ঢাকা ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সরকার কেন আমার বক্তব্য নিয়ে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিল? ….প্রিয়া সাহা

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৭:৪৬:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯
  • ২৯৪ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও হারিয়ে যাওয়ার তথ্য তুলে ধরে আলোচিত-সমালোচিত প্রিয়া সাহা আবারও মনে করিয়ে দিলেন ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার কথা। গতকাল রবিবার বিকেলে টেলিফোনে তিনি বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতার সময় টানা ৯৪ দিন সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছিল। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। এ দেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় তখন তিনি বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেকোনো জায়গায় যে কথা বলা যায় এটি তিনি শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখেছেন বলেও দাবি করেন প্রিয়া সাহা। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কয়েক সেকেন্ডের কথোপকথন আর এই ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়ে ঘৃণ্য প্রচারণা চালিয়ে কোন গোষ্ঠী লাভবান হতে চেয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হোক। তিনি বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে মিছিল, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করছে, বাংলাদেশটা যেমন তাদের, তেমনি আমারও। আমি আমার দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া বলেন, ৩৭ মিলিয়ন বা তিন কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ‘ডিস-অ্যাপিয়ার্ড’ হওয়ার অর্থ তিনি বুঝিয়েছেন ‘ক্রমাগতভাবে হারিয়ে যাওয়া’ হিসেবে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর জনসংখ্যার সরকারি হিসাব দেখলেই এটি স্পষ্ট হবে। আর যদি ১৯০১ সাল থেকে হিসাব ধরা হয়, তাহলে এ সংখ্যা চার কোটি ৯০ লাখ হবে।
প্রিয়া সাহা বলেন, ‘সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালে এ দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সদস্য ছিল ২৯.৭ শতাংশ। ২০১১ সালের জরিপে তা নেমে এলো ৯.৬ শতাংশে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় ১৮ কোটি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে তো এখন সংখ্যালঘুর সংখ্যা ছয় কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে সংখ্যালঘুর সংখ্যা এক কোটি ২৯ লাখ। অর্থাত্ চার কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার হওয়ার কথা ছিল।’
প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আজ ৩৭ মিলিয়ন নিয়েই শুধু কথা হচ্ছে। অথচ সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর দখল, উচ্ছেদ হচ্ছে, তা নিয়ে কেউ বলছে না।’ ২০০১ সালে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুরে এমপি থাকার সময় বাড়িঘর আক্রান্ত ও দখল হওয়ার তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
প্রিয়া বলেন, ‘গত ২ মার্চ পিরোজপুরে আমার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের খবর পরদিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় কেউ এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। অথচ ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পর সেই আগুনকে সাজানো নাটক বলছে! খোঁজ নিয়ে সত্যটা জানুন।’
তাঁর বক্তব্যের জন্য সংখ্যালঘুদের কেন হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রিয়া। তিনি বলেন, ‘কেন তাদের মুখ চেপে মিথ্যা বলতে বাধ্য করা হচ্ছে? কেন ঢাকায় আমার বাসায় তালা দেওয়ার চেষ্টা চলছে?’
প্রিয়া আরো বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যম আমার পরিবারের সদস্যদের ছবি প্রকাশ করে তাদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছে। আমার পরিবারের সদস্যরা তো কোনো অপরাধ করেনি।’
একজন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে বিষয়টি বলা ঠিক হয়েছে কি না জানতে চাইলে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আমি চাই না, বাংলাদেশ আফগানিস্তান, পাকিস্তানের মতো হোক।’ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস ও সহিংস উগ্রবাদ দমনে সহযোগিতা করে। সে ভাবনা থেকেই তিনি মনে করেন, সংখ্যালঘুদের রক্ষায় দুই দেশের সহযোগিতার কথা বলেছেন।
প্রিয়া সাহা বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও কথোপকথন নিয়ে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করেছে মৌলবাদী ও উগ্রবাদীদেরই একটি চক্র। আর অনেকে না বোঝে তাতে জড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি তো সরকারের পরিসংখ্যান ধরেই কথা বলেছি। সরকার বলুক, আমার কোন বক্তব্যটি অসত্য? আমি রাষ্ট্র বা সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলিনি। সরকার কেন আমার বক্তব্য নিয়ে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিল?’

