সাইফুল ইসলাম//যুদ্ধটা শুরু হয়েছিল সেই ২৮ ই র্মাচ ২০ ইংরেজী তারিখ থেকেই । একা একা যার পথ চলা শুরু ভয় কি তার প্রতিকূলতায়।
সঙ্গিহীন যাত্রায় প্রথম যুদ্ধ শুরু হয় করোনা আক্রান্ত সন্দেহে র্ভতি হওয়া রোগী যাকে করোনা ওর্য়াডে নেয়ার পূর্বেই মৃত্যু হয়েছিল সেই থেকেই। মরে গিয়ে হয়ত সে বেঁচে গেছে কিন্তু‘ করোনার টেষ্ট করা থেকে মুক্তি মেলেনি তার।
তখন ঐ রোগীর টেষ্ট করতে এগিয়ে আসেনি কেউ । যদিও ঐ সময়ে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে করোনা প্যাথলজি বিভাগে বিভূতি ভূষন ছাড়াও রয়েছে আরো পাঁচ জন এবং তাদের মধ্যে একজন আইএইচটি তে ছিল ডেপুটেশনে। এছাড়াও অফিস সহায়ক ছিল ৭ জন । কিন্তু সেদিন প্রয়োজনের সময়ে এগিয়ে আসেনি কেউ । তাই নিছক বাধ্য হয়েই একাই এগিয়ে এলেন মানবতার কাজে মানবতার দূত হয়ে।
যদিও হাসপাতাল থেকে তালিকা করে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল । কিন্ত তারা বিভিন্ন অযুহাতে কাজ না করে দায়িত্ব এড়িয়ে গেছেন। সহযোগিতা করেনি কোন অফিস সহায়কও । তাই বাধ্য হয়েই একা একাই করোনা আইসোলেশন ইউনিটে ও করোনা ওর্য়াডে ২৫ দিন কাজ করে নমুনা সংগ্রহ করে ফেলেন ১৮৯ জনের ।
মৃত্যু ভয় আছে সবারই , মরবে সবাই ,অমর নয় কেউ । কিন্ত র্কম বেঁচে থাকে যুগ যুগ ধরে। র্কীতিমানের মৃত্যু নেই । মানুষ বাঁচে তার কর্মেই। তাইতো পৃথিবীতে মানবতা বেচেঁ আছে এখনো, হয়েছে পৃথিবী এতো সুন্দর।
১২ ই এপ্রিল প্রথম দুই জন করোনা পজিটিভ রোগী শনাক্ত হয় । যেহেতু করোনা পজিটিভ রোগীর সংর্ষ্পশে তাকে যেতে হয়েছে তাই তার নরমাল জীবনযাপন কঠিন হয়ে পড়ে।
বিভূতিভূষণের সাথে একান্ত আলাপে জানাগেছে , ১৩ই এপ্রিল সাগরদীতে অবস্থিত কারিতাসের যে রুম তার জন্য বরাদ্ধ হয়েছিল তাতে কয়েক বছরে কোন মানুষ ছিল না। সেখানে থাকার কোন পরিবেশ ও ছিলনা । রুম পরিস্কার করতে গিয়েও তার হাত কেটে গিয়েছে । তার জন্য হয়নি কোন খাবারের ব্যবস্থা। কেউ একজন তার কষ্ট দেখে রোগীর জন্য বরাদ্ধকৃত ১০ নম্বর ডায়েটের অফার করেছিল । কিন্ত‘ প্রতিশ্রুতিশীল আত্মপ্রত্যয়ী যুবক তাকে অবজ্ঞাভরে প্রত্যাখ্যান করে। লকডাউনের মধ্যে কিভাবে যাতায়াত করছে কতৃপক্ষের কেউ তার খোঁজ নেয়নি। খুব কষ্টের সাথে কথাগুলো বললেন তিনি।
করোনা ওর্য়াডে প্রতি রোগীর নমুনা সংগ্রহ করার জন্য প্রতিদিন প্রয়োজন হয় : ১) পিপিই ২) গ্লাভস ২ জোড়া ,৩) গাউন , ৪) এন ৯৫ মাস্ক , ৫) সু কভার ২ জোড়া । পিপিই সরবরাহ করা হয় কিন্ত সেটা যে মানের হওয়ার কথা সেই মানের নয় । ২৫ দিনে এন ৯৫ মাস্ক সরবরাহ করা হয় মাত্র একটি। তাকে নমুনা সংগ্রহ করতে হয় সার্জিক্যাল মাস্ক পড়ে ।
নানাবিধ সমস্যা থাকার পরেও মানবিক বিভূতিভূষণ তার নিজের দায়িত্ব ফেলে পালিয়ে যাননি কখনো । তিনি তার আপন র্কম করে যাচ্ছেন র্নিবিঙ্গে। এভাবেই মানবতা বেঁচে থাকবে যুগ যুগ ধরে, প্রতিটি মানুষের অন্তরে অন্তরে। বিভূতিভূষণরা বেঁচে থাকবে আমাদের মাঝে রিয়েল হিরো হয়ে সবার অন্তরে অন্তরে।