ঢাকা ০৬:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২২ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রতি লিটার দুধে ৭শ গ্রাম পানি, বাকি ৩শ গ্রামে চকপাউডার আর ময়দা

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১২:১৬:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯
  • ৪৩৩ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ ভৈরবে ইউএনওকে দেখে দৌড়ে পালিয়েছে এক গোয়ালা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীন শহরের জগনাথপুর এলাকার বিনি বাজারে গেলে এ ঘটনাটি ঘটে। তিনি পুলিশ নিয়ে ওই বাজারে গেলে এক গোয়ালা তার বালতির দুধ রাস্তায় রেখেই দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায়। তার দৌড় দেখে পাশের আরও তিনজন গোয়ালা একইভাবে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এ সময় অভিযানে থাকা পৌর স্যানেটারি পরিদর্শক নাসিমা বেগম গোয়ালাদের বালতির দুধ পরীক্ষা করলে দেখতে পায় ভেজাল দুধ আছে বালতিতে। প্রতি লিটার দুধে ৭০০ গ্রাম করে পানি আছে এবং দুধে মেশানো হয়েছে চক পাউডার আর ময়দা। পুরো দুধেই ভেজাল।

এ বাজারে রমজান মাসের আগেও দুধ বিক্রি হতো। কিন্তু রমজান মাসের শুরুতেই দুধ বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায়। এরপর ইউএনও ভেজাল দুধ বালতি থেকে ড্রেনে ফেলে দেয়। গোয়ালাদের ধরতে না পারায় তাদের জরিমানা করা সম্ভব হয়নি।

স্যানেটারি পরিদর্শক নাসিমা বেগম বলেন, বিনিবাজারে রমজানের আগেও অভিযান চালিয়েছি। তখনও দুধে ভেজাল পেয়েছি। তবে ভেজালে তখন পানির পরিমাণ কম ছিল। গোয়ালারা চক পাউডার, ময়দাসহ নানা কেমিক্যাল দিয়ে দুধের রং ও গাঢ় করতো। ক্রেতারা না চিনে সুন্দর কালার দেখে ভেজাল দুধ কিনতো।

তিনি বলেন, রমজানের আগে প্রতি লিটার দুধের দাম ছিল ৪৫/৫০ টাকা। আর রমজান আসার পর বিক্রি হচ্ছে ৬০/৭০ টাকা। এ কারণে গোয়ালরা অবাধে গরুর দুধে ভেজাল করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে। তবে বাজারে কিছু কিছু গোয়ালের কাছে ভেজালহীন দুধ পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।

ভৈরবের এ বিনি বাজারে পার্শ্ববর্তী গ্রাম মাহমুদাবাদ, নারায়নপুর, রায়পুরা থেকে প্রতিদিন দুধ আসে। এলাকার মানুষ খাঁটি দুধ মনে করে এসব দুধ কিনে খাচ্ছে। কৃষকদের দাবি, আমরা বাড়িতে গাভি পালন করে খাঁটি দুধ গোয়ালাদের কাছে বিক্রি করছি। তারা দুধে ভেজাল মিশ্রণ করে বিক্রি করে।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীন জানান, কি করবো বলুন? শহরের সবকিছুতেই ভেজাল। দুধের মধ্যে চক পাউডার আর ময়দা মেশানো জঘন্য অপরাধ। ভৈরবের সেমাই, মশলা, খেজুর, রেস্তোরাঁ যেখানেই যায় শুধু ভেজাল আর ভেজাল। ভেজাল ধরতে প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত করে অভিযান চালাচ্ছি।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

প্রতি লিটার দুধে ৭শ গ্রাম পানি, বাকি ৩শ গ্রামে চকপাউডার আর ময়দা

আপডেট সময় : ১২:১৬:৫০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১১ মে ২০১৯

অনলাইন ডেস্কঃ ভৈরবে ইউএনওকে দেখে দৌড়ে পালিয়েছে এক গোয়ালা। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীন শহরের জগনাথপুর এলাকার বিনি বাজারে গেলে এ ঘটনাটি ঘটে। তিনি পুলিশ নিয়ে ওই বাজারে গেলে এক গোয়ালা তার বালতির দুধ রাস্তায় রেখেই দৌড় দিয়ে পালিয়ে যায়। তার দৌড় দেখে পাশের আরও তিনজন গোয়ালা একইভাবে দৌড়ে পালিয়ে যায়।

এ সময় অভিযানে থাকা পৌর স্যানেটারি পরিদর্শক নাসিমা বেগম গোয়ালাদের বালতির দুধ পরীক্ষা করলে দেখতে পায় ভেজাল দুধ আছে বালতিতে। প্রতি লিটার দুধে ৭০০ গ্রাম করে পানি আছে এবং দুধে মেশানো হয়েছে চক পাউডার আর ময়দা। পুরো দুধেই ভেজাল।

এ বাজারে রমজান মাসের আগেও দুধ বিক্রি হতো। কিন্তু রমজান মাসের শুরুতেই দুধ বিক্রির পরিমাণ বেড়ে যায়। এরপর ইউএনও ভেজাল দুধ বালতি থেকে ড্রেনে ফেলে দেয়। গোয়ালাদের ধরতে না পারায় তাদের জরিমানা করা সম্ভব হয়নি।

স্যানেটারি পরিদর্শক নাসিমা বেগম বলেন, বিনিবাজারে রমজানের আগেও অভিযান চালিয়েছি। তখনও দুধে ভেজাল পেয়েছি। তবে ভেজালে তখন পানির পরিমাণ কম ছিল। গোয়ালারা চক পাউডার, ময়দাসহ নানা কেমিক্যাল দিয়ে দুধের রং ও গাঢ় করতো। ক্রেতারা না চিনে সুন্দর কালার দেখে ভেজাল দুধ কিনতো।

তিনি বলেন, রমজানের আগে প্রতি লিটার দুধের দাম ছিল ৪৫/৫০ টাকা। আর রমজান আসার পর বিক্রি হচ্ছে ৬০/৭০ টাকা। এ কারণে গোয়ালরা অবাধে গরুর দুধে ভেজাল করে ক্রেতাদের কাছে বিক্রি করছে। তবে বাজারে কিছু কিছু গোয়ালের কাছে ভেজালহীন দুধ পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান।

ভৈরবের এ বিনি বাজারে পার্শ্ববর্তী গ্রাম মাহমুদাবাদ, নারায়নপুর, রায়পুরা থেকে প্রতিদিন দুধ আসে। এলাকার মানুষ খাঁটি দুধ মনে করে এসব দুধ কিনে খাচ্ছে। কৃষকদের দাবি, আমরা বাড়িতে গাভি পালন করে খাঁটি দুধ গোয়ালাদের কাছে বিক্রি করছি। তারা দুধে ভেজাল মিশ্রণ করে বিক্রি করে।

ভৈরব উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত সাদমীন জানান, কি করবো বলুন? শহরের সবকিছুতেই ভেজাল। দুধের মধ্যে চক পাউডার আর ময়দা মেশানো জঘন্য অপরাধ। ভৈরবের সেমাই, মশলা, খেজুর, রেস্তোরাঁ যেখানেই যায় শুধু ভেজাল আর ভেজাল। ভেজাল ধরতে প্রতিদিন ভ্রাম্যমাণ আদালত করে অভিযান চালাচ্ছি।