ঢাকা ০৩:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৯ জুলাই ২০২৫, ২৫ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঢাকার ৯৪% রিক্সাওয়ালা অসুস্থ থাকেন

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১১:৫৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০১৯
  • ১৮৯৭ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা শহরে কত সংখ্যক রিকশা চলে আর এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কত মানুষের জীবিকা- এসব বিষয় নিয়ে প্রথমবারের মতো ব্যাপক পরিসরে গবেষণা করেছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার রাইটস বা বিলস নামে একটি শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠান।

প্রতিবেদনটি নিয়ে বিলসের গবেষণা পরিচালক কোহিনূর বলেন, রিকশাগুলো সাধারণত বিভিন্ন সংস্থার অধীনে নিবন্ধন পেয়ে থাকে। অনেক সময় একই রেজিস্ট্রেশনে একাধিক রিকশা দেখা যায়। যার কারণে রেজিস্ট্রেশন দেখে রিকশার প্রকৃত সংখ্যা বের করা খুব কঠিন। তবে ইউনিয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, গ্যারেজ মালিক, সিটি কর্পোরেশন সবার সঙ্গে কথা বলে ধারণা পাওয়া যায় যে, ঢাকা ও এর আশপাশে প্রায় ১১ লাখ রিকশা চলছে। জরিপে দেখা গেছে, ঢাকায় বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রিকশা চলছে, এর সঙ্গে জড়িত প্রায় ২৭ লাখ মানুষের জীবিকা।

ঢাকার এসব রিকশার ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত ২৭ লাখ মানুষের জীবিকা নির্ভর করে বলে গবেষণায় জানা যায়। একটি রিকশা সাধারণত দুই শিফটে চালানো হয়। একজন হয়তো সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চালান, আরেকজন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে রিকশার সংখ্যা যদি ১১ লাখ ধরা হয়, তাহলে রিকশাচালকের সংখ্যা দাঁড়ায় ২২ লাখে। সেই সঙ্গে রিকশা মেরামত, যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী, গ্যারেজ ব্যবসায়ী সব মিলিয়ে আরও কয়েক লাখ মানুষের জীবিকা এর সঙ্গে যুক্ত।

ঢাকার অন্যান্য শ্রমিকের তুলনায় রিকশা চালকের আয় ভালো বলে মনে করেন কোহিনূর। জরিপে দেখা গেছে, একজন শ্রমিক যদি প্রতি দিন রিকশা চালান তাহলে মাসে ২৪+ হাজার থেকে সর্বনিু ১৩+ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। গবেষণায় উঠে এসেছে, রিকশা চালকদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ অন্য কোনো পেশায় সুযোগ পেলেও রিকশা চালানো ছাড়তে চান না।

এদিকে রোজগার আগের চেয়ে বাড়লেও রিকশা চালকদের জীবনমানের কোনো উন্নতি হয়নি। বিশেষ করে তাদের বিশ্রাম, খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও টয়লেটের সংকটে ভুগতে হয়। এছাড়া একজন রিকশা চালকের পক্ষে প্রতিদিন রিকশা চালানোও সম্ভব হয় না। এ কাজটি খুবই শ্রমসাধ্য এবং রোদ-বৃষ্টিতে পুড়ে তাদের রিকশা চালাতে হয়। যার একটা বড় ধরনের প্রভাব তাদের স্বাস্থ্যের ওপর পড়ে বলে জানান কোহিনূর।

ঢাকার ৯৪ শতাংশ রিকশা চালকই অসুস্থ থাকেন। বিশেষ করে জ্বর-কাশি, ঠাণ্ডা, গায়ে ব্যথা, দুর্বলতা লেগেই থাকে। সেই সঙ্গে ৩০ শতাংশ জন্ডিসে আক্রান্ত বলে জরিপে উঠে এসেছে। এর কারণ, রাস্তাঘাটে সুপেয় পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। টাকা বাঁচাতে রিকশা চালকরা পাবলিক টয়লেটে না গিয়ে ড্রেনে বা গাছপালার আড়ালে টয়লেটের কাজ সারেন। এছাড়া বেশিরভাগ রিকশাওয়ালা তাদের দিনের খাওয়া সারেন বিভিন্ন টং দোকানে রুটি, কেক ও চা খেয়ে। এই সকল কারনে ও অপুষ্টিজনিত কারনে অসুস্থতার আধিখ্য দেখা যায়।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিরোজপুরে বাস অটো মুখোমুখি সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে খোঁজ খবর নেন জামাতে ইসলামির নেতৃবৃন্দ।

