেছে, তাকে সৌদি পুলিশ উদ্ধার করে সৌদিতে নিযুক্ত বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের কাছে হস্তান্তর করেছে। সে আগামী দুই তিন দিনের মধ্যে দেশে চলে আসতে পারবে। তার পাওনাদিও পরিশোধ করে দিয়েছে সুমিকে কাজে নিযুক্ত করা ব্যক্তি। তবে সুমি তার মালামাল আনতে পারেনি।
জানা যায়, রাতে সুমিকে থানায় নিয়ে আসা হলেও তার ওখানকার নিয়োগকর্তা (কফিল) তাকে ছাড়তে চাইছিলেন না। তিনি সুমিকে আরও রাখতে চাচ্ছিলেন। কারণ ওখানে সুমিকে নিতে তার অনেক টাকা খরচ হয়েছে। সুমিকে ছাড়তে হলে যারা বাংলাদেশ থেকে মধ্যস্থতা করে (রাজধানী ঢাকার রূপসী বাংলা ওভারসিজ) তাকে সেখানে পাঠিয়েছে। তাদের কাছ থেকে অর্থ আদায় করে দিতে তিনি চাপ দিচ্ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ মে আশুলিয়ার চারাবাগ এলাকার নূরুল ইসলামের স্ত্রী সুমি ‘রূপসী বাংলা ওভারসিজ’র মাধ্যমে সৌদি আরব যান। সেখানে যাওয়ার পর থেকেই স্বজনদের কাছে তার ওপর নির্যাতনের ঘটনা বলতেন সুমি। দালালরা বিদেশে পাঠানোর কথা বলে তাকে যে বিক্রি করে দিয়েছে সে কথা জানতেন না সুমি। সৌদি যাওয়ার সপ্তাহখানেক পর থেকে শুরু হয় তার ওপর মারধর, যৌন হয়রানিসহ নানা নির্যাতন।
গত অক্টোবর মাসের মাঝামাঝি ফেসবুকে কান্নাজড়িত কণ্ঠে এক ভিডিও বার্তায় নিজের ওপর পাশবিক নির্যাতনের কথা বলে সুমি তাকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুরোধ জানান। পরে ভিডিওটি ভাইরাল হয়। এ নিয়ে গত দুই দিনে কয়েকটি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে সুমি আক্তারকে ফেরাতে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন। পরে সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূতের কার্যালয় থেকে কর্মকর্তারা সুমির সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপরই তাকে পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার করা হয়।