ঢাকা ১০:২১ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ধর্ষণ মামলার বিচার বিষয়ে হাইকোর্টের ৬ নির্দেশনা

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০১:১১:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০১৯
  • ২৫৯ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শেষ করা, শুনানি শুরু হলে প্রতি কার্যদিবসে টানা মামলা পরিচালনা করা, মামলায় সাক্ষীর উপস্থিতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিষয়ে ছয় দফা নির্দেশনাসহ অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে এ আদেশ দেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা পৃথক তিনটি মামলায় আসামিদের জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশনা ছয়টি হলো-
১. দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আইনে নির্ধারিত সময়সীমার (বিচারের জন্য মামলা পাওয়ার দিন থেকে ১৮০ দিন) মধ্যে যাতে দ্রুত বিচারকাজ সম্পন্ন করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সব ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।
২. ট্রাইব্যুনালগুলোকে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০ ধারার বিধান অনুসারে মামলার শুনানি শুরু হলে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে একটানা মামলা পরিচালনা করতে হবে।
৩. ধার্য তারিখে সাক্ষীর উপস্থিতি ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতি জেলায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন), সিভিল সার্জনের একজন প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটরের সমন্বয়ে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করতে হবে। পাবলিক প্রসিকিউটর কমিটির সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকবেন এবং কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে প্রতি মাসে সুপ্রিম কোর্ট স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাবেন। যে সব জেলায় একাধিক ট্রাইব্যুনাল রয়েছে সেসব জেলায় সব ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটররা মনিটরিং কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন। তাদের মধ্যে যিনি জ্যেষ্ঠ তিনি সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন।
৪. ধার্য তারিখে রাষ্ট্রপক্ষ সংগত কারণ ছাড়া সাক্ষীকে আদালতে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হলে মনিটরিং কমিটিকে জবাবদিহি করতে হবে।
৫. মনিটরিং কমিটি সাক্ষীদের ওপর দ্রুত সময়ে যাতে সমন জারি করা যায় সে বিষয়টিও তদারকি করবেন।
৬. ধার্য তারিখে সমন পাওয়ার পর অফিশিয়াল সাক্ষী যেমন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, ডাক্তার বা অন্যান্য বিশেষজ্ঞ সন্তোষজনক কারণ ছাড়া সাক্ষ্য প্রদানে উপস্থিত না হলে ট্রাইব্যুনাল ওই সাক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ এবং প্রয়োজনে বেতন বন্ধের আদেশ প্রদান বিবেচনা করবেন।
অভিমতে আদালত বলেছেন, অবিলম্বে সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। আদালত এটিও প্রত্যাশা করেন যে সরকার অতি অল্প সময়ে ওই বিষয়ে আইন প্রণয়ন করবে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চিন্ময় কৃষ্ণের সমর্থকদের হামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিহত

ধর্ষণ মামলার বিচার বিষয়ে হাইকোর্টের ৬ নির্দেশনা

আপডেট সময় : ০১:১১:১০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ জুলাই ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক: নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলা নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে শেষ করা, শুনানি শুরু হলে প্রতি কার্যদিবসে টানা মামলা পরিচালনা করা, মামলায় সাক্ষীর উপস্থিতি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বিষয়ে ছয় দফা নির্দেশনাসহ অভিমত দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুসারে এ আদেশ দেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে করা পৃথক তিনটি মামলায় আসামিদের জামিন আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেওয়া হয়।
নির্দেশনা ছয়টি হলো-
১. দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন ধর্ষণ ও ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলাগুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আইনে নির্ধারিত সময়সীমার (বিচারের জন্য মামলা পাওয়ার দিন থেকে ১৮০ দিন) মধ্যে যাতে দ্রুত বিচারকাজ সম্পন্ন করা যায়, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সব ধরনের আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।
২. ট্রাইব্যুনালগুলোকে ২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২০ ধারার বিধান অনুসারে মামলার শুনানি শুরু হলে তা শেষ না হওয়া পর্যন্ত প্রতি কর্মদিবসে একটানা মামলা পরিচালনা করতে হবে।
৩. ধার্য তারিখে সাক্ষীর উপস্থিতি ও সাক্ষীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য প্রতি জেলায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন), সিভিল সার্জনের একজন প্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটরের সমন্বয়ে একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করতে হবে। পাবলিক প্রসিকিউটর কমিটির সমন্বয়কের দায়িত্বে থাকবেন এবং কমিটির কার্যক্রম সম্পর্কে প্রতি মাসে সুপ্রিম কোর্ট স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পাঠাবেন। যে সব জেলায় একাধিক ট্রাইব্যুনাল রয়েছে সেসব জেলায় সব ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটররা মনিটরিং কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত হবেন। তাদের মধ্যে যিনি জ্যেষ্ঠ তিনি সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন।
৪. ধার্য তারিখে রাষ্ট্রপক্ষ সংগত কারণ ছাড়া সাক্ষীকে আদালতে উপস্থিত করতে ব্যর্থ হলে মনিটরিং কমিটিকে জবাবদিহি করতে হবে।
৫. মনিটরিং কমিটি সাক্ষীদের ওপর দ্রুত সময়ে যাতে সমন জারি করা যায় সে বিষয়টিও তদারকি করবেন।
৬. ধার্য তারিখে সমন পাওয়ার পর অফিশিয়াল সাক্ষী যেমন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, ডাক্তার বা অন্যান্য বিশেষজ্ঞ সন্তোষজনক কারণ ছাড়া সাক্ষ্য প্রদানে উপস্থিত না হলে ট্রাইব্যুনাল ওই সাক্ষীর বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ এবং প্রয়োজনে বেতন বন্ধের আদেশ প্রদান বিবেচনা করবেন।
অভিমতে আদালত বলেছেন, অবিলম্বে সাক্ষী সুরক্ষা আইন প্রণয়ন করা প্রয়োজন। আদালত এটিও প্রত্যাশা করেন যে সরকার অতি অল্প সময়ে ওই বিষয়ে আইন প্রণয়ন করবে।