বরগুনায় আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় আজও চার্জশিট দিতে পারেনি পুলিশ। নতুন করে আগামী ২২ আগস্ট পুলিশের প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ধার্য করেছেন আদালত। আজ বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে গেপ্তারকৃত ১৪ জন আসামিকে আদালতে হাজির করা হয়। যশোরের শিশু-কিশোর সংশোধন কেন্দ্রে থাকায় রাতুল সিকদারকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
রিফাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গেপ্তার করেছে পুলিশ। আসামিরা হচ্ছেন: রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী, চন্দন সরকার, রাব্বি আকন, হাসান, অলি, টিকটক হৃদয়, সাগর, কামরুল ইসলাম সাইমুন, আরিয়ান শ্রাবন, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, তানভীর, নাজমুল হাসান, রাতুল সিকদার ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি। মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামি মুসা বন্ড, ৭ নম্বর আসামি মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ৮ নম্বর আসামি রায়হান ও ১০ নম্বর আসামি রিফাত হাওলাদারকে এখনো পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। প্রধান আসামি নয়ন বন্ড গত ২রা জুলাই পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
গত ২৬শে জুন, সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায়, রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বরগুনা থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, প্রতিবেদন তৈরী করতে না পারায় আজ তিনি আদালতে দাখিল করতে পারেননি। তবে, পরবর্তী তারিখে তিনি প্রতিবেদন দাখিল করতে পারবেন বলে আশাবাদী।
আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহাবুবুল বারী আসলাম জানিয়েছেন, গত ৩০শে জুলাই তদন্তকারী কর্মকর্তার প্রতিবেদন দাখিলের কথা ছিলো। ওই তারিখে তিনি প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। আজকেও পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। তিনি জানিয়েছেন, রিফাত হত্যার সাথে জড়িত থাকা আসামিদের নাম উল্লেখ করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা প্রতিবেদন করলে এবং বিচারক তা গ্রহন করলে সেটিই চার্জশিট হিসেবে গন্য হবে।
মামলার প্রধান সাক্ষী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিকে গত ১৬ই জুলাই রাতে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। পরের দিন তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। তার দুদিন পরে মিন্নিকে আদালতে হাজির করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়। গত ৩১শে জুলাই সেই স্বীকারোক্তি প্রত্যাহারের জন্য মিন্নি কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বরগুনার জ্যেষ্ঠ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম গাজীর আদালতে আবেদন করেন। বিচারক তার আবেদন গ্রহন করে নথিভূক্ত করেছেন।
মিন্নিকে গ্রেপ্তারের পরে বরগুনার পুলিশ সুপার মো. মারুফ হোসেন বলেছিলেন, রিফাত হত্যার পরিকল্পনার সাথে মিন্নি জড়িত। পরবর্তীতে বলেছেন, হত্যাকারী অনেকের সঙ্গে মিন্নির আগে ও পরে কথা হয়েছে। তাই, হত্যার পরিকল্পনাকারী হিসেবে মিন্নির নাম চার্জশিটে যুক্ত হবে, এটা অনেকটা নিশ্চিত।