ঢাকার ৯৪% রিক্সাওয়ালা অসুস্থ থাকেন

আপডেট সময় : ১১:৫৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

ঢাকা শহরে কত সংখ্যক রিকশা চলে আর এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কত মানুষের জীবিকা- এসব বিষয় নিয়ে প্রথমবারের মতো ব্যাপক পরিসরে গবেষণা করেছে বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব লেবার রাইটস বা বিলস নামে একটি শ্রমিক অধিকার প্রতিষ্ঠান।

প্রতিবেদনটি নিয়ে বিলসের গবেষণা পরিচালক কোহিনূর বলেন, রিকশাগুলো সাধারণত বিভিন্ন সংস্থার অধীনে নিবন্ধন পেয়ে থাকে। অনেক সময় একই রেজিস্ট্রেশনে একাধিক রিকশা দেখা যায়। যার কারণে রেজিস্ট্রেশন দেখে রিকশার প্রকৃত সংখ্যা বের করা খুব কঠিন। তবে ইউনিয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, গ্যারেজ মালিক, সিটি কর্পোরেশন সবার সঙ্গে কথা বলে ধারণা পাওয়া যায় যে, ঢাকা ও এর আশপাশে প্রায় ১১ লাখ রিকশা চলছে। জরিপে দেখা গেছে, ঢাকায় বর্তমানে প্রায় ১১ লাখ রিকশা চলছে, এর সঙ্গে জড়িত প্রায় ২৭ লাখ মানুষের জীবিকা।

ঢাকার এসব রিকশার ওপর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অন্তত ২৭ লাখ মানুষের জীবিকা নির্ভর করে বলে গবেষণায় জানা যায়। একটি রিকশা সাধারণত দুই শিফটে চালানো হয়। একজন হয়তো সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত চালান, আরেকজন দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত। সেক্ষেত্রে রিকশার সংখ্যা যদি ১১ লাখ ধরা হয়, তাহলে রিকশাচালকের সংখ্যা দাঁড়ায় ২২ লাখে। সেই সঙ্গে রিকশা মেরামত, যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ী, গ্যারেজ ব্যবসায়ী সব মিলিয়ে আরও কয়েক লাখ মানুষের জীবিকা এর সঙ্গে যুক্ত।

ঢাকার অন্যান্য শ্রমিকের তুলনায় রিকশা চালকের আয় ভালো বলে মনে করেন কোহিনূর। জরিপে দেখা গেছে, একজন শ্রমিক যদি প্রতি দিন রিকশা চালান তাহলে মাসে ২৪+ হাজার থেকে সর্বনিু ১৩+ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারেন। গবেষণায় উঠে এসেছে, রিকশা চালকদের মধ্যে ৮৫ শতাংশ অন্য কোনো পেশায় সুযোগ পেলেও রিকশা চালানো ছাড়তে চান না।

এদিকে রোজগার আগের চেয়ে বাড়লেও রিকশা চালকদের জীবনমানের কোনো উন্নতি হয়নি। বিশেষ করে তাদের বিশ্রাম, খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও টয়লেটের সংকটে ভুগতে হয়। এছাড়া একজন রিকশা চালকের পক্ষে প্রতিদিন রিকশা চালানোও সম্ভব হয় না। এ কাজটি খুবই শ্রমসাধ্য এবং রোদ-বৃষ্টিতে পুড়ে তাদের রিকশা চালাতে হয়। যার একটা বড় ধরনের প্রভাব তাদের স্বাস্থ্যের ওপর পড়ে বলে জানান কোহিনূর।

ঢাকার ৯৪ শতাংশ রিকশা চালকই অসুস্থ থাকেন। বিশেষ করে জ্বর-কাশি, ঠাণ্ডা, গায়ে ব্যথা, দুর্বলতা লেগেই থাকে। সেই সঙ্গে ৩০ শতাংশ জন্ডিসে আক্রান্ত বলে জরিপে উঠে এসেছে। এর কারণ, রাস্তাঘাটে সুপেয় পানির কোনো ব্যবস্থা নেই। টাকা বাঁচাতে রিকশা চালকরা পাবলিক টয়লেটে না গিয়ে ড্রেনে বা গাছপালার আড়ালে টয়লেটের কাজ সারেন। এছাড়া বেশিরভাগ রিকশাওয়ালা তাদের দিনের খাওয়া সারেন বিভিন্ন টং দোকানে রুটি, কেক ও চা খেয়ে। এই সকল কারনে ও অপুষ্টিজনিত কারনে অসুস্থতার আধিখ্য দেখা যায়।