ঢাকা ০১:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ২৫ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মরহুম হযরত ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (র:) এর সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০২:০৭:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৪৭ বার পড়া হয়েছে

মরহুম হযরত ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (র:) এর সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত
জন্ম ও বংশ পরিচয়:
আজকে আমরা মির্জাগঞ্জের মরহুম হযরত ইয়ার উদ্দীন খলিফা ছাহেব (রঃ) জীবনী নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি. তিনি প্রকৃত পক্ষে মির্জাগঞ্জের অধিবাসী না
পটুয়াখালী জেলায়ও তিনি জন্মগ্রহণ করেননি তাঁর জন্মস্থান শরিয়তপুর জেলায়। শরিয়তপুর জেলার ধামসী গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের সন ও তারিখ
উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়নি, কারন তাঁর গ্রামের বয়ঃবৃদ্ধ যারা বেঁচে আছেন তার ঠিক করে খলিফা ছাহেব (রঃ) এর জন্ম সন ও তারিখ বলতে পারেননী। খলিফা সাহেবের আসল নাম মোঃ ইয়ার উদ্দিন খাঁ। তাঁর পিতার নাম মোঃ সরাই খাঁ। পাঠক সমাজের মনে এখন একটি প্রশ্ন অতি সহজেই জাগে এবং তা হচ্ছে, ইয়ার উদ্দিন খাঁ ছাহেব (রঃ) যাঁর নাম, তিনি আবার খলিফা হলেন কিভাবে বা কারা তাকে খলিফা নামে অ্যাখ্যায়িত করলেন, মির্জাগঞ্জের সকল বয়জ্যোষ্ঠ লোকদের মুখে শোনা যায় ইয়ার উদ্দিন খালিফা ছাহেব (রঃ) মির্জাগঞ্জ এসে নিজ হাতে জামা টুপি সেলাই দর্জির, কাজ করতেন বলে তৎকালিন মিজাগঞ্জের স্থানীয় লোকেরা তাকে খলিফা নামে ডাকতেন এবং পরবর্তীকালে এই ইয়ার উদ্দিন খাঁ ছাহেব (রঃ) ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (রঃ) নামে জন সমাজে পরিচিত হন।
শিক্ষা জীবনঃ
হযরত ইয়ার উদ্দীন খলিফা ছাহেব (রঃ) কতদূর কি লেখাপড়া করেছেন তা জানা যায়নি। কারণ তার বাল্য জীবন কাটে তার নিজ জন্মস্থান শরিয়তপুর জেলার পাল থানার ধামসী গ্রামে ৷ সে গ্রামে তৎকালীন শিক্ষা ব্যবস্থা কি ছিল. স্কুল মাদ্রাসা ছিল কিনা এবং থাকলে তাতে খলিফা ছাহেব (বঃ) এর শিক্ষা লাভের সুযোগ ঘটেছে কিনা তা কোন সূত্রেই জানা সম্ভব হয়নি।
তবে মির্জাগঞ্জের বর্তমান লোকমুখে শোনা যায়, বয়জেষ্ঠরা বলেছেন অধিকাংশ সময়ই খলিফা ছাহেব (রঃ) কে পবিত্র কোরান তেলাওয়াত করতে দেখা যেত এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, তিনি আরবী লেখাপড়া জানতেন। বাংলা লেখাপাড়া তিনি জানতেন কিনা তার কোন প্রমাণ পাওয়া
যায়নি। তাই তাঁর শিক্ষা জীবন সম্পর্কেও সঠিক কোন ধারণা দেওয়া সম্ভবপর হলো না। অবশ্য যারা খলিফা ছাহেব (রঃ) এর নিকটে এসেছেন বিশেষ করে তার একমাত্র ঘনিষ্ট খাদেম তৎকালীন মৌঃ গগন মল্লিক ছাহেবও বলতে পারেননি খলিফা ছাহেব (র:) কোরান তেলাওয়াত ছাড়া বাংলা বা ইংরেজী লেখাপড়া জানতেন
