ঢাকা ০৮:১৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বরগুনায় রিফাত হত্যার নতুন ভিডিও ফুটেজ: ‘মূল ভূমিকায় রিফাত ফরাজি’

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১০:০০:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০১৯
  • ২৯৫ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক: বরগুনায় প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনার আরেকটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যার মূল ভূমিকায় ছিল মামলার দ্বিতীয় আসামী রিফাত ফরাজি। উদ্ধারকৃত সিসিটিভির ফুটেজে পুরো ঘটনার তথ্য মিলেছে।

সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গত ২৬ জুন বুধবার সকাল থেকেই বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নানা পরিকল্পনা করতে থাকে ‘বন্ড ০০৭’ গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা। হঠাৎ কলেজ থেকে তারা জোর করে রিফাত শরীফকে বের করে নিয়ে যায়। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ওইদিন সরাসরি ১৫ থেকে ২০ জন জড়িত ছিল। তবে কিলিং মিশনে মূল ভূমিকা পালন করে দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজি। ‘বন্ড ০০৭’ গ্রুপের সদস্যরা মাত্র ২ মিনিটের মধ্যেই তাদের মিশন শেষ করে চলে যায়। রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পরিকল্পনাকারী নয়ন বন্ড হলেও কিলিং মিশনে মূল ভূমিকা পালন করে হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজি।

ঘটনার দিন সকাল ১০টায় রিফাত শরীফ তার স্ত্রী আয়শা আক্তার মিন্নিকে নিতে সাদা একটি মোটরসাইকেলে করে কলেজে আসে। সকাল ১০টা ৩ মিনিটে ‘বন্ড ০০৭’ গ্রুপের প্রধান ঘাতক রিফাত ফরাজি ছয় থেকে সাত জনকে নিয়ে কলেজ গেটের বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। ২ থেকে ৩ মিনিট পরে আরো দুই থেকে তিন জনকে কলেজে পাঠায় সে। সকাল ১০ টা ৯ মিনিটে দুই থেকে তিন জনসহ আরো কয়েকজনকে নিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে রাস্তার উল্টো পাশে অবস্থান নেয়। ১ মিনিট পরে ঘাতক রিফাত ফরাজি গেটের কাছে এসে আরো দুটি ছেলেকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে উল্টো দিকে পাঠায়। সকাল ১০ টা ১২ মিনিটে কলেজ থেকে বেরিয়ে রিফাত গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করে। সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে ঘাতক রিফাত ফরাজি নিহত রিফাত শরীফকে বরগুনা সরকারী কলেজের গেটে এসে ‘বন্ড ০০৭’ গ্রুপের সদস্যদের সহায়তায় জোর করে নয়ন বন্ডের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে সবাই তাকে কিল ঘুষি মারতে থাকলেও রিফাত ফরাজি ও একজন দৌড়ে গিয়ে তিনটি রামদা নিয়ে আসে। রিফাত ফরাজির দুই হাতে থাকা দুটি দায়ের একটি নয়নকে দেয় ও আরেকটি দিয়ে নিজেই কোপাতে শুরু করে।
এদিকে পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, ৬ জন এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। হত্যায় যুক্ত ছিলো অন্তত ২০ জন। বন্দুক যুদ্ধে নিহত নয়নের গড়ে তোলা ফেসবুক গ্রুপ ‘বন্ড ০০৭’ এ বার্তা পেয়ে গ্রুপের বেশির ভাগ সদস্যরা হত্যার ঘটনাস্থলে এসেছিলো বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে গ্রেফতারকৃতরা।
এছাড়া তানভীর, অলিউল্লাহসহ অন্যরা তাদের জবানবন্দিতে বলেছে, হামলার সময় ‘বন্ড ০০৭’ গ্রুপের অন্তত ২০ জন ছোট দলে ভাগ হয়ে কিলিং মিশনে অংশ নেয়। ঘটনার সময় পথচারী বা রিফাত শরীফের দলের কেউ যেন এগিয়ে আসতে না পারে, তা সামলানোর দায়িত্ব ছিল একটি দলের। অন্য আরেকটি দল নয়ন বন্ড, রিফাত-রিশান ফরাজীসহ অন্য হামলাকারীদের মোটরসাইকেলগুলো পাহারা দেয়, যাতে করে হামলার পরে সবাই নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পারে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

রক্ত ঝরিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আসিফদের থামাতে পারে নাই: হাসনাত

বরগুনায় রিফাত হত্যার নতুন ভিডিও ফুটেজ: ‘মূল ভূমিকায় রিফাত ফরাজি’

