ঢাকা ০৮:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনার চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের অনুমোদন যুক্তরাজ্যের

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১০:৫৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০
  • ৯০৯ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক//করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ‘জীবনরক্ষাকারী প্রথম ওষুধ’ ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। গবেষকরা জানিয়েছেন, অত্যন্ত সস্তা ও সহজলভ্য এ ওষুধটি প্রয়োগে অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীদেরও প্রাণরক্ষা সম্ভব। মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই ব্যাপক হারে ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস।

গবেষকরা বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কম ডোজের স্টেরয়েড এই চিকিৎসা একটি বড় ধরনের অগ্রগতি। ভেন্টিলেটরে থাকা করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনে ওষুধটি। এছাড়া যারা অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন; তাদের মৃত্যুর হার এক-পঞ্চমাংশ কমিয়ে আনে।

সশ্লিষ্টদের মতে, ব্রিটেনে করোনাভাইরাস মহামারির শুরুর দিকে যদি ওষুধটি পাওয়া যেত, তাহলে দেশটিতে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো যেত। করোনায় ভুক্তভোগী দরিদ্র দেশগুলোর জন্যও বিশাল উপকারে আসতে পারত ওষুধটি। কিছুটা দেরিতে হলেও সেই কাজ অবশেষে শুরু হতে চলেছে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এই ওষুধটি সেবন করেছেন এমন প্রত্যেক ২০ জনের মধ্যে ১৯ জনই হাসপাতালে না গিয়েই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এছাড়া যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন- তাদের বেশি ভাগই সুস্থ হয়েছেন। তবে কারও কারও জন্য অক্সিজেন এবং ভেন্টিলেশনের দরকার হয়েছিল।

শরীরের প্রদাহ কমিয়ে আনতে এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। ব্রিটিশ গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায় তখন এর কিছু ক্ষতি ঠেকাতে সহায়তা করে ডেক্সামেথাসন।

শরীরের এই অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াকে সাইটোকাইন স্টর্ম বলে; যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পরীক্ষার অংশ হিসেবে- হাসপাতালের প্রায় দুই হাজার করোনা রোগীকে এই ওষুধটি প্রয়োগ করেন এবং চার হাজারের বেশি রোগী যাদের এই ওষুধটি দেয়া হয়নি; তাদের সঙ্গে তুলনা করে দেখেন।

অক্সফোর্ডের এই বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি ৪০ থেকে ২৮ শতাংশ কমিয়ে আনে ডেক্সামেথাসন। এছাড়া যেসব রোগীর অক্সিজেন দরকার হয়, তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি কমায় ২৫ থেকে ২০ শতাংশ।

গবেষক দলের প্রধান তদন্তকারী অধ্যাপক পিটার হরবি বলেছেন, এটাই এখন পর্যন্ত একমাত্র ওষুধ যা মৃত্যু হার কমিয়ে এনেছে এবং এটা তাৎপর্যপূর্ণভাবে মৃত্যু হার হ্রাস করেছে। এটা বড় ধরনের অগ্রগতি।

অক্সফোর্ডের এই পরীক্ষা কার্যক্রমের প্রধান গবেষক অধ্যাপক মার্টিন ল্যান্ড্রে বলেছেন, তাদের গবেষণায় দেখা গেছে- ওষুধটি দিয়ে ভেন্টিলেটর প্রয়োজন এমন আটজন রোগীর মধ্যে মাত্র একজনের জীবন বাঁচানো যায়। অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীদের মধ্যে প্রত্যেক ২০ থেকে ২৫ জনের মধ্যে একজনের প্রাণ রক্ষা করা যায়।

তিনি বলেন, এই ওষুধে স্পষ্ট উপকার আছে। ডেক্সামেথাসনের এই চিকিৎসা ১০ দিন পর্যন্ত চালাতে হয়। এতে খরচ হয় মাত্র ৫ পাউন্ড। এটাই একমাত্র ওষুধ; যা বিশ্বজুড়েই সহজলভ্য।

সূত্র: ডেইলি মেইল

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চিন্ময় কৃষ্ণের সমর্থকদের হামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিহত

করোনার চিকিৎসায় ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের অনুমোদন যুক্তরাজ্যের

আপডেট সময় : ১০:৫৯:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ জুন ২০২০