কিনা। খলিফা ছাহেৰ (রঃ) তাঁর গ্রামের প্রচলিত বাংলা ভাষাতেই অহরহ কথা বলতেন।

কর্মজীবন বা ব্যবহারিক জীবনঃ
মির্জাগঞ্জে আসার পূর্বে ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (রঃ) তার দেশেরর বাড়ীতে কি করতেন তাও জানা সম্ভব হয়নি। তবে এটকু জানাগেছে যে মরহুম হযরত ইয়ার উদ্দীন খলিফা ছাহেব (রঃ) এর বয়স যখন ৩৮ বছর তখন তার স্ত্রী এবং একমাত্র পুত্র সন্তান কলেরা রোগে ইন্তেকাল করেন । (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)
এই আঘাতে তিনি মুছড়ে পরেন। স্ত্রী এবং পুত্রের মৃত্যুর পর তিনি আর নিজ ঘরে বসবাস করতেন না। তিনি বেশিরভাগ সময়ই তার বাড়ির সংলগ্ন মসজিদে থাকতেন এবং জায়নামাজে বসে কোরান শরীফ তেলাওয়াত করতেন। মির্জাগঞ্জে আসার পর জনগনের মুখে শোনা যায় যে. দোকান বাহালা (মুদি মনোহরি) দোকান নামে পরিচিত তিনি সে বাহালী দোকানই শুরু করলেন। এখন জনমনে প্রশ্ন জাগতে পারে সুদূর শরীয়ত পুর জিলা থেকে পটুয়াখালী (সাবেক বরিশাল) জিলায় মির্জাগঞ্জে এসে দোকান শুরু করার কারন কি ?কিংবা কি করে তিনি মির্জাগঞ্জে এলেন। এ কথা অনস্বীকার্য যে, কোন এলাকার লোক- প্রবাস থেকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পরে প্রতিবেশীদের সাথে তার সফর করা নতুন এলাকার সম্পর্কে গল্প করতে অধীর আগ্রহ পোষন করে থাকে। অনুরূপভাবে হয়তো সেদিন শরিয়তপুরের ইয়ার উদ্দিন খফি: ছাহেব (রঃ) ও তাঁর
দেশের লোকজনদের (ব্যবসায়ীদের) মুখে মির্জাগঞ্জের গল্প-গুজব শুনে ভাল লাগছিল তাই তিনি হয়তো দেশী অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সাথে মির্জাগঞ্জে ব্যবসা করতে এসেছিলেন। অথবা কোন আধ্যাত্মিক নির্দেশও তিনি আসতে পারেন। কেননা তার মত ওলীর ব্যাপারে অন্য ব্যবসায়ীদের সাথে তুলনা করা সম্ভবপর নহে। তার ব্যবসা
এবং অন্য দশজনার ব্যবসা একই পর্যায়ের নহে। বাহির থেকে হয়তো দেখা যেত তিনি দোকানদারী করছেন কিন্তু দোকানদারী তাঁর পেশা ছিল না বললে অত্যুক্তি হবে না
ঐ দোকানদারীর মাঝেই তিনি খুজতেন মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য তিনি একান্ত মনে প্রানে মানতেন এবং বিশ্বাস করতেন স্রষ্টার নৈকট্য লাভই প্রকৃত মুক্তির পথ।
হয়তো তা পেয়েছেনও তিনি। যার জ্বলন্ত প্রমান আজকের মির্জাগঞ্জের দরবার শরীফ। মরহুম ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (রঃ) মির্জাগঞ্জের কর্ম জীবনে একজন দোকানদার হিসেবে পরিচিত। তিনি শুধু মির্জাগঞ্জেরই নন তার যে ভাঙ্গা নৌকাখানা ছিল তাতে করে তিনি নদী পথে দূরবর্তি সুবিদখালী, ৰিঘাই, কাকড়াবুনিয়া বাজারে গিয়েও দোকানদারী করতেন। এ ব্যাপারে তাকে সাহায্য করতেন তার একমাত্র বিশ্বাসী খাদেম মরহুম গগন মল্লিক। তিনি কখন মির্জাগঞ্জে আসেন এবং এসে কোথায় ছিলেনঃ
