ঢাকা ০৮:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঋণ খেলাপিদের নিয়মিত করণে বিশেষ প্রণোদনা

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৯:৪১:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০১৯
  • ৩৯৩ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্কঃ দেশের ঋণখেলাপিদের নিয়মিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খেলাপিরা মাত্র দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ৯ শতাংশ সুদহারে ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য ১০ বছর সময় পাবেন। এক্ষেত্রে প্রথম এক বছর কোনো কিস্তি দিতে হবে না।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করে এই নির্দেশনা দিয়েছে। এর ফলে ঋণ খেলাপিরা গণহারে ছাড়ের সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ছোট, মাঝারি বা বড়-সব ঋণ খেলাপিই পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন। ঋণ খেলাপিদের আগের অনারোপিত সব সুদ মাফ করে দেওয়া হবে।

এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ঋণ খেলাপিদের সুবিধা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রস্তাব পাঠায় বলে জানা গেছে।

‘ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা’ শীর্ষক সার্কুলারের বলা হয়েছে, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ব্যবসায়ী/শিল্পোদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাংকের ঋণ অনেক ক্ষেত্রেই নিয়মিতভাবে পরিশোধিত হচ্ছে না এবং সংশ্লিষ্ট ঋণ বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত হয়ে পড়ায় ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এ প্রেক্ষিতে উৎপাদনশীল খাতসহ অন্যান্য খাতে স্বাভাবিক ঋণ প্রবাহ বজায় রাখাসহ ব্যাংকিং খাতের বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত ঋণ নিয়মিত আদায়ের লক্ষ্যে কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক ঋণ খেলাপিরা সুযোগ পাবেন। ছাড় গ্রহণের জন্য আগামী ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৬ আগস্টের খেলাপির আবেদন করবেন। ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন। তবে প্রথম এক বছর কোনো টাকা পরিশোধ করতে হবে না। আর পুনঃতফসিলকৃত ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ বা ব্যাংকের কস্ট ফান্ডের সঙ্গে ৩ শতাংশ যোগ করে।

খেলাপি ঋণের সুদ ব্যাংক আয় দেখাতে পারে না। তাই পৃথক হিসেবে রাখতে হয়। পৃথক হিসেবে রাখা সব সুদ মাফ করে দেওয়া হবে। এই সুবিধা গ্রহণকারীরা ব্যাংক থেকে আবার নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন। প্রচলিত নিয়ম মেনে সতর্কতার সঙ্গে ঋণ দিতে বলা হয়েছে। নতুন ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে পুনঃতফসিল সুবিধা বাতিল হবে।

সুবিধা গ্রহণের পর নিয়মিত অর্থ পরিশোধ না করলেও তাদের খেলাপি করা যাবে না। এখানে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ৯টি মাসিক কিস্তির ৩টি এবং ত্রৈমাসিক ৩ কিস্তির ১টি পরিশোধ না করলেও নিয়মিত থাকা যাবে। তবে মাসিক কিস্তির মধ্যে ৬টি ও ত্রৈমাসিক কিস্তির ২টি পরিশোধ না করলে পুনঃতফসিল সুবিধা বাতিল করা হবে।

স্বাধীনতার পর থেকে যারা ঋণ খেলাপি তাদের এককালীন এক্সিট সুবিধা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তাদের খেলাপি ঋণের হিসাব হবে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের এক কালীন হিসাবায়ন ভিত্তিতে।

অর্থাৎ ১৯৭১ সালের পর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিমেম্বর পর্যন্ত যত খেলাপি ঋণ আছে তার হিসাব করা হবে। কোনো ঋণ খেলাপি যদি মনে করে এককালীন ঋণ পরিশোধ করে খেলাপির তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবেন, তাহলে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে সার্কুলারে।

এতে বলা হয়েছে, ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ঋণ খেলাপিরা ঋণ পরিশোধের জন্য এক বছর পর্যন্ত সময় পাবেন। আগের সব সুদবাবদ পাওনা মওকুফ করা হবে। এককালীন পরিশোধের জন্য সুদহার আরও কম- ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ডের সমান। তবে এক বছরের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে সুবিধা বাতিল হবে।

এই এককালীন এক্সিট সুবিধা ও পুনঃতফসিল সুবিধা কার্যকরের ৯০ দিনের ব্যাংক ও গ্রাহকের মামলা স্থগিত করতে হবে। পরবর্তীতে গ্রাহক কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে সুবিধা বাতিল করে মামলা পুনরায় চালু হবে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

ঋণ খেলাপিদের নিয়মিত করণে বিশেষ প্রণোদনা

আপডেট সময় : ০৯:৪১:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মে ২০১৯

অনলাইন ডেস্কঃ দেশের ঋণখেলাপিদের নিয়মিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। খেলাপিরা মাত্র দুই শতাংশ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে ৯ শতাংশ সুদহারে ঋণ পুনঃতফসিলের জন্য ১০ বছর সময় পাবেন। এক্ষেত্রে প্রথম এক বছর কোনো কিস্তি দিতে হবে না।

বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ সংক্রান্ত এক সার্কুলার জারি করে এই নির্দেশনা দিয়েছে। এর ফলে ঋণ খেলাপিরা গণহারে ছাড়ের সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ছোট, মাঝারি বা বড়-সব ঋণ খেলাপিই পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন। ঋণ খেলাপিদের আগের অনারোপিত সব সুদ মাফ করে দেওয়া হবে।

এর আগে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে ঋণ খেলাপিদের সুবিধা দিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে প্রস্তাব পাঠায় বলে জানা গেছে।

‘ঋণ পুনঃতফসিল ও এককালীন এক্সিট সংক্রান্ত বিশেষ নীতিমালা’ শীর্ষক সার্কুলারের বলা হয়েছে, বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণবহির্ভূত কারণে ব্যবসায়ী/শিল্পোদ্যোক্তারা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ব্যাংকের ঋণ অনেক ক্ষেত্রেই নিয়মিতভাবে পরিশোধিত হচ্ছে না এবং সংশ্লিষ্ট ঋণ বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত হয়ে পড়ায় ঋণ বিতরণ ও আদায় কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।

এ প্রেক্ষিতে উৎপাদনশীল খাতসহ অন্যান্য খাতে স্বাভাবিক ঋণ প্রবাহ বজায় রাখাসহ ব্যাংকিং খাতের বিরূপভাবে শ্রেণিকৃত ঋণ নিয়মিত আদায়ের লক্ষ্যে কতিপয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

এতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরভিত্তিক ঋণ খেলাপিরা সুযোগ পাবেন। ছাড় গ্রহণের জন্য আগামী ৯০ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৬ আগস্টের খেলাপির আবেদন করবেন। ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে আগামী ১০ বছর পর্যন্ত ঋণ পরিশোধের সুযোগ পাবেন। তবে প্রথম এক বছর কোনো টাকা পরিশোধ করতে হবে না। আর পুনঃতফসিলকৃত ঋণের সুদহার হবে সর্বোচ্চ ৯ শতাংশ বা ব্যাংকের কস্ট ফান্ডের সঙ্গে ৩ শতাংশ যোগ করে।

খেলাপি ঋণের সুদ ব্যাংক আয় দেখাতে পারে না। তাই পৃথক হিসেবে রাখতে হয়। পৃথক হিসেবে রাখা সব সুদ মাফ করে দেওয়া হবে। এই সুবিধা গ্রহণকারীরা ব্যাংক থেকে আবার নতুন করে ঋণ নিতে পারবেন। প্রচলিত নিয়ম মেনে সতর্কতার সঙ্গে ঋণ দিতে বলা হয়েছে। নতুন ঋণের কিস্তি পরিশোধ না করলে পুনঃতফসিল সুবিধা বাতিল হবে।

সুবিধা গ্রহণের পর নিয়মিত অর্থ পরিশোধ না করলেও তাদের খেলাপি করা যাবে না। এখানে ছাড় দেওয়া হয়েছে। ৯টি মাসিক কিস্তির ৩টি এবং ত্রৈমাসিক ৩ কিস্তির ১টি পরিশোধ না করলেও নিয়মিত থাকা যাবে। তবে মাসিক কিস্তির মধ্যে ৬টি ও ত্রৈমাসিক কিস্তির ২টি পরিশোধ না করলে পুনঃতফসিল সুবিধা বাতিল করা হবে।

স্বাধীনতার পর থেকে যারা ঋণ খেলাপি তাদের এককালীন এক্সিট সুবিধা দেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তাদের খেলাপি ঋণের হিসাব হবে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের এক কালীন হিসাবায়ন ভিত্তিতে।

অর্থাৎ ১৯৭১ সালের পর থেকে ২০১৮ সালের ৩১ ডিমেম্বর পর্যন্ত যত খেলাপি ঋণ আছে তার হিসাব করা হবে। কোনো ঋণ খেলাপি যদি মনে করে এককালীন ঋণ পরিশোধ করে খেলাপির তালিকা থেকে বেরিয়ে যাবেন, তাহলে সে ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে সার্কুলারে।

এতে বলা হয়েছে, ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্টে ঋণ খেলাপিরা ঋণ পরিশোধের জন্য এক বছর পর্যন্ত সময় পাবেন। আগের সব সুদবাবদ পাওনা মওকুফ করা হবে। এককালীন পরিশোধের জন্য সুদহার আরও কম- ব্যাংকের কস্ট অব ফান্ডের সমান। তবে এক বছরের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করলে সুবিধা বাতিল হবে।

এই এককালীন এক্সিট সুবিধা ও পুনঃতফসিল সুবিধা কার্যকরের ৯০ দিনের ব্যাংক ও গ্রাহকের মামলা স্থগিত করতে হবে। পরবর্তীতে গ্রাহক কোনো শর্ত ভঙ্গ করলে সুবিধা বাতিল করে মামলা পুনরায় চালু হবে।