অনলাইন ডেস্কঃ
বেঁচে আছে কিশোর ভ্যান চালক শাহীন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আশংকাজনক অবস্থায় রয়েছে শাহীন (১৪)। ২৯ জুন, শনিবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে শাহীনকে অপারেশন থিয়েটারে নেন চিকিৎসকরা। ঢামেক হাসপাতালের নিউরো সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. অসিত চন্দ্র সরকার জানান, ‘‘তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে এখনো বলা যাচ্ছে না। কারণ তার মাথার হাড় ভেঙে ভেতরে ঢুকে গিয়েছিল। আমরা অস্ত্রোপচার করেছি। তার চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছি, নিবিড় পর্জবেক্ষণে রাখা হয়েছে।’’ এ বিষয়ে বিস্তারিত পড়ে জানানো হবে বলেও জানান ড. অসিত চন্দ্র সরকার ।
শাহীনের চিকিৎসাতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সার্বক্ষণিক খোঁজ-খবর রাখছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী বিপ্লব বড়ুয়া এবং ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন। অন্যান্য নেতৃবৃন্দও সার্বক্ষণিক খোঁজ নিচ্ছেন এবং সব রকম সহযোগিতা করে যাচ্ছেন । প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তাঁর ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি আশরাফুল আলম খোকন, শাহীনের স্বজনের হাতে নগদ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে যান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শাহীনের চিকিৎসা ব্যয়ের পুরো দায়িত্ব নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
গত ২৮ জুন, শুক্রবার দুপুরে যশোরের কেশবপুর উপজেলার মঙ্গলকোট গ্রামের হায়দার আলী মোড়লের ছেলে কর্মজীবী কিশোর শাহীনের ভ্যান যাত্রীবেশে ভাড়া নেয় ভদ্রবেশী দুর্বৃত্তরা। এরপর সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার ধানদিয়ায় নিয়ে রাস্তার দু’পাশের পাট ক্ষেতের নির্জন স্থানে শাহীনের মাথায় আঘাত করে তার শেষ সম্বল ভ্যান গাড়িটি নিয়ে পালিয়ে যায় তারা। শাহীন ওখানেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে থাকে। জ্ঞান ফিরলে সে কান্নাকাটি করতে থাকে, তার কান্নার শব্দে স্থানীয়রা গিয়ে শাহীন দেখে থানায় খবর দেয়। পুলিশ শাহীনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে। পাটকেলঘাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রেজাউল হোসেন জানান, খবর পেয়ে শাহীনকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনার ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
স্থানীয়সূত্রে জানা গেছে, শাহীনের বাবা হায়দার আলী খুবই গরিব মানুষ। বসতভিটা ছাড়া তাদের কোনো জমিজমা নেই। সম্প্রতি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ব্যাটারি চালিত ভ্যানটি কিনে ভাড়ায় চালিয়ে সংসার চালাতো শাহীন। ওই রোজগারের টাকায় তাদের সংসার খরচ ছাড়াও ঋণের কিস্তি ও শাহীনের বড় বোনের পড়ালেখা চলতো। অভাবের সংসার ও পারিবারিক অবস্থানের কারণে বেশ কয়েকমাস আগে পড়াশোনা ছেড়ে ভ্যান চালানো শুরু করে শাহীন। একটি ভ্যান হওয়ায় বাবা-ছেলে দু’জনে শিফট মেনে ভাড়া চালাতো তারা।