ঢাকা ০৩:০৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আজ কবি হুমায়ুন কবিরে ৪৯তম মৃত্যু দিবস।

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০১:০৮:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুন ২০২০
  • ৪১৫ বার পড়া হয়েছে

সাইফুল ইসলাম: আজ ৬ জুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক, “কুসুমিত ইস্পাত” কাব্যগ্রন্থের স্রষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কবি হুমায়ুন কবিরের ৪৯তম মৃত্যু দিবস।

১৯৭২ সনের ৬ জুন দিবাগত রাত আনুমানিক ১১/১২টার সময় কে বা কাহারা হুমায়ুনের ইন্দিরা রোডস্থ ভাড়া বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে বাসার অনতিদূরে মাঠের পাশে তাঁর মৃত দেহ পাওয়া যায়। মৃতদেহ পাওয়া যায় তার পরে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়)। তাঁর পিতার নাম- মোঃ হাবিবুর রহমান, মাতার নাম- জাহানারা বেগম। পৈত্রিক ঠিকানা- ৫২৩, হাসেম কুটির, বিএম কলেজ রোড, বরিশাল।

হুমায়ুন কবির বর্তমান ঝালকাঠী জেলার রাজাপুর উপজেলার সাকরাইল গ্রামে ১৯৪৮ সালের ২৫ আগষ্ট জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সন্তানদের লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে স্বপরিবারে বরিশাল শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তীতে বিএম কলেজ রোডে বাড়ি করে সেখানে বসবাস শুরু করেন। হুমায়ুন বিএম স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা, বিএম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিষয়ে অনার্স সহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি তৎকালীন সময়ে কক্সবাজার’র একটি কলেজে তাঁর প্রথম কর্মজীবন শুরু করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং আমৃত্যু সেখানেই দায়িত্ব পালন করেছেন সেই সাথে বাংলা একাডেমি বৃত্তি নিয়ে জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে গবেষণার কাজ শুরু করেন।

হুমায়ুন কবিরের অনুজ নওরোজ কবির এর সাথে হুমায়ুন সম্পর্কে কথা বললে তিনি স্মৃতি রোমত্থন করে বলেন, “হুমায়ুন কবির যখন মারা যান তখন আমার বয়স ৪/৫ বছর হবে। কিছু কিছু মনে পড়ে। হুমায়ুন কবির হাল্কাপাতলা ছিলেন, সবসময় সাদা পাজামা-পাঞ্জাবী পড়তেন। তিনি বাংলার শিক্ষক হলেও সর্বদা ইংরেজি বই পড়তে দেখতাম। তিনি তিন সন্তান এবং স্ত্রী সুলতানা রেবু সহ ঢাকার ফার্মগেট সংলগ্ন ইন্দিরা রোডে একটি টিনশেড ঘরে বসবাস করতেন।”

কবির রচিত কাব্য গ্রন্থ “কুসুমিত ইস্পাত” যখন ছাপাখানায় পুরোপুরি কম্পোজ হয়ে প্রকাশের অপেক্ষায় তখনই তিনি লোকান্তরিত হলেন। তাঁর মৃত্যুর মাস খানেক পরে ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত হয় “কুসুমিত ইস্পাত”। বাংলা একাডেমি ১৯৮৫ সালে কুসুমিত ইস্পাতসহ “রক্তের ঋণ” ও “অগ্রন্থিত কবিতা” নামের আরও দুটি কবিতা সংকলন, জীবনানন্দ দাশ সম্পর্কিত প্রবন্ধাবলিসহ আরও কিছু অনূদিত প্রবন্ধ, কবিতা ও গল্পসহ “হুমায়ুন কবির রচনাবলি” নামক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করে।

কবির অকাল প্রয়াণে সাহিত্য জগতে এক অপূর্ণতা রয়ে গেছে। বলিষ্ঠ লেখনির কবি হুমায়ুন কবিরের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

রক্ত ঝরিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আসিফদের থামাতে পারে নাই: হাসনাত

আজ কবি হুমায়ুন কবিরে ৪৯তম মৃত্যু দিবস।

আপডেট সময় : ০১:০৮:২৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জুন ২০২০

