ঢাকা ০৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কিরিচের কোপে আহত কলেজছাত্রী পারভীন ৭ দিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে হেরে গেল

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৮:১৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৯
  • ২১৩ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মিয়া শাহা মিয়াজির বাড়ির ছাত্রী পারভীন আক্তার হাসপাতালে সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থেকে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে মারা গেছেন।
মাথায় কিরিচের কোপে আহত হাটহাজারী সরকারি কলেজের ডিগ্রি পড়ুয়া ওই ছাত্রীর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়। হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কলেজছাত্রী পারভিনের মৃত্যু সংবাদ বাড়িতে এসে পৌছালে গতকাল সন্ধ্যায় স্বজনদের কান্নায় তার বাড়িতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
পারভীন আক্তার ফতেপুর ইউনিয়নের মিয়া শাহা মিয়াজির বাড়ির নুরুল আলমের কন্যা। বাড়ির প্রবেশের রাস্তার মালিকানা নিয়ে নুরুল আলমের পরিবারের সাথে একই বাড়ির শাহ আলমের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ চলে আসছিল। প্রতিদিন চলাচলের রাস্তার উপর গরু বেঁধে রাখতেন শাহ আলম। এই গরু বেঁধে রাখাকে কেন্দ্র করে গত ২৩আগষ্ট শুক্রবার জুমার নামাজের আগে নুরুল আলমের স্ত্রীর রিজিয়া বেগমের সাথে শাহ আলমের কথা কাটাকাটি হয়। এতে শাহ আলম ও তার ছেলে জুনু ক্ষীপ্ত হয়। জুমার নামাজ শেষে ঘরে ফেরার পথে নুরুল আলমের ঘরের সম্মুখে শাহ আলম ও তার ছেলে জুনুসহ ৬-৭ সন্ত্রাসী মিলে নুরুল আমিনের পুত্র মামুনকে ঘেরাও করে দেশীয় ধারালো অস্ত্র লোহার রড় ও লাঠি দিয়ে বেধম মারধর করে। পারভীন আক্তার ভাই মামুনকে রক্ষা করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তার মাথার পিছনের অংশে ধারালো কিরিচ দিয়ে কোপ দিলে পারভীন আক্তার গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
রক্তাক্ত ও মুর্মূষ অবস্থায় ভাই-বোন উভয়কে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চমেকে আইসিইউ খালি না থাকায় সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পারভীন আক্তারকে নগরীর ডেলটা হসপিটালে প্রেরণ করা হয়। প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় গত বুধবার সন্ধ্যায় পুনরায় তাকে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে প্রেরণ করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় তার মৃত্যু হয়। ময়না তদন্ত শেষে আজ (শুক্রবার) তার মরদেহ বাড়িতে আনা হবে বলে জানিয়েছে পারভীনের মামা মানিক।
এ হামলার ঘটনায় পারভীনের পিতা নুরুল আমিন গত ২৩ আগষ্ট বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার একদিন পর এজাহারভূক্ত প্রধান দুই আসামি সরোয়ার হোসেন জুনু (৩২) ও তার পিতা শাহ আলমকে (৫৫) গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে।
হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর গতরাতে বলেন, “ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান দুই আসামী ঘটনার পরপরই ধরা পড়েছে। আমরা অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।”

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

কিরিচের কোপে আহত কলেজছাত্রী পারভীন ৭ দিন মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে হেরে গেল

আপডেট সময় : ০৮:১৮:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৯

অনলাইন নিউজ ডেস্কঃ হাটহাজারী উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের মিয়া শাহা মিয়াজির বাড়ির ছাত্রী পারভীন আক্তার হাসপাতালে সাত দিন লাইফ সাপোর্টে থেকে মৃত্যুর সাথে যুদ্ধ করে অবশেষে মারা গেছেন।
মাথায় কিরিচের কোপে আহত হাটহাজারী সরকারি কলেজের ডিগ্রি পড়ুয়া ওই ছাত্রীর গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়। হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। কলেজছাত্রী পারভিনের মৃত্যু সংবাদ বাড়িতে এসে পৌছালে গতকাল সন্ধ্যায় স্বজনদের কান্নায় তার বাড়িতে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। এলাকায় নেমে আসে শোকের ছায়া।
পারভীন আক্তার ফতেপুর ইউনিয়নের মিয়া শাহা মিয়াজির বাড়ির নুরুল আলমের কন্যা। বাড়ির প্রবেশের রাস্তার মালিকানা নিয়ে নুরুল আলমের পরিবারের সাথে একই বাড়ির শাহ আলমের পরিবারের দীর্ঘদিন ধরে দ্বন্দ চলে আসছিল। প্রতিদিন চলাচলের রাস্তার উপর গরু বেঁধে রাখতেন শাহ আলম। এই গরু বেঁধে রাখাকে কেন্দ্র করে গত ২৩আগষ্ট শুক্রবার জুমার নামাজের আগে নুরুল আলমের স্ত্রীর রিজিয়া বেগমের সাথে শাহ আলমের কথা কাটাকাটি হয়। এতে শাহ আলম ও তার ছেলে জুনু ক্ষীপ্ত হয়। জুমার নামাজ শেষে ঘরে ফেরার পথে নুরুল আলমের ঘরের সম্মুখে শাহ আলম ও তার ছেলে জুনুসহ ৬-৭ সন্ত্রাসী মিলে নুরুল আমিনের পুত্র মামুনকে ঘেরাও করে দেশীয় ধারালো অস্ত্র লোহার রড় ও লাঠি দিয়ে বেধম মারধর করে। পারভীন আক্তার ভাই মামুনকে রক্ষা করতে গেলে সন্ত্রাসীরা তার মাথার পিছনের অংশে ধারালো কিরিচ দিয়ে কোপ দিলে পারভীন আক্তার গুরুতর জখম হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে।
রক্তাক্ত ও মুর্মূষ অবস্থায় ভাই-বোন উভয়কে হাটহাজারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও অবস্থার অবনতি হলে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। চমেকে আইসিইউ খালি না থাকায় সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পারভীন আক্তারকে নগরীর ডেলটা হসপিটালে প্রেরণ করা হয়। প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসা ব্যয়বহুল হওয়ায় গত বুধবার সন্ধ্যায় পুনরায় তাকে চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে প্রেরণ করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় গতকাল বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় তার মৃত্যু হয়। ময়না তদন্ত শেষে আজ (শুক্রবার) তার মরদেহ বাড়িতে আনা হবে বলে জানিয়েছে পারভীনের মামা মানিক।
এ হামলার ঘটনায় পারভীনের পিতা নুরুল আমিন গত ২৩ আগষ্ট বাদী হয়ে হাটহাজারী মডেল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ঘটনার একদিন পর এজাহারভূক্ত প্রধান দুই আসামি সরোয়ার হোসেন জুনু (৩২) ও তার পিতা শাহ আলমকে (৫৫) গ্রেফতার করে আদালতে প্রেরণ করেছে। বর্তমানে তারা জেল হাজতে রয়েছে।
হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর গতরাতে বলেন, “ঘটনার সাথে জড়িত প্রধান দুই আসামী ঘটনার পরপরই ধরা পড়েছে। আমরা অপর আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছি।”