ধানসিঁড়ি নিউজ।।বরিশালে উদ্বেগজনক ভাবে ছড়িয়ে পড়েছে করোনা আক্রান্তের হার। দিনে দিনে আক্রান্তে সংখ্যা বাড়ছে জ্যামিতিক হারে। মহানগরীতে ক্রমাগত বাড়ছে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। যত দিন যাচ্ছে ততই বাড়ছে এর প্রাদুর্ভাব।
করোনা প্রাদুভাবের সময় বরিশালকে নিরাপদ মনে করা হলেও সেই বরিশালেই এখন ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে ভাইরাসটি। প্রথম দিকে ১জন,২জন আক্রান্ত হয়েছে। আবার কোনদিন আক্রান্তের সংখ্যা শূণ্যও ছিল। অথচ গত এক সপ্তাহ ধরে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে বরিশাল মহানগরীতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৩ জন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে,২১ মে বরিশাল জেলায় আরো ৪ জন ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত হয়েছে। করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২৫ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে একজন বরিশাল মহানগরীর সিএন্ডবি রোডে চৌমাথা এলাকার বাসিন্দা পুরুষ বয়স (৫৫), অন্য একজন নগরীর কালি বাড়ি রোড এলাকার বাসিন্দা পুরুষ বয়স (২৭), বরিশাল মহানগরীর খান সড়ক দক্ষিণ আলেকান্দার বাসিন্দা পুরুষ বয়স (৪০), অন্য জন বরিশাল নগরীর সাগরদী এলাকার বাসিন্দা পুরুষ বয়স (৩২) তাদের কোভিড-১৯ পজিটিভ পাওয়া গেছে।
আজ ২১ মে বৃহস্পতিবার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের মাইক্রোবায়লোজি বিভাগে স্থাপিত আরটি-পিসিআর ল্যাবে বেশ কিছু নমুনা পরীক্ষা করা হলে ৪ জনের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। বরিশাল জেলা প্রশাসক এস, এম, অজিয়র রহমান জানান, রিপোর্ট পাওয়ার পর পরই ওই চার জন ব্যাক্তির অবস্থান অনুযায়ী তাদের লকডাউন করা হয়েছে। তাদের আশপাশের বসবাসের অবস্থান নিশ্চিত করে লকডাউন করার প্রক্রিয়া চলছে। পাশাপাশি তাদের অবস্থান এবং কোন কোন স্থানে যাতায়াত ও কাদের সংস্পর্শে ছিলেন তা চিহ্নিত করার কাজ চলছে, সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গত ১২ এপ্রিল এ জেলায় প্রথমবারের মতো মেহেন্দীগঞ্জ ও বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ২ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়। করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্তের পরিপ্রেক্ষিতে ঐদিনই জেলাকে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। কিন্তু ৬ মে থেকে লকডাউন শিথিল এবং ১০ মে থেকে মার্কেট/ শপিংমলগুলো খুলে দেয়া হলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। করোনা আতংক পিছনে ফেলে কিছু মানুষ পরিবারসহ ঈদ কেনাকাটায় ঝাঁপিয়ে পড়ে। ভুলে যায় সামাজিক দুরত্ব, এমনকি মাস্ক ব্যবহারও। অপরদিকে ঢাকা থেকেও মানুষজন বিভিন্ন ভাবে বরিশালে আসতে থাকে। ফলে করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে ব্যাপকভাবে।
জেলা প্রশাসনের দেয়া তথ্যমতে গত ১২ এপ্রিল থেকে অদ্যাবধি বাবুগঞ্জ উপজেলায় ১২ জন, সদর উপজেলায় শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক,নার্স ও শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ছাত্রসহ ৮৩ জন, উজিরপুর উপজেলায় ৮ জন, মেহেন্দীগঞ্জ উপজেলায় ৫ জন, বাকেরগঞ্জ উপজেলায় ৪ জন, বানারীপাড়া,হিজলা ও আগৈলঝাড়া উপজেলার প্রত্যেকটিতে ৩ জন করে, গৌরনদী ও মুলাদী উপজেলার প্রত্যেকটিতে ২ জন করে মোট ১২৫ জন করোনা আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়েছে।
গত ১৩ মে শনাক্ত হওয়া ১ জন মেডিকেল টেকনলজিস্ট সহ করোনা ভাইরাস প্রাদুর্ভাব শুরুর পর থেকে এ জেলায় স্বাস্থ্য বিভাগে কর্মরত ৯ জন চিকিৎসক (ইন্টার্ন চিকিৎসক ৪ জন), ৬ জন নার্স, ১ জন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক মিলিয়ে সর্বমোট ১৭ জন করোনা আক্রান্ত হয়েছেন।