সাইফুল ইসলাম: আজ ৬ জুন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রভাষক, “কুসুমিত ইস্পাত” কাব্যগ্রন্থের স্রষ্ঠা, মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক কবি হুমায়ুন কবিরের ৪৯তম মৃত্যু দিবস।

১৯৭২ সনের ৬ জুন দিবাগত রাত আনুমানিক ১১/১২টার সময় কে বা কাহারা হুমায়ুনের ইন্দিরা রোডস্থ ভাড়া বাসা থেকে ডেকে নিয়ে যায়। পরে বাসার অনতিদূরে মাঠের পাশে তাঁর মৃত দেহ পাওয়া যায়। মৃতদেহ পাওয়া যায় তার পরে (ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদের পাশে তাঁকে সমাধিস্থ করা হয়)। তাঁর পিতার নাম- মোঃ হাবিবুর রহমান, মাতার নাম- জাহানারা বেগম। পৈত্রিক ঠিকানা- ৫২৩, হাসেম কুটির, বিএম কলেজ রোড, বরিশাল।

হুমায়ুন কবির বর্তমান ঝালকাঠী জেলার রাজাপুর উপজেলার সাকরাইল গ্রামে ১৯৪৮ সালের ২৫ আগষ্ট জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা সন্তানদের লেখাপড়ার কথা চিন্তা করে স্বপরিবারে বরিশাল শহরে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন। পরবর্তীতে বিএম কলেজ রোডে বাড়ি করে সেখানে বসবাস শুরু করেন। হুমায়ুন বিএম স্কুল থেকে মাধ্যমিক শিক্ষা, বিএম কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলা বিষয়ে অনার্স সহ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি তৎকালীন সময়ে কক্সবাজার’র একটি কলেজে তাঁর প্রথম কর্মজীবন শুরু করেন। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলা বিভাগে প্রভাষক হিসেবে যোগদান করেন এবং আমৃত্যু সেখানেই দায়িত্ব পালন করেছেন সেই সাথে বাংলা একাডেমি বৃত্তি নিয়ে জীবনানন্দ দাশকে নিয়ে গবেষণার কাজ শুরু করেন।

হুমায়ুন কবিরের অনুজ নওরোজ কবির এর সাথে হুমায়ুন সম্পর্কে কথা বললে তিনি স্মৃতি রোমত্থন করে বলেন, “হুমায়ুন কবির যখন মারা যান তখন আমার বয়স ৪/৫ বছর হবে। কিছু কিছু মনে পড়ে। হুমায়ুন কবির হাল্কাপাতলা ছিলেন, সবসময় সাদা পাজামা-পাঞ্জাবী পড়তেন। তিনি বাংলার শিক্ষক হলেও সর্বদা ইংরেজি বই পড়তে দেখতাম। তিনি তিন সন্তান এবং স্ত্রী সুলতানা রেবু সহ ঢাকার ফার্মগেট সংলগ্ন ইন্দিরা রোডে একটি টিনশেড ঘরে বসবাস করতেন।”

কবির রচিত কাব্য গ্রন্থ “কুসুমিত ইস্পাত” যখন ছাপাখানায় পুরোপুরি কম্পোজ হয়ে প্রকাশের অপেক্ষায় তখনই তিনি লোকান্তরিত হলেন। তাঁর মৃত্যুর মাস খানেক পরে ১৯৭২ সালের জুলাই মাসে প্রকাশিত হয় “কুসুমিত ইস্পাত”। বাংলা একাডেমি ১৯৮৫ সালে কুসুমিত ইস্পাতসহ “রক্তের ঋণ” ও “অগ্রন্থিত কবিতা” নামের আরও দুটি কবিতা সংকলন, জীবনানন্দ দাশ সম্পর্কিত প্রবন্ধাবলিসহ আরও কিছু অনূদিত প্রবন্ধ, কবিতা ও গল্পসহ “হুমায়ুন কবির রচনাবলি” নামক একটি গ্রন্থ প্রকাশ করে।

কবির অকাল প্রয়াণে সাহিত্য জগতে এক অপূর্ণতা রয়ে গেছে। বলিষ্ঠ লেখনির কবি হুমায়ুন কবিরের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।