নিউজ ডেস্ক।।অত্যধিক করোনা সংক্রমণ এলাকায় (রেড জোন) মুসলমানদের নামাজসহ অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের প্রার্থনা ঘরে বসেই করতে হবে। মসজিদ কিংবা অন্যান্য ধর্মীয় উপাসনালয়ে সমবেত হয়ে প্রার্থনা করা যাবে না।
এমন পাঁচটি নির্দেশনা দিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় শনিবার (১৩ জুন) বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী প্রাণঘাতি করোনা সংক্রমণ ভয়াবহ আকার ধারণ করায় ধর্ম মন্ত্রণালয় গত ৬ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দেশের জনসাধারণের মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ অন্যান্য উপসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসায় ইবাদত/উপাসনা করার নির্দেশ দেয়।পরবর্তীতে ৬ মে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরণ করে মসজিদে সুস্থ মুসল্লিদের উপস্থিতিতে জামাতে নামাযের অনুমতি দেয়া হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, দেশে করোনা পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে এবং সংক্রমণ ও প্রাণহানির সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। করোনার চলমান ঝুঁকি বিবেচনায় দেশের যে কোনো ছোট বা বড় এলাকাকে লাল, হলুদ বা সবুজ জোন (রেড, ইয়োলো ও গ্রিন) হিসেবে চিহ্নিতকরণ কার্যক্রম চলছে।ইতিমধ্যে কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে পরীক্ষামূলক জোনিং সিস্টেম বাস্তবায়ন কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। গত ১২ জুন স্বাস্থ্য মন্ত্রীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকায় মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ অন্যান্য উপসনালয়ে সর্বসাধারণের আগমন বন্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে সর্বোচ্চ পর্যায়ের সকলের সঙ্গে পরামর্শক্রমে রেড জোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকায় জনসাধারণের মসজিদ, মন্দির, গীর্জা ও প্যাগোডাসহ অন্যান্য উপসনালয়ে স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে ইবাদত/উপাসনার বিষয়ে পাঁচটি নির্দেশ দেয়া হয়।
নির্দেশনাগুলো হলো-
১. ভয়ানক করোনা সংক্রমণ রোধ লালজোন হিসেবে চিহ্নিত এলাকায় মসজিদের খতীব, ইমাম, মুয়াজ্জিন ও খাদেম ছাড়া অন্য মুসল্লিকে সরকারের পক্ষ থেকে নিজ নিজ বাসস্থানে নামায আদায় এবং জুমআর জামায়াতে অংশগ্রহণের পরিবর্তে ঘরে যোহরের নামায আদায়ের নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে।
২. উল্লিখিত এলাকায় মসজিদে জামাত চালুর প্রয়োজনে খতিব, ইমাম, মুয়াজ্জিন, খাদেমসহ পাঁচ ওয়াক্তের নামাযে স্বাস্থ্য বিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে সর্বোচ্চ পাঁচজন এবং জুমআর জামাতে সর্বোচ্চ ১০ জন শরিক হতে পারবেন। জনস্বার্থে বাহিরের কোনো মুসল্লি মসজিদের জামাতে অংশ নিতে পারবেন না।
৩. একই সঙ্গে উল্লিখিত এলাকাসমূহে অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদেরকে স্ব স্ব উপাসনালয়ে সমবেত না হয়ে নিজ নিজ বাসস্থানে উপাসনা করার জন্য নির্দেশ দেয়া যাচ্ছে।
৪. এ সময়ে সারাদেশে কোথাও ওয়াজ মাহফিল, তাফসির মাহফিল, তাবলীগি তালীম বা মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা যাবে না। সবাই ব্যক্তিগতভাবে তিলাওয়াত, যিকির ও দুআর মাধ্যমে মহান আল্লাহর রহমত ও বিপদ মুক্তির প্রার্থনা করবেন।
৫. অন্যান্য ধর্মের অনুসারীরাও এ সময়ে কোন ধর্মীয় বা সামাজিক আচার অনুষ্ঠানের জন্য সমবেত হতে পারবেন না।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সব ধর্মের মূলনীতির আলোকে এবং জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার স্বার্থে এ নির্দেশনা জারি করা হলো। উল্লিখিত নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসমূহের পরিচালনা কমিটিকে অনুরোধ জানানো হলো। কোনো প্রতিষ্ঠানে সরকারি এ নির্দেশ লংঘিত হলে প্রশাসন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণে বাধ্য হবে।