আনুমানিক ১৯১০-১৯১২ খ্রিঃ এর দিকে মরহুম খলিফা ছাহেব (রঃ) শরিয়তপুরের পালং থানা থেকে সাবেক বরিশাল জিলার মির্জাগঞ্জ থানার মির্জাগঞ্জ বাজারে আসেন এবং মির্জাগঞ্জ বাজারের নিকটে ছোট একটি ঘরে বসতি এবং দোকানদারী শুরু করেন (বর্তমান তার কবর সংলগ্ন ছিলো তার দোকান) ।
খলিফা ছাহেবের মৃত্যু সনঃ
তার মৃত্যু সন বা তারিখ সঠিক ভাবে জানা যায়নি । আনুমানিক ১৯২৯ থেকে ১৯৩৪ খ্রিঃ দিকে তিনি দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করেন ।
(ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন) তার মৃত্যু সন বা তারিখ সঠিক ভাবে সংরক্ষন না হওয়ার কারণ হলো আজকে যে, মির্জাগঞ্জ দরবার শরিফের পরিধী এটা খলিফা, ছাহেব (র:) জীবদ্দশায় এর কিছুই ছিলোনা এবং তিনি যে এত বড় মাপের একজন আল্লাহর ওলি ছিলেন তাও বেশির ভাগ মানুষ জানতো না। মির্জাগঞ্জ
দরবার শরিফের পরিচিতি ও পরিধি মূলত তাৰ মৃত্যু পরে ধীরে ধীরে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ব্যাপক হারে শুরু হয় । এরপূর্বে খুব বেশি মানুষ এই মাজার সম্পর্কে জানতো না । এখানে বাহির থেকে আসার জন্য ছিলোনা কোন ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা । এই এলাকাটা ছিল এক কথায় দূর্গম, বন জঙ্গলে ভরা। এ সকল কারণেই তার জন্ম ও মৃত্যু সঠিক তারিখ ও সন সংরক্ষন হয়নি ।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

আলীপুর ও মহিপুর মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র পরিদর্শন করেন কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউসার হামিদ!

মরহুম হযরত ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (র:) এর সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত

আপডেট সময় : ০২:০৭:০২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৩ অক্টোবর ২০২৫

মরহুম হযরত ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (র:) এর সংক্ষিপ্ত জীবন বৃত্তান্ত
জন্ম ও বংশ পরিচয়:
আজকে আমরা মির্জাগঞ্জের মরহুম হযরত ইয়ার উদ্দীন খলিফা ছাহেব (রঃ) জীবনী নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি. তিনি প্রকৃত পক্ষে মির্জাগঞ্জের অধিবাসী না
পটুয়াখালী জেলায়ও তিনি জন্মগ্রহণ করেননি তাঁর জন্মস্থান শরিয়তপুর জেলায়। শরিয়তপুর জেলার ধামসী গ্রামে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তার জন্মের সন ও তারিখ
