ঢাকা ০৩:৩৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রেনে ধূমপানে বাধা দেওয়ায় চিকিৎসককে পা ধরান ম্যাজিস্ট্রেট!

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১১:৫৫:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০১৯
  • ৩৬৫ বার পড়া হয়েছে


ট্রেনে ধূমপানে বাধা দেওয়া চিকিৎসককে পা ধরান ম্যাজিস্ট্রেট

চলন্ত ট্রেনে ধূমপানে বাধা দেয়ায় এক চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের ওই ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ম্যাজিস্ট্রেটের বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ডাক্তাররা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ শহরের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ক্যাম্পাসে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, জেলা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও জেনারেল হাসপাতাল এ কর্মসূচি পালন করে।

প্রসঙ্গত, ২১ জুন কিশোরগঞ্জ থেকে জয়ন্তিকা ট্রেনে করে সিলেট যাচ্ছিলেন ডা. রাফিউল সিরাজ। এ সময় সহকারী ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিৎ কুমার চন্দ ট্রেনের ভেতর ধূমপান করলে প্রতিবাদ করেন সিরাজ। পরের স্টেশনে ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ডেকে ট্রেন থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে ডা. সিরাজকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থ নেয়া হয়নি।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডা. রফিউল সিরাজ বলেন, ২১ জুন বিকেল ৫টায় মনতলা স্টেশনে ট্রেন থামতেই জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে ট্রেনে ওঠে ফুঁকতে থাকেন এক ব্যক্তি। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সিগারেটের ধোঁয়া অসহনীয় লাগছিল। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে ধূমপান না করার জন্য তাকে অনুরোধ করলাম। তিনি তো কথা শুনলেনই না বরং উদ্যত হয়ে আমাদের বললেন, ‘তোদের বাড়ি কই, আমারে চিনস? দাঁড়া সামনের স্টেশনে তোদের সব কয়ডারে বানামু।ডা. রফিউল সিরাজ আরও বলেন, তারপর যা হলো তার সঙ্গে সেই দৃশ্যগুলো এখনও ভুলতে পারছি না। ট্রেন শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশনে থামলে হঠাৎ ওই লোকটার ডাকে ২০-২৫ জন ট্রেনে উঠে আমাদের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে মারধর করে। এ সময় আমার কামরার অনেকেই পালিয়ে যায়। আমার সঙ্গে যারা ছিল তাদের ওই ম্যাজিস্ট্রেটের পায়ে ধরায়। আমি তার পা ধরতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নিজেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতিষ্ঠানের একজন ডাক্তার বলে পরিচয় দেয়ার পরও ওই ম্যাজিস্ট্রেট তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলতে লাগলেন, কিসের মহামান্য? ওইখানে টুটুল নামে পুলিশের এক এসআই আমাকে জেলে ঢোকানো এবং ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেয়। সেই সঙ্গে আমাকে পা ধরতে বাধ্য করেন ম্যাজিস্ট্রেট।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান, জেলা বিএমএর সভাপতি ডা. মাহবুব ইকবাল, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপতাালের অধ্যক্ষ ডা. সজল কুমার সাহা, কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মিয়া মো. ফেরদৌস, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আজিজুল হক, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপতালের অধ্যক্ষ ডা. আ ন ম নওশাদ খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মো. আসাদ উল্লাহ, জেলা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল ওয়াহাব বাদল ও জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ।



প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ডা. রাফিউল সিরাজকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সহকারী ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিৎ কুমার চন্দের বিচার করতে হবে। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই আমরা। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হবে।


ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

ট্রেনে ধূমপানে বাধা দেওয়ায় চিকিৎসককে পা ধরান ম্যাজিস্ট্রেট!