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিরোজপুরে বাস অটো মুখোমুখি সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে খোঁজ খবর নেন জামাতে ইসলামির নেতৃবৃন্দ।

সরকার কেন আমার বক্তব্য নিয়ে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিল? ….প্রিয়া সাহা

আপডেট সময় : ০৭:৪৬:০২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জুলাই ২০১৯

অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও হারিয়ে যাওয়ার তথ্য তুলে ধরে আলোচিত-সমালোচিত প্রিয়া সাহা আবারও মনে করিয়ে দিলেন ২০০১ সালের নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতার কথা। গতকাল রবিবার বিকেলে টেলিফোনে তিনি বলেন, ২০০১ সালে নির্বাচনপরবর্তী সহিংসতার সময় টানা ৯৪ দিন সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছিল। আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তখন বিরোধীদলীয় নেতা ছিলেন। এ দেশে সংখ্যালঘুদের রক্ষায় তখন তিনি বিশ্বসম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছিলেন।
যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে যেকোনো জায়গায় যে কথা বলা যায় এটি তিনি শেখ হাসিনার কাছ থেকে শিখেছেন বলেও দাবি করেন প্রিয়া সাহা। তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর কয়েক সেকেন্ডের কথোপকথন আর এই ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দিয়ে ঘৃণ্য প্রচারণা চালিয়ে কোন গোষ্ঠী লাভবান হতে চেয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হোক। তিনি বলেন, ‘যারা আমার বিরুদ্ধে মিছিল, মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলন করছে, বাংলাদেশটা যেমন তাদের, তেমনি আমারও। আমি আমার দেশে ফেরার অপেক্ষায় আছি।’
এক প্রশ্নের জবাবে প্রিয়া বলেন, ৩৭ মিলিয়ন বা তিন কোটি ৭০ লাখ সংখ্যালঘু ‘ডিস-অ্যাপিয়ার্ড’ হওয়ার অর্থ তিনি বুঝিয়েছেন ‘ক্রমাগতভাবে হারিয়ে যাওয়া’ হিসেবে। ১৯৪৭ সালে দেশভাগের পর জনসংখ্যার সরকারি হিসাব দেখলেই এটি স্পষ্ট হবে। আর যদি ১৯০১ সাল থেকে হিসাব ধরা হয়, তাহলে এ সংখ্যা চার কোটি ৯০ লাখ হবে।
প্রিয়া সাহা বলেন, ‘সরকারের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ১৯৪৭ সালে এ দেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও বিভিন্ন নৃগোষ্ঠীর সদস্য ছিল ২৯.৭ শতাংশ। ২০১১ সালের জরিপে তা নেমে এলো ৯.৬ শতাংশে। বাংলাদেশের জনসংখ্যা এখন প্রায় ১৮ কোটি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বাংলাদেশে তো এখন সংখ্যালঘুর সংখ্যা ছয় কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বাংলাদেশে বর্তমানে সংখ্যালঘুর সংখ্যা এক কোটি ২৯ লাখ। অর্থাত্ চার কোটি ৮৯ লাখ ৫০ হাজার হওয়ার কথা ছিল।’
প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আজ ৩৭ মিলিয়ন নিয়েই শুধু কথা হচ্ছে। অথচ সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর দখল, উচ্ছেদ হচ্ছে, তা নিয়ে কেউ বলছে না।’ ২০০১ সালে জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী পিরোজপুরে এমপি থাকার সময় বাড়িঘর আক্রান্ত ও দখল হওয়ার তথ্য তুলে ধরেন তিনি।
প্রিয়া বলেন, ‘গত ২ মার্চ পিরোজপুরে আমার বাড়িতে অগ্নিসংযোগের খবর পরদিন বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছিল। সে সময় কেউ এ নিয়ে প্রশ্ন তোলেনি। অথচ ট্রাম্পের সঙ্গে কথা বলার পর সেই আগুনকে সাজানো নাটক বলছে! খোঁজ নিয়ে সত্যটা জানুন।’
তাঁর বক্তব্যের জন্য সংখ্যালঘুদের কেন হুমকি দেওয়া হচ্ছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন প্রিয়া। তিনি বলেন, ‘কেন তাদের মুখ চেপে মিথ্যা বলতে বাধ্য করা হচ্ছে? কেন ঢাকায় আমার বাসায় তালা দেওয়ার চেষ্টা চলছে?’
প্রিয়া আরো বলেন, ‘কিছু গণমাধ্যম আমার পরিবারের সদস্যদের ছবি প্রকাশ করে তাদের জীবন ঝুঁকিতে ফেলেছে। আমার পরিবারের সদস্যরা তো কোনো অপরাধ করেনি।’
একজন বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে বিষয়টি বলা ঠিক হয়েছে কি না জানতে চাইলে প্রিয়া সাহা বলেন, ‘আমি চাই না, বাংলাদেশ আফগানিস্তান, পাকিস্তানের মতো হোক।’ বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাস ও সহিংস উগ্রবাদ দমনে সহযোগিতা করে। সে ভাবনা থেকেই তিনি মনে করেন, সংখ্যালঘুদের রক্ষায় দুই দেশের সহযোগিতার কথা বলেছেন।
প্রিয়া সাহা বলেন, ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ ও কথোপকথন নিয়ে অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করেছে মৌলবাদী ও উগ্রবাদীদেরই একটি চক্র। আর অনেকে না বোঝে তাতে জড়িয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমি তো সরকারের পরিসংখ্যান ধরেই কথা বলেছি। সরকার বলুক, আমার কোন বক্তব্যটি অসত্য? আমি রাষ্ট্র বা সরকারের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলিনি। সরকার কেন আমার বক্তব্য নিয়ে ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পা দিল?’