ঢাকা ০৯:১০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মাদারীপুরে ধর্ষণের পর ছাত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যা

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৫:২২:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯
  • ৩২২ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক: মাদারীপুরে দশম শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্রী দীপ্তি আক্তার হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। আজ শনিবার সকালে র‌্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পে তাঁকে হাজির করা হয় র‍্যাব জানায়, দীপ্তিকে একটি ইজিবাইকের চালক ইজিবাইক থেকে নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে লাশটি গুম করতে একটি পরিত্যক্ত পুকুরে ইট বেঁধে ডুবিয়ে রাখা হয়।
আজ শনিবার সকালে র‍্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্প আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান কমান্ডিং অফিসার (সিও) আতিকা ইসলাম।
আজ ভোর পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার পূর্ব খাগদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দীপ্তি হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাজ্জাদ হোসেন খানকে (৪০) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সাজ্জাদ পেশায় একজন ইজিবাইক চালক। এর আগে তিনি ১৯৯২ সালে ৭ বছরের শিশুকে গলাটিপে হত্যার মামলায় ১৮ বছর কারাভোগ করে।
১৩ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে ১৫ বছর বয়সী অজ্ঞাতনামা এক কিশোরীর মুখ পোড়ানো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন ধারণা করা হয়, ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়েছে। লাশ গুম করে দিতে পানিতে ডুবিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঘটনার পরের দিন দীপ্তির বাবা মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে গিয়ে লাশটি তাঁর মেয়ে দীপ্তির বলে শনাক্ত করেন। পরের দিন ১৪ জুলাই দীপ্তির বাবা বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর থেকেই হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তার করতে সদর থানার পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব-৮ –এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রইছ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায় ১৮ জুলাই ওই পরিত্যক্ত পুকুর থেকে একটি সিমেন্টের ব্যাগে দীপ্তির ব্যবহৃত পোশাক, বোরকা ও জুতা উদ্ধার করে। এসব আলামতের সূত্র ধরেই সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ৯ জুলাই মাদারীপুর শহরের মাস্টার কলোনি এলাকায় দীপ্তি তার বোনের বাসায় বেড়াতে আসে। ১১ জুলাই দুপুরে সে তার প্রবাসী চাচার বাসায় বেড়াতে যাবে বলে বের হয়। ওই দিন বিকেলে মাদারীপুর শহরের ইটেরপুলে বোনের বাসা থেকে ইজিবাইকে করে সে চরমুগরিয়ার দিকে যাচ্ছিল। পূর্ব খাগদী এলাকায় ইজিবাইকচালক সাজ্জাদ দীপ্তিকে একা পেয়ে তার মুখ চেপে নিজের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে দীপ্তির গলায় ইট বেঁধে, ছুড়ি দিয়ে পেট কেটে লাশ বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত পুকুরে ডুবিয়ে রাখেন তিনি। আর দীপ্তির ব্যবহৃত পোশাক একটি সিমেন্টের বস্তায় মধ্যে ভরে সাজ্জাদের বাড়ির কাছের একটি পুকুরে ফেলেন।
মেয়ের এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে জেনে দীপ্তির মা নাসিমা বেগম কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মেয়ে তো কারও কোনো ক্ষতি করে নাই। কেন ওই দস্যুটা আমার সোনার মাইয়াডারে মাইরা ফালাইলো? আমি ওর ফাঁসি চাই।’
র‌্যাব-৮ বরিশাল জোনের স্পেশাল তদন্তকারী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রইছ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরে আসামি সাজ্জাদকে সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

রক্ত ঝরিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আসিফদের থামাতে পারে নাই: হাসনাত

