ঢাকা ০৮:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বন্যায়ও কিস্তির টাকার মাপ নাই

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১২:৩৭:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০১৯
  • ৩৫৮ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক: কুড়িগ্রামের বন্যা কবলিত এলাকায় বানভাসিদের কাছ থেকে জোরপূর্বক কিস্তি আদায় করছে এনজিওগুলো। প্রশাসন থেকে দুর্যোগকালীন সময়ে ঋণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হলেও তারা তা মানছে না। উল্টো মাঠকর্মীরা বলছেন তারা সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশ পালন করছেন।
বুধবার সরেজমিনে ভেরভেরী বাঁধে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের উত্তর দিকে বইছে প্রমত্তা ধরলা নদী। নদী সংলগ্ন বাড়িগুলোতে কোমর সমান পানি। লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন মাঠকর্মী সাপ্তাহিক কিস্তি তুলছেন। লোকজন টাকা পরে দেয়ার কথা বললেও মাঠকর্মী নাছোড়বান্দা, কিস্তি না নিয়ে যাবেন না তিনি।
সেখানেই কথা হয় আর্জিনা নামে এক নারীর সঙ্গে। তিনি জানান, তাদের ২৪ জনের একটি গ্রুপ আছে। নাম ‘ময়না’। এদের অনেকেই পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। কাজকর্ম না থাকায় টাকা দিতে পারছেন না কেউই। কিন্তু মাঠকর্মী সেসব কথা শুনছেন না।
গ্রামের ইদ্রিসের স্ত্রী জোসনা জানান, স্বামী কুমিল্লায় রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ করতে গেছে। তারও কামাই নেই। শেষে ধার করে বিকাশে ৫শ টাকা পাঠিয়েছে। সেই টাকা দিয়েছেন তিনি।
চায়ের দোকানদার এলাহী বক্স জানান, বন্যার কারণে দোকানে বিক্রি নাই। কিন্ত এরা তো মানুষের সুখ-দুঃখ বোঝে না। টাকা যেখান থেকে পারো আনতে বলে।
এত কিছুর মধ্যেই নির্বিকারভাবে টাকা তুলছিলেন বেসরকারি ‘আশা এনজিও’র সিনিয়র লোন অফিসার বনি আমিন। তাকে বন্যাকালীন সময়ে কিস্তি না তোলার ব্যাপারে বললে তিনি বলেন, ‘অফিসের আদেশে এসেছি। কোনো চাপ দেয়া হচ্ছে না। আপনারা আমাদের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেন। আমি তার নির্দেশে এসেছি।’
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান জানান, এখানে বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদেরকে বন্যাকালীন সময়ে কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তারা যদি মানুষের দুর্ভোগের মধ্যে এমন কাজ করে তাহলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রামে ব্র্যাক, আশা, টিএমএসএস, এসকেএস ফাউন্ডেশন, আরডিআরএস, ট্রিপলএস, সলিডারিটিসহ বেশ কয়েকটি এনজিও ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

রক্ত ঝরিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আসিফদের থামাতে পারে নাই: হাসনাত

বন্যায়ও কিস্তির টাকার মাপ নাই

আপডেট সময় : ১২:৩৭:২৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জুলাই ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক: কুড়িগ্রামের বন্যা কবলিত এলাকায় বানভাসিদের কাছ থেকে জোরপূর্বক কিস্তি আদায় করছে এনজিওগুলো। প্রশাসন থেকে দুর্যোগকালীন সময়ে ঋণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হলেও তারা তা মানছে না। উল্টো মাঠকর্মীরা বলছেন তারা সিনিয়র অফিসারদের নির্দেশ পালন করছেন।
বুধবার সরেজমিনে ভেরভেরী বাঁধে গিয়ে দেখা যায়, বাঁধের উত্তর দিকে বইছে প্রমত্তা ধরলা নদী। নদী সংলগ্ন বাড়িগুলোতে কোমর সমান পানি। লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। সেখানে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন মাঠকর্মী সাপ্তাহিক কিস্তি তুলছেন। লোকজন টাকা পরে দেয়ার কথা বললেও মাঠকর্মী নাছোড়বান্দা, কিস্তি না নিয়ে যাবেন না তিনি।
সেখানেই কথা হয় আর্জিনা নামে এক নারীর সঙ্গে। তিনি জানান, তাদের ২৪ জনের একটি গ্রুপ আছে। নাম ‘ময়না’। এদের অনেকেই পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছেন। কাজকর্ম না থাকায় টাকা দিতে পারছেন না কেউই। কিন্তু মাঠকর্মী সেসব কথা শুনছেন না।
গ্রামের ইদ্রিসের স্ত্রী জোসনা জানান, স্বামী কুমিল্লায় রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ করতে গেছে। তারও কামাই নেই। শেষে ধার করে বিকাশে ৫শ টাকা পাঠিয়েছে। সেই টাকা দিয়েছেন তিনি।
চায়ের দোকানদার এলাহী বক্স জানান, বন্যার কারণে দোকানে বিক্রি নাই। কিন্ত এরা তো মানুষের সুখ-দুঃখ বোঝে না। টাকা যেখান থেকে পারো আনতে বলে।
এত কিছুর মধ্যেই নির্বিকারভাবে টাকা তুলছিলেন বেসরকারি ‘আশা এনজিও’র সিনিয়র লোন অফিসার বনি আমিন। তাকে বন্যাকালীন সময়ে কিস্তি না তোলার ব্যাপারে বললে তিনি বলেন, ‘অফিসের আদেশে এসেছি। কোনো চাপ দেয়া হচ্ছে না। আপনারা আমাদের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেন। আমি তার নির্দেশে এসেছি।’
এ ব্যাপারে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান জানান, এখানে বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদেরকে বন্যাকালীন সময়ে কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তারা যদি মানুষের দুর্ভোগের মধ্যে এমন কাজ করে তাহলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুড়িগ্রামে ব্র্যাক, আশা, টিএমএসএস, এসকেএস ফাউন্ডেশন, আরডিআরএস, ট্রিপলএস, সলিডারিটিসহ বেশ কয়েকটি এনজিও ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।