ঢাকা ০৮:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আসছে ‘ভয়াবহ’ তাপপ্রবাহ!

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৫:৫৪:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৯
  • ২৮৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চলতি বছর কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। অন্যান্য বছর সাধারণত এপ্রিলের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু এবছর সেটা ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়াবিদের মতে, শুক্রবারের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। রেকর্ড ছাড়াতে পারে এবারের তাপমাত্রা, সেই সঙ্গে বয়ে যেতে পারে দাবদাহ। তাপমাত্রা উঠে যেতে পারে ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর। গত ৭৮ বছরের তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে আবহাওয়া অধিদফতরে। সেই হিসাবে, এ পর্যন্ত ১৯৬০ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এর পর ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে, যা গত ৫৪ বছরের মধ্যে ঢাকায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে এবার সেই রেকর্ড ছাড়াতে পারে। এ সময় দেশের উত্তর মধ্যাঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাবে বলেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, ‘এপ্রিল মাসে আবহাওয়া বিরূপ থাকে এবং তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়। ফলে বৃষ্টিপাত ছাড়াও এ সময় সমুদ্রে সৃষ্টি হতে পারে দুয়েকটি নিম্নচাপ। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।’ আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় সারাদেশের ওপর দিয়ে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের তিনটি কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে।

আবার দেশের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ বিস্তৃত রয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। আর মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ অবস্থান করছে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে। ফলে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে এবং রাতে কমতে পারে। আর ১৮ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে বয়ে যেতে পারে দাবদাহ। চলতি মাসের শেষ দিকে ফের কালবৈশাখীর দাপট থাকবে, সাগরে রয়েছে নিম্নচাপেরও শঙ্কা। এ মৌসুমে প্রতিদিন বিকালেই কালবৈশাখীর আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, এপ্রিল-মে মাসের উষ্ণ আবহাওয়ায় কালবৈশাখী, বজ্রঝড়ের অনুকূল পরিবেশ থাকে। বিশেষ করে উত্তর-উত্তর পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে কালবৈশাখীর দাপট বেশি। মন সময়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বিদ্যুৎ চমকানো ও ঘন ঘন বজ্রপাতের মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আবহাওয়া বিজ্ঞানী আবদুল মান্নান জানান, থার্মোমিটারের পারদ চড়তে চড়তে যদি ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে, তা মৃদু, উষ্ণতা বেড়ে ৪০ ডিগ্রি হলে তাকে বলা হয় মাঝারি এবং সেটা ছাড়িয়ে গেলে সেটিকে তীব্র দাবদাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এদিকে ১৪ এপ্রিল থেকে হঠাৎ করেই তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গরম সহ্য করতে পারছে না শিশু ও বয়স্করা। ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে অনেকইে। গত সাত দিনে ৫১০ শিশু ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছে আইসিডিডিআরবিতে। পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১৫ শিশু। মূলত গরমে বেরিয়ে যাওয়া ঘাম শরীরে বসে শিশুরা শ্বাসকষ্টসহ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

রক্ত ঝরিয়ে পতিত ফ্যাসিস্ট আসিফদের থামাতে পারে নাই: হাসনাত

আসছে ‘ভয়াবহ’ তাপপ্রবাহ!

আপডেট সময় : ০৫:৫৪:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০১৯

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ চলতি বছর কালবৈশাখী ঝড়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। অন্যান্য বছর সাধারণত এপ্রিলের স্বাভাবিক সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৩ থেকে ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু এবছর সেটা ছাড়িয়ে গেছে। আবহাওয়াবিদের মতে, শুক্রবারের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের তাপমাত্রা বাড়তে পারে। রেকর্ড ছাড়াতে পারে এবারের তাপমাত্রা, সেই সঙ্গে বয়ে যেতে পারে দাবদাহ। তাপমাত্রা উঠে যেতে পারে ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপর। গত ৭৮ বছরের তাপমাত্রার রেকর্ড রয়েছে আবহাওয়া অধিদফতরে। সেই হিসাবে, এ পর্যন্ত ১৯৬০ সালের ৩০ এপ্রিল ঢাকায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এর পর ২০১৪ সালের ১৪ এপ্রিল ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে, যা গত ৫৪ বছরের মধ্যে ঢাকায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বলছে আবহাওয়া অধিদফতর। তবে এবার সেই রেকর্ড ছাড়াতে পারে। এ সময় দেশের উত্তর মধ্যাঞ্চলের ওপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে যাবে বলেও পূর্বাভাসে বলা হয়েছে। এ বিষয়ে আবহাওয়াবিদ বজলুর রশীদ জানান, ‘এপ্রিল মাসে আবহাওয়া বিরূপ থাকে এবং তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়। ফলে বৃষ্টিপাত ছাড়াও এ সময় সমুদ্রে সৃষ্টি হতে পারে দুয়েকটি নিম্নচাপ। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ের রূপ নিতে পারে।’ আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ৭২ ঘণ্টায় সারাদেশের ওপর দিয়ে হালকা থেকে মাঝারি ধরনের তিনটি কালবৈশাখী ঝড় বয়ে যেতে পারে।

আবার দেশের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টিপাত ও শিলাবৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে পশ্চিমা লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত বিস্তৃত। এর একটি বর্ধিতাংশ বিস্তৃত রয়েছে উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত। আর মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ অবস্থান করছে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে। ফলে দেশের কোথাও কোথাও বিক্ষিপ্তভাবে শিলাবৃষ্টি হতে পারে। সারাদেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য বাড়বে এবং রাতে কমতে পারে। আর ১৮ থেকে ২০ এপ্রিলের মধ্যে বয়ে যেতে পারে দাবদাহ। চলতি মাসের শেষ দিকে ফের কালবৈশাখীর দাপট থাকবে, সাগরে রয়েছে নিম্নচাপেরও শঙ্কা। এ মৌসুমে প্রতিদিন বিকালেই কালবৈশাখীর আশঙ্কা রয়েছে।

আবহাওয়াবিদদের মতে, এপ্রিল-মে মাসের উষ্ণ আবহাওয়ায় কালবৈশাখী, বজ্রঝড়ের অনুকূল পরিবেশ থাকে। বিশেষ করে উত্তর-উত্তর পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে কালবৈশাখীর দাপট বেশি। মন সময়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে বিদ্যুৎ চমকানো ও ঘন ঘন বজ্রপাতের মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয়। আবহাওয়া বিজ্ঞানী আবদুল মান্নান জানান, থার্মোমিটারের পারদ চড়তে চড়তে যদি ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে, তা মৃদু, উষ্ণতা বেড়ে ৪০ ডিগ্রি হলে তাকে বলা হয় মাঝারি এবং সেটা ছাড়িয়ে গেলে সেটিকে তীব্র দাবদাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

এদিকে ১৪ এপ্রিল থেকে হঠাৎ করেই তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় গরম সহ্য করতে পারছে না শিশু ও বয়স্করা। ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে যেতে হচ্ছে অনেকইে। গত সাত দিনে ৫১০ শিশু ডায়রিয়ার চিকিৎসা নিয়েছে আইসিডিডিআরবিতে। পাশাপাশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ১১৫ শিশু। মূলত গরমে বেরিয়ে যাওয়া ঘাম শরীরে বসে শিশুরা শ্বাসকষ্টসহ নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।