উদ্ঘাটন করা সম্ভব হয়নি, কারন তাঁর গ্রামের বয়ঃবৃদ্ধ যারা বেঁচে আছেন তার ঠিক করে খলিফা ছাহেব (রঃ) এর জন্ম সন ও তারিখ বলতে পারেননী। খলিফা সাহেবের আসল নাম মোঃ ইয়ার উদ্দিন খাঁ। তাঁর পিতার নাম মোঃ সরাই খাঁ। পাঠক সমাজের মনে এখন একটি প্রশ্ন অতি সহজেই জাগে এবং তা হচ্ছে, ইয়ার উদ্দিন খাঁ ছাহেব (রঃ) যাঁর নাম, তিনি আবার খলিফা হলেন কিভাবে বা কারা তাকে খলিফা নামে অ্যাখ্যায়িত করলেন, মির্জাগঞ্জের সকল বয়জ্যোষ্ঠ লোকদের মুখে শোনা যায় ইয়ার উদ্দিন খালিফা ছাহেব (রঃ) মির্জাগঞ্জ এসে নিজ হাতে জামা টুপি সেলাই দর্জির, কাজ করতেন বলে তৎকালিন মিজাগঞ্জের স্থানীয় লোকেরা তাকে খলিফা নামে ডাকতেন এবং পরবর্তীকালে এই ইয়ার উদ্দিন খাঁ ছাহেব (রঃ) ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (রঃ) নামে জন সমাজে পরিচিত হন।
শিক্ষা জীবনঃ
হযরত ইয়ার উদ্দীন খলিফা ছাহেব (রঃ) কতদূর কি লেখাপড়া করেছেন তা জানা যায়নি। কারণ তার বাল্য জীবন কাটে তার নিজ জন্মস্থান শরিয়তপুর জেলার পাল থানার ধামসী গ্রামে ৷ সে গ্রামে তৎকালীন শিক্ষা ব্যবস্থা কি ছিল. স্কুল মাদ্রাসা ছিল কিনা এবং থাকলে তাতে খলিফা ছাহেব (বঃ) এর শিক্ষা লাভের সুযোগ ঘটেছে কিনা তা কোন সূত্রেই জানা সম্ভব হয়নি।
তবে মির্জাগঞ্জের বর্তমান লোকমুখে শোনা যায়, বয়জেষ্ঠরা বলেছেন অধিকাংশ সময়ই খলিফা ছাহেব (রঃ) কে পবিত্র কোরান তেলাওয়াত করতে দেখা যেত এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, তিনি আরবী লেখাপড়া জানতেন। বাংলা লেখাপাড়া তিনি জানতেন কিনা তার কোন প্রমাণ পাওয়া
যায়নি। তাই তাঁর শিক্ষা জীবন সম্পর্কেও সঠিক কোন ধারণা দেওয়া সম্ভবপর হলো না। অবশ্য যারা খলিফা ছাহেব (রঃ) এর নিকটে এসেছেন বিশেষ করে তার একমাত্র ঘনিষ্ট খাদেম তৎকালীন মৌঃ গগন মল্লিক ছাহেবও বলতে পারেননি খলিফা ছাহেব (র:) কোরান তেলাওয়াত ছাড়া বাংলা বা ইংরেজী লেখাপড়া জানতেন
কিনা। খলিফা ছাহেৰ (রঃ) তাঁর গ্রামের প্রচলিত বাংলা ভাষাতেই অহরহ কথা বলতেন।

কর্মজীবন বা ব্যবহারিক জীবনঃ
মির্জাগঞ্জে আসার পূর্বে ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (রঃ) তার দেশেরর বাড়ীতে কি করতেন তাও জানা সম্ভব হয়নি। তবে এটকু জানাগেছে যে মরহুম হযরত ইয়ার উদ্দীন খলিফা ছাহেব (রঃ) এর বয়স যখন ৩৮ বছর তখন তার স্ত্রী এবং একমাত্র পুত্র সন্তান কলেরা রোগে ইন্তেকাল করেন । (ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন)
এই আঘাতে তিনি মুছড়ে পরেন। স্ত্রী এবং পুত্রের মৃত্যুর পর তিনি আর নিজ ঘরে বসবাস করতেন না। তিনি বেশিরভাগ সময়ই তার বাড়ির সংলগ্ন মসজিদে থাকতেন এবং জায়নামাজে বসে কোরান শরীফ তেলাওয়াত করতেন। মির্জাগঞ্জে আসার পর জনগনের মুখে শোনা যায় যে. দোকান বাহালা (মুদি মনোহরি) দোকান নামে পরিচিত তিনি সে বাহালী দোকানই শুরু করলেন। এখন জনমনে প্রশ্ন জাগতে পারে সুদূর শরীয়ত পুর জিলা থেকে পটুয়াখালী (সাবেক বরিশাল) জিলায় মির্জাগঞ্জে এসে দোকান শুরু করার কারন কি ?কিংবা কি করে তিনি মির্জাগঞ্জে এলেন। এ কথা অনস্বীকার্য যে, কোন এলাকার লোক- প্রবাস থেকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের পরে প্রতিবেশীদের সাথে তার সফর করা নতুন এলাকার সম্পর্কে গল্প করতে অধীর আগ্রহ পোষন করে থাকে। অনুরূপভাবে হয়তো সেদিন শরিয়তপুরের ইয়ার উদ্দিন খফি: ছাহেব (রঃ) ও তাঁর
