ঢাকা ১০:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০১ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড: রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরিত অধ্যাদেশে কী বলা হয়েছে।

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১২:৩৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০২০
  • ৭৮৪ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশে সই করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের ফলে সংশোধিত আইনটি এখ্ন থেকেই কার্যকর হিসেবে জারি হল।

ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভের পর সোমবার আইনের সংশোধনীটি অনুমোদন করে বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা। মঙ্লবার (১৩ অক্টোবর) অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেন রাষ্টপতি।

রাষ্ট্রপতির জারি করা নতুন এই অধ্যাদেশে কি রয়েছে?
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধর্ষণ, ধর্ষণ জনিত কারণে মৃত্যু শাস্তি ইত্যাদি প্রসঙ্গে ৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি এতদিন ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

তবে ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু হলে বা দল বেধে ধর্ষণের ঘটনায় নারী বা শিশুর মৃত্যু হলে বা আহত হলে, সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সেই সঙ্গে উভয় ক্ষেত্রেই ন্যূনতম এক লক্ষ টাকা করে অর্থ দণ্ডের বিধানও রয়েছে।

সেই আইনেই পরিবর্তন এনে ধর্ষণ প্রমাণিত হলেই মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবনের বিধান রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে অর্থদণ্ডের বিধানও থাকছে।

প্রথমে ২০০০ সালে জারি করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩৪টি ধারার মধ্যে ১২টি ধারাতেই বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান ছিল।

তবে পরবর্তীতে অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ ও মানব পাচার সংক্রান্ত দুইটি আইনের অংশ আলাদা হয়ে যাওয়ার পর এই আইন থেকে বাদ দেয়া হয়।

ফলে এই আইনের সাতটি ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি বহাল থাকে।

নতুন অধ্যাদেশে ৯(১) ধারাটি সংশোধন করে যাবজ্জীবন অথবা মৃত্যুদণ্ডের বিধান আনা হয়েছে।

আইনের সংশোধিত অংশ:
এর আগে এই ধারায় বলা হয়েছিল যে, যদি কোন পুরুষ নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, এখন আইন সংশোধন করে ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের’ বদলে ‘ মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হয়েছে।

অধ্যাদেশে ৮ নং ধারার ৩২ সংশোধন করে ‘অপরাধের শিকার ব্যক্তির মেডিকেল পরীক্ষা’ শব্দের পরিবর্তে অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং ‘অপরাধের শিকার ব্যক্তির মেডিকেল পরীক্ষা’ প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে যিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তার মেডিকেল পরীক্ষার পাশাপাশি যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারও মেডিকেল পরীক্ষা করাতে হবে।

বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী বলেছেন, ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড করায় এই অপরাধ কমে আসবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

সংসদ চলমান না থাকায় সংশোধিত আইনটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
তথ্যসূত্র: BBC

ট্যাগস :
আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিরোজপুরে বাস অটো মুখোমুখি সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে খোঁজ খবর নেন জামাতে ইসলামির নেতৃবৃন্দ।

ধর্ষণের অপরাধে মৃত্যুদণ্ড: রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরিত অধ্যাদেশে কী বলা হয়েছে।

আপডেট সময় : ১২:৩৮:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অক্টোবর ২০২০

নিউজ ডেস্ক: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন সংশোধন করে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ডের বিধান সংক্রান্ত একটি অধ্যাদেশে সই করেছেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি। রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশের ফলে সংশোধিত আইনটি এখ্ন থেকেই কার্যকর হিসেবে জারি হল।

ধর্ষণ এবং যৌন নিপীড়নের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে প্রতিবাদ এবং বিক্ষোভের পর সোমবার আইনের সংশোধনীটি অনুমোদন করে বাংলাদেশের মন্ত্রিসভা। মঙ্লবার (১৩ অক্টোবর) অধ্যাদেশে স্বাক্ষর করেন রাষ্টপতি।

রাষ্ট্রপতির জারি করা নতুন এই অধ্যাদেশে কি রয়েছে?
২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ধর্ষণ, ধর্ষণ জনিত কারণে মৃত্যু শাস্তি ইত্যাদি প্রসঙ্গে ৯ (১) ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি এতদিন ছিল যাবজ্জীবন কারাদণ্ড।

তবে ধর্ষণের শিকার নারী বা শিশুর মৃত্যু হলে বা দল বেধে ধর্ষণের ঘটনায় নারী বা শিশুর মৃত্যু হলে বা আহত হলে, সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল মৃত্যুদণ্ড অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। সেই সঙ্গে উভয় ক্ষেত্রেই ন্যূনতম এক লক্ষ টাকা করে অর্থ দণ্ডের বিধানও রয়েছে।

সেই আইনেই পরিবর্তন এনে ধর্ষণ প্রমাণিত হলেই মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবনের বিধান রাখা হয়েছে। সেই সঙ্গে অর্থদণ্ডের বিধানও থাকছে।

প্রথমে ২০০০ সালে জারি করা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩৪টি ধারার মধ্যে ১২টি ধারাতেই বিভিন্ন অপরাধের শাস্তি হিসাবে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার বিধান ছিল।

তবে পরবর্তীতে অ্যাসিড নিয়ন্ত্রণ ও মানব পাচার সংক্রান্ত দুইটি আইনের অংশ আলাদা হয়ে যাওয়ার পর এই আইন থেকে বাদ দেয়া হয়।

ফলে এই আইনের সাতটি ধারায় মৃত্যুদণ্ডের বিষয়টি বহাল থাকে।

নতুন অধ্যাদেশে ৯(১) ধারাটি সংশোধন করে যাবজ্জীবন অথবা মৃত্যুদণ্ডের বিধান আনা হয়েছে।

আইনের সংশোধিত অংশ:
এর আগে এই ধারায় বলা হয়েছিল যে, যদি কোন পুরুষ নারী বা শিশুকে ধর্ষণ করে, তাহলে তিনি যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন এবং অতিরিক্ত অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

বাংলাদেশের মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানিয়েছেন, এখন আইন সংশোধন করে ‘যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের’ বদলে ‘ মৃত্যুদণ্ড বা যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড’ শব্দগুলো প্রতিস্থাপিত হয়েছে।

অধ্যাদেশে ৮ নং ধারার ৩২ সংশোধন করে ‘অপরাধের শিকার ব্যক্তির মেডিকেল পরীক্ষা’ শব্দের পরিবর্তে অপরাধে অভিযুক্ত ব্যক্তি এবং ‘অপরাধের শিকার ব্যক্তির মেডিকেল পরীক্ষা’ প্রতিস্থাপিত করা হয়েছে। অর্থাৎ এখন থেকে যিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, তার মেডিকেল পরীক্ষার পাশাপাশি যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারও মেডিকেল পরীক্ষা করাতে হবে।

বাংলাদেশের আইনমন্ত্রী বলেছেন, ধর্ষণের সাজা মৃত্যুদণ্ড করায় এই অপরাধ কমে আসবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

সংসদ চলমান না থাকায় সংশোধিত আইনটি অধ্যাদেশ আকারে জারি করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
তথ্যসূত্র: BBC