মাদারীপুরে ধর্ষণের পর ছাত্রীকে নৃশংসভাবে হত্যা

আপডেট সময় : ০৫:২২:৫২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ জুলাই ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক: মাদারীপুরে দশম শ্রেণির মাদ্রাসাছাত্রী দীপ্তি আক্তার হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। আজ শনিবার সকালে র‌্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্পে তাঁকে হাজির করা হয় র‍্যাব জানায়, দীপ্তিকে একটি ইজিবাইকের চালক ইজিবাইক থেকে নামিয়ে বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে লাশটি গুম করতে একটি পরিত্যক্ত পুকুরে ইট বেঁধে ডুবিয়ে রাখা হয়।
আজ শনিবার সকালে র‍্যাব-৮ মাদারীপুর ক্যাম্প আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান কমান্ডিং অফিসার (সিও) আতিকা ইসলাম।
আজ ভোর পাঁচটার দিকে সদর উপজেলার পূর্ব খাগদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে দীপ্তি হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাজ্জাদ হোসেন খানকে (৪০) গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। সাজ্জাদ পেশায় একজন ইজিবাইক চালক। এর আগে তিনি ১৯৯২ সালে ৭ বছরের শিশুকে গলাটিপে হত্যার মামলায় ১৮ বছর কারাভোগ করে।
১৩ জুলাই মাদারীপুর সদর উপজেলার পূর্ব খাগদী এলাকার একটি পরিত্যক্ত পুকুর থেকে ১৫ বছর বয়সী অজ্ঞাতনামা এক কিশোরীর মুখ পোড়ানো লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তখন ধারণা করা হয়, ওই কিশোরীকে ধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়েছে। লাশ গুম করে দিতে পানিতে ডুবিয়ে রাখার চেষ্টা করা হয়েছিল। ঘটনার পরের দিন দীপ্তির বাবা মাদারীপুর সদর হাসপাতালের মর্গে গিয়ে লাশটি তাঁর মেয়ে দীপ্তির বলে শনাক্ত করেন। পরের দিন ১৪ জুলাই দীপ্তির বাবা বাদী হয়ে মাদারীপুর সদর থানায় অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার পর থেকেই হত্যার রহস্য উদ্‌ঘাটন ও আসামি গ্রেপ্তার করতে সদর থানার পুলিশের পাশাপাশি র‍্যাব-৮ –এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রইছ উদ্দিনের নেতৃত্বে একটি দল তদন্ত শুরু করে। তদন্তের একপর্যায় ১৮ জুলাই ওই পরিত্যক্ত পুকুর থেকে একটি সিমেন্টের ব্যাগে দীপ্তির ব্যবহৃত পোশাক, বোরকা ও জুতা উদ্ধার করে। এসব আলামতের সূত্র ধরেই সাজ্জাদকে গ্রেপ্তার করা হয়।
ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ৯ জুলাই মাদারীপুর শহরের মাস্টার কলোনি এলাকায় দীপ্তি তার বোনের বাসায় বেড়াতে আসে। ১১ জুলাই দুপুরে সে তার প্রবাসী চাচার বাসায় বেড়াতে যাবে বলে বের হয়। ওই দিন বিকেলে মাদারীপুর শহরের ইটেরপুলে বোনের বাসা থেকে ইজিবাইকে করে সে চরমুগরিয়ার দিকে যাচ্ছিল। পূর্ব খাগদী এলাকায় ইজিবাইকচালক সাজ্জাদ দীপ্তিকে একা পেয়ে তার মুখ চেপে নিজের বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে দীপ্তির গলায় ইট বেঁধে, ছুড়ি দিয়ে পেট কেটে লাশ বাড়ির পাশে একটি পরিত্যক্ত পুকুরে ডুবিয়ে রাখেন তিনি। আর দীপ্তির ব্যবহৃত পোশাক একটি সিমেন্টের বস্তায় মধ্যে ভরে সাজ্জাদের বাড়ির কাছের একটি পুকুরে ফেলেন।
মেয়ের এমন নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে জেনে দীপ্তির মা নাসিমা বেগম কান্নাজনিত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার মেয়ে তো কারও কোনো ক্ষতি করে নাই। কেন ওই দস্যুটা আমার সোনার মাইয়াডারে মাইরা ফালাইলো? আমি ওর ফাঁসি চাই।’
র‌্যাব-৮ বরিশাল জোনের স্পেশাল তদন্তকারী কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রইছ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুরে আসামি সাজ্জাদকে সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।