দেশের লোকজনদের (ব্যবসায়ীদের) মুখে মির্জাগঞ্জের গল্প-গুজব শুনে ভাল লাগছিল তাই তিনি হয়তো দেশী অন্যান্য ব্যবসায়ীদের সাথে মির্জাগঞ্জে ব্যবসা করতে এসেছিলেন। অথবা কোন আধ্যাত্মিক নির্দেশও তিনি আসতে পারেন। কেননা তার মত ওলীর ব্যাপারে অন্য ব্যবসায়ীদের সাথে তুলনা করা সম্ভবপর নহে। তার ব্যবসা
এবং অন্য দশজনার ব্যবসা একই পর্যায়ের নহে। বাহির থেকে হয়তো দেখা যেত তিনি দোকানদারী করছেন কিন্তু দোকানদারী তাঁর পেশা ছিল না বললে অত্যুক্তি হবে না
ঐ দোকানদারীর মাঝেই তিনি খুজতেন মহান স্রষ্টার সান্নিধ্য তিনি একান্ত মনে প্রানে মানতেন এবং বিশ্বাস করতেন স্রষ্টার নৈকট্য লাভই প্রকৃত মুক্তির পথ।
হয়তো তা পেয়েছেনও তিনি। যার জ্বলন্ত প্রমান আজকের মির্জাগঞ্জের দরবার শরীফ। মরহুম ইয়ার উদ্দিন খলিফা ছাহেব (রঃ) মির্জাগঞ্জের কর্ম জীবনে একজন দোকানদার হিসেবে পরিচিত। তিনি শুধু মির্জাগঞ্জেরই নন তার যে ভাঙ্গা নৌকাখানা ছিল তাতে করে তিনি নদী পথে দূরবর্তি সুবিদখালী, ৰিঘাই, কাকড়াবুনিয়া বাজারে গিয়েও দোকানদারী করতেন। এ ব্যাপারে তাকে সাহায্য করতেন তার একমাত্র বিশ্বাসী খাদেম মরহুম গগন মল্লিক। তিনি কখন মির্জাগঞ্জে আসেন এবং এসে কোথায় ছিলেনঃ
আনুমানিক ১৯১০-১৯১২ খ্রিঃ এর দিকে মরহুম খলিফা ছাহেব (রঃ) শরিয়তপুরের পালং থানা থেকে সাবেক বরিশাল জিলার মির্জাগঞ্জ থানার মির্জাগঞ্জ বাজারে আসেন এবং মির্জাগঞ্জ বাজারের নিকটে ছোট একটি ঘরে বসতি এবং দোকানদারী শুরু করেন (বর্তমান তার কবর সংলগ্ন ছিলো তার দোকান) ।
খলিফা ছাহেবের মৃত্যু সনঃ
তার মৃত্যু সন বা তারিখ সঠিক ভাবে জানা যায়নি । আনুমানিক ১৯২৯ থেকে ১৯৩৪ খ্রিঃ দিকে তিনি দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে পরলোক গমন করেন ।
(ইন্না লিল্লাহি ওয়াইন্না ইলাইহি রাজিউন) তার মৃত্যু সন বা তারিখ সঠিক ভাবে সংরক্ষন না হওয়ার কারণ হলো আজকে যে, মির্জাগঞ্জ দরবার শরিফের পরিধী এটা খলিফা, ছাহেব (র:) জীবদ্দশায় এর কিছুই ছিলোনা এবং তিনি যে এত বড় মাপের একজন আল্লাহর ওলি ছিলেন তাও বেশির ভাগ মানুষ জানতো না। মির্জাগঞ্জ
দরবার শরিফের পরিচিতি ও পরিধি মূলত তাৰ মৃত্যু পরে ধীরে ধীরে এবং বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই ব্যাপক হারে শুরু হয় । এরপূর্বে খুব বেশি মানুষ এই মাজার সম্পর্কে জানতো না । এখানে বাহির থেকে আসার জন্য ছিলোনা কোন ভালো যাতায়াত ব্যবস্থা । এই এলাকাটা ছিল এক কথায় দূর্গম, বন জঙ্গলে ভরা। এ সকল কারণেই তার জন্ম ও মৃত্যু সঠিক তারিখ ও সন সংরক্ষন হয়নি ।