অনলাইন ডেস্কঃ
নরসিংদীতে ফুলন রানী বর্মণ (২২) নামে কলেজ ছাত্রীর শরীরে কেরোসিন ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এতে তার শরীরের ২০ ভাগ পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা। গুরুতর অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাতে ৯টায় নরসিংদী পৌর এলাকার বীরপুর মহল্লায় এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধ ফুলন বর্মণ বীরপুর মহল্লার যুগেন্দ্র বর্মণের মেয়ে। ফুলন নরসিংদীর উদয়ন কলেজ থেকে গতবছর এইচএসসি উর্ত্তীণ হয়ে কোথাও ভর্তি হননি।
পুলিশ ও দগ্ধ কলেজ ছাত্রীর পরিবারের সদস্যরা জানায়, রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার মামার সঙ্গে দোকানে কেক আনতে যায়। মামা কেক কিনে দিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়। ফুলন কেক নিয়ে বাড়ির আঙিনায় পৌঁছালে অজ্ঞাত দুইজন তার হাত মুখ চেপে ধরে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। পরে কেরোসিন ঢেলে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায় তারা।
ফুলনের চিৎকার শুনে স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে প্রথমে নরসিংদী সদর হাসপাতাল ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন (বিপিএম) ও সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সৈয়দুজ্জামানসহ পুলিশের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী তপন মল্লিক বলেন, হঠাৎ মেয়ে কণ্ঠের চিৎকার শুনতে পাই। ঘর থেকে বের হয়ে দেখি একটা মেয়ের শরীরে আগুন জ্বলছে, সে চিৎকার করছে। পাশে অন্যান্য নারীরা দেখছে। পরে একটি ভেজা চট নিয়ে তার শরীরে চাপা দিয়ে আগুন নেভানো হয়।
অপর প্রত্যক্ষদর্শী সঞ্জিত বর্মণ বলেন, আগুন লাগানোর পর ফুলন চিৎকার করছিল। ওই সময় তার মাথার সব চুল পুড়ি যায়। এবং শরীরের পেছনের দিকে বেশি পুড়েছে। আগুন নেভানোর পর তাকে সদর হাসপাতালে নিয়ে যাই। পরে সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তারা তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে পাঠিয়ে দেয়।
দগ্ধ ফুলনের কাকাতো ভাই সুমনের শ্যালক সজিব ফুলনকে পছন্দ করতো। গত দুই বছর যাবৎ ফুলনকে প্রেম প্রস্তাব দিয়ে আসছিল। কিন্তু ফুলন এতে রাজি ছিল না। এরই প্রেক্ষিতে এ আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটতে পারে বলে অপর একটি সূত্রে জানা গেছে।
পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন বলেন, মেয়েটি কেক নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে কে বা কারা তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনাস্থল থেকে একটি কেরোসিন বোতল, ম্যাচ বক্স, ওড়না, চুলসহ বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছি। একই সঙ্গে নেপথ্যের কারণ ও জড়িতদের চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে দিয়েছি। যারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত দ্রুতই তাদের আইনের আওতায় আনা হবে। সেজন্য তিনি তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহায়তা করার জন্য এলাকাবাসীকে অনুরোধ জানান।