ঢাকা ০৯:০৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

লকডাউনে ব্যবসার ধরণ বদলেছে বরিশালে নিম্ন আয়ের মানুষ

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৬:৫০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০২০
  • ৩৬৬ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারা দেশের মতো করোনা প্রাদুর্ভাব এড়াতে বরিশালেও লকডাউন ঘোষণা করেছিলো প্রশাসন। এতে ফার্মেসি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরণের দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়।

প্রথম দিকে সরকারি সহযোগিতা পেয়ে কর্মহীন মানুষ ঘরে থাকলেও লকডাউন শিথিল করার পরপরই ব্যবসার ধরন বদলে দিয়েছে নিম্ন আয়ের অনেকে। জীবিকার তাগিদেই ঘর থেকে বের হয়েছেন বলে জানায় এসব নিম্ন আয়ের মানুষ।

সরেজমিন ঘুরে দেয়া যায়, করোনা পরিস্থিতে জনসমাগম এড়াতে যানচলাচল বন্ধ করার পাশাপাশি চায়ের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করে কোনো রকম খাবারের জোগান দিচ্ছেন।

নগরীর বিএম কলেজ এলাকার চা বিক্রেতা অপু। তিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে চা বিক্রি করছেন। প্রতিদিন তিনি চা বিক্রি করে ৪/৫ হাজার টাকা পেতেন। তার চায়ের সুনাম ওই এলাকা ছাড়াও প্রায় বরিশাল শহরজুড়ে কিন্তু করোনার কারনে চা বিক্রি বন্ধ করে তিনি এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি-মনোহারী ব্যবসা শুরু করেছেন।

অপু জানায়, চায়ের দোকান মানেই গ্যাদারিং, যেহেতু করোনার কারনে লোক গ্যাদারিং করা যাবে না এবং এই সংকট কবে কাটবে তাও বলা যাচ্ছে না তাই জীবিকা নির্বাহের জন্য মুদি-মনোহারীর ব্যবসা শুরু করেছি।

জিয়া সড়ক এলাকার শাকিল। কয়েকবছর ধরে তিনি অটোরিকসা চালাতেন। করোনার কারনে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার সংসার চালাতে বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়, তাই তিনি এখন নথুল্লাবাদ কাঁচা বাজারে ডিমের ব্যবসা শুরু করেছেন।

পলাশপুরের ভ্যান চালক আমীর আলী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বেশ ভালোই চলছিলো তার সংসার কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবে থমকে যায় তার ভ্যান চালানো। তাই লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে তিনি তার ভ্যানে তরকারির ব্যবসা শুরু করেছেন।

আমীর আলী বলেন, লকডাউনের কারনে আমি বাসায় অবস্থান করেছিলাম। প্রথমে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেয়েছিলাম কিন্তু এ সহযোগিতায় পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে আর কয়দিন চলা যায়? তাই বাধ্য হয়ে ভ্যানে তরকারি ব্যবসা শুরু করেছি।

শুধু অপু, শাকিল, শামিম কিংবা আমীর আলীই নয় তাদের মতো অনেক নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের মানুষ বদলেছে তাদের ব্যবসার ধরন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এড়াতে সকলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করলে সরকারের বেশি বেগ পোহাতে হবে না বলে মনে করছেন সুশীল সমাজ। পাশাপাশি এসব মানুষগুলার জন্য সরকারি সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বানও জানান তাঁরা।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রক্ত ঝরিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আসিফদের থামাতে পারে নাই: হাসনাত

লকডাউনে ব্যবসার ধরণ বদলেছে বরিশালে নিম্ন আয়ের মানুষ

আপডেট সময় : ০৬:৫০:৩১ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ মে ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারা দেশের মতো করোনা প্রাদুর্ভাব এড়াতে বরিশালেও লকডাউন ঘোষণা করেছিলো প্রশাসন। এতে ফার্মেসি এবং নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান ছাড়া সব ধরণের দোকানপাট বন্ধ করে দেয়া হয়।

প্রথম দিকে সরকারি সহযোগিতা পেয়ে কর্মহীন মানুষ ঘরে থাকলেও লকডাউন শিথিল করার পরপরই ব্যবসার ধরন বদলে দিয়েছে নিম্ন আয়ের অনেকে। জীবিকার তাগিদেই ঘর থেকে বের হয়েছেন বলে জানায় এসব নিম্ন আয়ের মানুষ।

সরেজমিন ঘুরে দেয়া যায়, করোনা পরিস্থিতে জনসমাগম এড়াতে যানচলাচল বন্ধ করার পাশাপাশি চায়ের দোকান বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন। তাই অনেকেই বাধ্য হয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্য বিক্রি করে কোনো রকম খাবারের জোগান দিচ্ছেন।

নগরীর বিএম কলেজ এলাকার চা বিক্রেতা অপু। তিনি প্রায় ৩৫ বছর ধরে চা বিক্রি করছেন। প্রতিদিন তিনি চা বিক্রি করে ৪/৫ হাজার টাকা পেতেন। তার চায়ের সুনাম ওই এলাকা ছাড়াও প্রায় বরিশাল শহরজুড়ে কিন্তু করোনার কারনে চা বিক্রি বন্ধ করে তিনি এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় মুদি-মনোহারী ব্যবসা শুরু করেছেন।

অপু জানায়, চায়ের দোকান মানেই গ্যাদারিং, যেহেতু করোনার কারনে লোক গ্যাদারিং করা যাবে না এবং এই সংকট কবে কাটবে তাও বলা যাচ্ছে না তাই জীবিকা নির্বাহের জন্য মুদি-মনোহারীর ব্যবসা শুরু করেছি।

জিয়া সড়ক এলাকার শাকিল। কয়েকবছর ধরে তিনি অটোরিকসা চালাতেন। করোনার কারনে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়ায় তার সংসার চালাতে বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যায়, তাই তিনি এখন নথুল্লাবাদ কাঁচা বাজারে ডিমের ব্যবসা শুরু করেছেন।

পলাশপুরের ভ্যান চালক আমীর আলী। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ভ্যান চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। বেশ ভালোই চলছিলো তার সংসার কিন্তু করোনার প্রাদুর্ভাবে থমকে যায় তার ভ্যান চালানো। তাই লকডাউন শিথিল হওয়ার পরে তিনি তার ভ্যানে তরকারির ব্যবসা শুরু করেছেন।

আমীর আলী বলেন, লকডাউনের কারনে আমি বাসায় অবস্থান করেছিলাম। প্রথমে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা পেয়েছিলাম কিন্তু এ সহযোগিতায় পরিবারের ৬ সদস্য নিয়ে আর কয়দিন চলা যায়? তাই বাধ্য হয়ে ভ্যানে তরকারি ব্যবসা শুরু করেছি।

শুধু অপু, শাকিল, শামিম কিংবা আমীর আলীই নয় তাদের মতো অনেক নিম্ন এবং মধ্যম আয়ের মানুষ বদলেছে তাদের ব্যবসার ধরন। করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব এড়াতে সকলে নিজ নিজ অবস্থান থেকে কাজ করলে সরকারের বেশি বেগ পোহাতে হবে না বলে মনে করছেন সুশীল সমাজ। পাশাপাশি এসব মানুষগুলার জন্য সরকারি সহায়তা অব্যাহত রাখার আহ্বানও জানান তাঁরা।