ঢাকা ০১:৫৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অবশেষে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত রোহিঙ্গা স্বঘোষিত সর্দার

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ১১:২১:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯
  • ৩৯৩ বার পড়া হয়েছে

রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠনের স্বঘোষিত নেতা, ইয়াবা গডফাদার ও রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ অবশেষে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। রোববার ভোরে তাকে নিয়ে টেকনাফের হ্নীলা জাদিমোড়া ২৭নং ক্যাম্পের পাহাড়ি এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে গেলে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

এর আগে শনিবার ভোরে সহযোগীসহ আটক হন ডাকাতি ও যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যাসহ বহু মামলার আসামি নুর মোহাম্মদ।

বন্দুকযুদ্ধে ওসিসহ (তদন্ত) তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৪টি এলজি, ১টি থ্রি কোয়াটার, ১৮ রাউন্ড গুলি, ২০ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

নিহত নুর মোহাম্মদ (৩৪) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের মৃত রোহিঙ্গা কালা মিয়ার ছেলে। ১৯৯২ সালে তারা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে জাদিমুড়ায় বসতি স্থাপন করে ধীরে ধীরে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে অপরাধকর্ম চালাচ্ছিল।

টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, শনিবার ভোরে সহযোগীসহ আটক হন রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ। সারাদিন তাকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর (রোববার) ভোরে টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহার নেতৃত্বে পুলিশ নুর মোহাম্মদকে নিয়ে উপজেলার হ্নীলা জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের পাহাড়ি জনপদের বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র ভান্ডার উদ্ধার অভিযানে যায়।

এ সময় রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠন এবং মাদক কারবারী সিন্ডিকেটের সশস্ত্র সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে নুর মোহাম্মদকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এতে ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহা (৩৬), কনস্টেবল আশেদুল (২১) ও অন্তর চৌধুরী (২১) আহত হন। পরে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী ৪০-৫০ রাউন্ড পাল্টা গুলিবর্ষণ করার পর হামলাকারীরা গভীর পাহাড়ের দিকে চলে যায়।

কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ৪টি এলজি, ১টি থ্রি কোয়াটার, ১৮ রাউন্ড গুলি, ২০ রাউন্ড খালি খোসাসহ গুলিবিদ্ধ নুর মোহাম্মদকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দেয়া হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক নুর মোহাম্মদকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে পুলিশের আরেকটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর মরদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ আরও জানান, মোস্ট ওয়ানন্টেড ও যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যা মামলার আসামি নুর মোহাম্মদ বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ার খবরে এলাকাবাসী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। মিষ্টি বিতরণ শুরু করেছেন অনেকে। এ ঘটনায় পৃথক মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে সম্প্রতি মেয়ের রাজকীয় কান ছেদন অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনায় ছিলেন রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ। তার মেয়ের জন্য এক কেজি ওজনের স্বর্ণ ও অর্ধকোটি টাকা উপঢৌকন ওঠে বলেও প্রচার পাচ্ছিল। কিন্তু এ তথ্যের সত্যতা কেউ দিতে পারেননি।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পিরোজপুরে বাস অটো মুখোমুখি সংঘর্ষে আহতদের হাসপাতালে খোঁজ খবর নেন জামাতে ইসলামির নেতৃবৃন্দ।

অবশেষে বন্ধুক যুদ্ধে নিহত রোহিঙ্গা স্বঘোষিত সর্দার

আপডেট সময় : ১১:২১:১৭ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০১৯

রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠনের স্বঘোষিত নেতা, ইয়াবা গডফাদার ও রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ অবশেষে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন। রোববার ভোরে তাকে নিয়ে টেকনাফের হ্নীলা জাদিমোড়া ২৭নং ক্যাম্পের পাহাড়ি এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে গেলে এ বন্দুকযুদ্ধের ঘটনা ঘটে।

এর আগে শনিবার ভোরে সহযোগীসহ আটক হন ডাকাতি ও যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যাসহ বহু মামলার আসামি নুর মোহাম্মদ।

বন্দুকযুদ্ধে ওসিসহ (তদন্ত) তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ৪টি এলজি, ১টি থ্রি কোয়াটার, ১৮ রাউন্ড গুলি, ২০ রাউন্ড খালি খোসা উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ।

নিহত নুর মোহাম্মদ (৩৪) টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের মৃত রোহিঙ্গা কালা মিয়ার ছেলে। ১৯৯২ সালে তারা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে জাদিমুড়ায় বসতি স্থাপন করে ধীরে ধীরে সন্ত্রাসী বাহিনী গঠন করে অপরাধকর্ম চালাচ্ছিল।

টেকনাফ থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশ জানান, শনিবার ভোরে সহযোগীসহ আটক হন রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ। সারাদিন তাকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। ১ সেপ্টেম্বর (রোববার) ভোরে টেকনাফ মডেল থানার ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহার নেতৃত্বে পুলিশ নুর মোহাম্মদকে নিয়ে উপজেলার হ্নীলা জাদিমোরা ২৭নং ক্যাম্পের পাহাড়ি জনপদের বাড়িতে অবৈধ অস্ত্র ভান্ডার উদ্ধার অভিযানে যায়।

এ সময় রোহিঙ্গা উগ্রপন্থী সংগঠন এবং মাদক কারবারী সিন্ডিকেটের সশস্ত্র সদস্যরা এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে নুর মোহাম্মদকে ছিনিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। এতে ওসি (তদন্ত) এবিএমএস দোহা (৩৬), কনস্টেবল আশেদুল (২১) ও অন্তর চৌধুরী (২১) আহত হন। পরে পুলিশও আত্মরক্ষার্থে গুলি চালায়। প্রায় আধা ঘণ্টাব্যাপী ৪০-৫০ রাউন্ড পাল্টা গুলিবর্ষণ করার পর হামলাকারীরা গভীর পাহাড়ের দিকে চলে যায়।

কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থল তল্লাশি করে ৪টি এলজি, ১টি থ্রি কোয়াটার, ১৮ রাউন্ড গুলি, ২০ রাউন্ড খালি খোসাসহ গুলিবিদ্ধ নুর মোহাম্মদকে উদ্ধার করে টেকনাফ উপজেলা সদর হাসপাতালে নেয়। সেখানে আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দেয়া হলেও কর্তব্যরত চিকিৎসক নুর মোহাম্মদকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে পুলিশের আরেকটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সুরতহাল রিপোর্ট তৈরির পর মরদেহ উদ্ধার করে পোস্টমর্টেমের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।

ওসি প্রদীপ কুমার দাশ আরও জানান, মোস্ট ওয়ানন্টেড ও যুবলীগ নেতা ওমর ফারুক হত্যা মামলার আসামি নুর মোহাম্মদ বন্দুকযুদ্ধে মারা যাওয়ার খবরে এলাকাবাসী স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছে। মিষ্টি বিতরণ শুরু করেছেন অনেকে। এ ঘটনায় পৃথক মামলার প্রস্তুতি চলছে।

এদিকে সম্প্রতি মেয়ের রাজকীয় কান ছেদন অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনায় ছিলেন রোহিঙ্গা ডাকাত সর্দার নুর মোহাম্মদ। তার মেয়ের জন্য এক কেজি ওজনের স্বর্ণ ও অর্ধকোটি টাকা উপঢৌকন ওঠে বলেও প্রচার পাচ্ছিল। কিন্তু এ তথ্যের সত্যতা কেউ দিতে পারেননি।