আপডেট সময় : ১০:০০:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ জুলাই ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক: বরগুনায় প্রকাশ্যে নৃশংসভাবে স্ত্রীর সামনে রিফাত শরীফ হত্যার ঘটনার আরেকটি সিসিটিভি ফুটেজ উদ্ধার করা হয়েছে। সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, হত্যার মূল ভূমিকায় ছিল মামলার দ্বিতীয় আসামী রিফাত ফরাজি। উদ্ধারকৃত সিসিটিভির ফুটেজে পুরো ঘটনার তথ্য মিলেছে।

সিসিটিভির ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, গত ২৬ জুন বুধবার সকাল থেকেই বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে নানা পরিকল্পনা করতে থাকে ‘বন্ড ০০৭’ গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা। হঠাৎ কলেজ থেকে তারা জোর করে রিফাত শরীফকে বের করে নিয়ে যায়। হত্যাকান্ডের ঘটনায় ওইদিন সরাসরি ১৫ থেকে ২০ জন জড়িত ছিল। তবে কিলিং মিশনে মূল ভূমিকা পালন করে দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজি। ‘বন্ড ০০৭’ গ্রুপের সদস্যরা মাত্র ২ মিনিটের মধ্যেই তাদের মিশন শেষ করে চলে যায়। রিফাত শরীফকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনার পরিকল্পনাকারী নয়ন বন্ড হলেও কিলিং মিশনে মূল ভূমিকা পালন করে হত্যা মামলার দুই নম্বর আসামি রিফাত ফরাজি।

ঘটনার দিন সকাল ১০টায় রিফাত শরীফ তার স্ত্রী আয়শা আক্তার মিন্নিকে নিতে সাদা একটি মোটরসাইকেলে করে কলেজে আসে। সকাল ১০টা ৩ মিনিটে ‘বন্ড ০০৭’ গ্রুপের প্রধান ঘাতক রিফাত ফরাজি ছয় থেকে সাত জনকে নিয়ে কলেজ গেটের বাইরে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে। ২ থেকে ৩ মিনিট পরে আরো দুই থেকে তিন জনকে কলেজে পাঠায় সে। সকাল ১০ টা ৯ মিনিটে দুই থেকে তিন জনসহ আরো কয়েকজনকে নিয়ে কলেজ থেকে বেরিয়ে রাস্তার উল্টো পাশে অবস্থান নেয়। ১ মিনিট পরে ঘাতক রিফাত ফরাজি গেটের কাছে এসে আরো দুটি ছেলেকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে উল্টো দিকে পাঠায়। সকাল ১০ টা ১২ মিনিটে কলেজ থেকে বেরিয়ে রিফাত গাড়িতে ওঠার চেষ্টা করে। সকাল ১০টা ১৩ মিনিটে ঘাতক রিফাত ফরাজি নিহত রিফাত শরীফকে বরগুনা সরকারী কলেজের গেটে এসে ‘বন্ড ০০৭’ গ্রুপের সদস্যদের সহায়তায় জোর করে নয়ন বন্ডের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে সবাই তাকে কিল ঘুষি মারতে থাকলেও রিফাত ফরাজি ও একজন দৌড়ে গিয়ে তিনটি রামদা নিয়ে আসে। রিফাত ফরাজির দুই হাতে থাকা দুটি দায়ের একটি নয়নকে দেয় ও আরেকটি দিয়ে নিজেই কোপাতে শুরু করে।
এদিকে পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, ৬ জন এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। হত্যায় যুক্ত ছিলো অন্তত ২০ জন। বন্দুক যুদ্ধে নিহত নয়নের গড়ে তোলা ফেসবুক গ্রুপ ‘বন্ড ০০৭’ এ বার্তা পেয়ে গ্রুপের বেশির ভাগ সদস্যরা হত্যার ঘটনাস্থলে এসেছিলো বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছে গ্রেফতারকৃতরা।
এছাড়া তানভীর, অলিউল্লাহসহ অন্যরা তাদের জবানবন্দিতে বলেছে, হামলার সময় ‘বন্ড ০০৭’ গ্রুপের অন্তত ২০ জন ছোট দলে ভাগ হয়ে কিলিং মিশনে অংশ নেয়। ঘটনার সময় পথচারী বা রিফাত শরীফের দলের কেউ যেন এগিয়ে আসতে না পারে, তা সামলানোর দায়িত্ব ছিল একটি দলের। অন্য আরেকটি দল নয়ন বন্ড, রিফাত-রিশান ফরাজীসহ অন্য হামলাকারীদের মোটরসাইকেলগুলো পাহারা দেয়, যাতে করে হামলার পরে সবাই নির্বিঘ্নে পালিয়ে যেতে পারে।