আপডেট সময় : ১১:৫৫:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৪ জুলাই ২০১৯


ট্রেনে ধূমপানে বাধা দেওয়া চিকিৎসককে পা ধরান ম্যাজিস্ট্রেট

চলন্ত ট্রেনে ধূমপানে বাধা দেয়ায় এক চিকিৎসককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে। রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের ওই ডাক্তারকে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদে ম্যাজিস্ট্রেটের বিচার দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন ডাক্তাররা।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ শহরের ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল ক্যাম্পাসে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ, জেলা মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) ও জেনারেল হাসপাতাল এ কর্মসূচি পালন করে।

প্রসঙ্গত, ২১ জুন কিশোরগঞ্জ থেকে জয়ন্তিকা ট্রেনে করে সিলেট যাচ্ছিলেন ডা. রাফিউল সিরাজ। এ সময় সহকারী ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিৎ কুমার চন্দ ট্রেনের ভেতর ধূমপান করলে প্রতিবাদ করেন সিরাজ। পরের স্টেশনে ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ডেকে ট্রেন থেকে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে ডা. সিরাজকে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় জেলা প্রশাসকের কাছে অভিযোগ করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থ নেয়া হয়নি।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডা. রফিউল সিরাজ বলেন, ২১ জুন বিকেল ৫টায় মনতলা স্টেশনে ট্রেন থামতেই জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে ট্রেনে ওঠে ফুঁকতে থাকেন এক ব্যক্তি। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে সিগারেটের ধোঁয়া অসহনীয় লাগছিল। একপর্যায়ে বিরক্ত হয়ে ধূমপান না করার জন্য তাকে অনুরোধ করলাম। তিনি তো কথা শুনলেনই না বরং উদ্যত হয়ে আমাদের বললেন, ‘তোদের বাড়ি কই, আমারে চিনস? দাঁড়া সামনের স্টেশনে তোদের সব কয়ডারে বানামু।ডা. রফিউল সিরাজ আরও বলেন, তারপর যা হলো তার সঙ্গে সেই দৃশ্যগুলো এখনও ভুলতে পারছি না। ট্রেন শায়েস্তাগঞ্জ স্টেশনে থামলে হঠাৎ ওই লোকটার ডাকে ২০-২৫ জন ট্রেনে উঠে আমাদের কলার ধরে টেনেহিঁচড়ে নামিয়ে মারধর করে। এ সময় আমার কামরার অনেকেই পালিয়ে যায়। আমার সঙ্গে যারা ছিল তাদের ওই ম্যাজিস্ট্রেটের পায়ে ধরায়। আমি তার পা ধরতে রাজি না হওয়ায় আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। নিজেকে মহামান্য রাষ্ট্রপতির প্রতিষ্ঠানের একজন ডাক্তার বলে পরিচয় দেয়ার পরও ওই ম্যাজিস্ট্রেট তাচ্ছিল্যের সঙ্গে বলতে লাগলেন, কিসের মহামান্য? ওইখানে টুটুল নামে পুলিশের এক এসআই আমাকে জেলে ঢোকানো এবং ক্রসফায়ারে হত্যার হুমকি দেয়। সেই সঙ্গে আমাকে পা ধরতে বাধ্য করেন ম্যাজিস্ট্রেট।

প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, কিশোরগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. মো. হাবিবুর রহমান, জেলা বিএমএর সভাপতি ডা. মাহবুব ইকবাল, শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপতাালের অধ্যক্ষ ডা. সজল কুমার সাহা, কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের উপ-পরিচালক ডা. সুলতানা রাজিয়া, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মিয়া মো. ফেরদৌস, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আজিজুল হক, রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপতালের অধ্যক্ষ ডা. আ ন ম নওশাদ খান, জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার মো. আসাদ উল্লাহ, জেলা বিএমএর সাধারণ সম্পাদক ডা. আব্দুল ওয়াহাব বাদল ও জেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বাচ্চু প্রমুখ।



প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ডা. রাফিউল সিরাজকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় জড়িত মৌলভীবাজার সদর উপজেলার সহকারী ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সুনজিৎ কুমার চন্দের বিচার করতে হবে। অবিলম্বে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানাই আমরা। অন্যথায় আরও কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি দেয়া হবে।