নিউজ ডেস্ক//করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় ‘জীবনরক্ষাকারী প্রথম ওষুধ’ ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে যুক্তরাজ্য। গবেষকরা জানিয়েছেন, অত্যন্ত সস্তা ও সহজলভ্য এ ওষুধটি প্রয়োগে অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীদেরও প্রাণরক্ষা সম্ভব। মঙ্গলবার এ প্রতিবেদন প্রকাশের পরপরই ব্যাপক হারে ডেক্সামেথাসন ব্যবহারের অনুমোদন দেয় ন্যাশনাল হেলথ সার্ভিস।

গবেষকরা বলেছেন, প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কম ডোজের স্টেরয়েড এই চিকিৎসা একটি বড় ধরনের অগ্রগতি। ভেন্টিলেটরে থাকা করোনা রোগীদের মৃত্যুর হার এক-তৃতীয়াংশ কমিয়ে আনে ওষুধটি। এছাড়া যারা অক্সিজেন সাপোর্টে আছেন; তাদের মৃত্যুর হার এক-পঞ্চমাংশ কমিয়ে আনে।

সশ্লিষ্টদের মতে, ব্রিটেনে করোনাভাইরাস মহামারির শুরুর দিকে যদি ওষুধটি পাওয়া যেত, তাহলে দেশটিতে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের জীবন বাঁচানো যেত। করোনায় ভুক্তভোগী দরিদ্র দেশগুলোর জন্যও বিশাল উপকারে আসতে পারত ওষুধটি। কিছুটা দেরিতে হলেও সেই কাজ অবশেষে শুরু হতে চলেছে।

জানা গেছে, করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর এই ওষুধটি সেবন করেছেন এমন প্রত্যেক ২০ জনের মধ্যে ১৯ জনই হাসপাতালে না গিয়েই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। এছাড়া যারা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন- তাদের বেশি ভাগই সুস্থ হয়েছেন। তবে কারও কারও জন্য অক্সিজেন এবং ভেন্টিলেশনের দরকার হয়েছিল।

শরীরের প্রদাহ কমিয়ে আনতে এই ওষুধটি ব্যবহার করা হয়। ব্রিটিশ গবেষকরা বলছেন, করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যখন অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায় তখন এর কিছু ক্ষতি ঠেকাতে সহায়তা করে ডেক্সামেথাসন।

শরীরের এই অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়াকে সাইটোকাইন স্টর্ম বলে; যা অনেক সময় প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে। ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পরীক্ষার অংশ হিসেবে- হাসপাতালের প্রায় দুই হাজার করোনা রোগীকে এই ওষুধটি প্রয়োগ করেন এবং চার হাজারের বেশি রোগী যাদের এই ওষুধটি দেয়া হয়নি; তাদের সঙ্গে তুলনা করে দেখেন।

অক্সফোর্ডের এই বিজ্ঞানীরা বলেছেন, ভেন্টিলেটরে থাকা রোগীদের মৃত্যুর ঝুঁকি ৪০ থেকে ২৮ শতাংশ কমিয়ে আনে ডেক্সামেথাসন। এছাড়া যেসব রোগীর অক্সিজেন দরকার হয়, তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি কমায় ২৫ থেকে ২০ শতাংশ।

গবেষক দলের প্রধান তদন্তকারী অধ্যাপক পিটার হরবি বলেছেন, এটাই এখন পর্যন্ত একমাত্র ওষুধ যা মৃত্যু হার কমিয়ে এনেছে এবং এটা তাৎপর্যপূর্ণভাবে মৃত্যু হার হ্রাস করেছে। এটা বড় ধরনের অগ্রগতি।

অক্সফোর্ডের এই পরীক্ষা কার্যক্রমের প্রধান গবেষক অধ্যাপক মার্টিন ল্যান্ড্রে বলেছেন, তাদের গবেষণায় দেখা গেছে- ওষুধটি দিয়ে ভেন্টিলেটর প্রয়োজন এমন আটজন রোগীর মধ্যে মাত্র একজনের জীবন বাঁচানো যায়। অক্সিজেন সাপোর্টে থাকা রোগীদের মধ্যে প্রত্যেক ২০ থেকে ২৫ জনের মধ্যে একজনের প্রাণ রক্ষা করা যায়।

তিনি বলেন, এই ওষুধে স্পষ্ট উপকার আছে। ডেক্সামেথাসনের এই চিকিৎসা ১০ দিন পর্যন্ত চালাতে হয়। এতে খরচ হয় মাত্র ৫ পাউন্ড। এটাই একমাত্র ওষুধ; যা বিশ্বজুড়েই সহজলভ্য।

সূত্র: ডেইলি মেইল