আরিফ হোসেন,বাবুগঞ্জ॥ বরিশাল নগরির কাশিপুর এলাকায় উপসহকারি মেডিকেল অফিসার মারুফা হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ। হত্যাকারীকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়েছে বলে জানিয়েছে থানা সূত্র । ওসি এ আর মুকুল বলেন , পেশাদার চোরের হাতেই হত্যার শিকার হন উপসহকারি মেডিকেল অফিসার মারুফা।
মারুফা এয়ারপোর্ট থানাধীন ২নং কাশিপুর ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে উপ- সহকারী মেডিকেল অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার স্বামী জহিরুল হায়দার চৌধুরী ওরফে স্বপন প্রগতি ইনস্যুরেন্স কোম্পানীতে সহকারী ব্যবস্থাপক (উন্নয়ন) হিসেবে ঢাকা মিরপুর শাখায় চাকুরি করতেন। তারা নি:সন্তান দম্পতি ছিলেন।
তদন্ত প্রতিবেদন ও হত্যাকারী মহাসিনের জবানবন্দি অনুযায়ী জানাযায় , ২০১৮ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর চোর মহাসিনের সাবলের আঘাতে রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে মৃত্যু বরণ করেন মারফা।
মহসিন একজন পেশাদার চোর। সে ভোলায় ঘরজামাই থাকে। ঘটনার দিন ঘাতক মহসিন ভোলা থেকে বরিশাল এসে রুপাতলীর একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান নেয়। চুরির উদ্দেশে ওই দিন দিনের বেলায় মারুফার বাসা ও আশপাশ ঘুরে দেখে। রাত আনুমানিক ১ টার পরে পাশের নির্মানাধীন বিল্ডিং থেকে মারুফার ফ্লাটের পার্শ্ববর্তী বিল্ডিংয়ের ছাদে শাবল নিয়ে অবস্থান নেয়। সেই ছাদ থেকে চুরি করার উদ্দেশ্যে মারুফার ফ্লাটের বেলকুনিতে প্রবেশ করে। বেলকুনীর দরজা খোলা থাকায় সে ফ্লাটে ঢুকে মারুফার বিছানার পাশে শাবল রেখে চেয়ারের ওপরে থাকা ভেনিটিব্যাগ নিয়ে বেলকুনী দিয়ে পাশের বাসার ছাদে চলে যায়। ভেনিটিব্যাগ তল্লাশি করে ৩০/৪০ টাকা পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে পুনরায় চোর মহসিন মারুফার ঘরে প্রবেশ করে স্টীলের খোলা আলমারী তল্লাশি শুরু করে। শব্দ পেয়ে মারুফা জেগে উঠে চোর চোর বলে চিৎকার করতে থাকলে মহসিন তার শাবল দিয়ে মারুফার মাথায় আঘাত করে। সাথে সাথে মারুফা মাটিতে লুটিয়ে পরেন।
মারুফাকে মৃত্যুও কোলে ঢলে পরতে দেখে দ্রুত বেলকুনি দিয়ে পাশের বাসার ছাদে চলে যায়। সেখানে নির্মানাধীন আরেকটি বিল্ডিংয়ে ফজরের আজান পর্যন্ত অবস্থান নেয়। তারপর আজানের সময়ে ওই বিল্ডিং থেকে নেমে লঞ্চে করে ভোলা চলে যায়।
হত্যাকান্ডের দীর্ঘ ছয়মাস পরে এসআই ফিরোজ আলম মুন্সী মারুফার ঘাতক মহসিনকে চট্রগামের পতেঙ্গা থানা এলাকা থেকে ১৭ এপ্রিল ২০১৯ আটক করা হয়। হত্যাকারী মহসিনের বাড়ি, পিরোজপুর জেলার খানাকুনিয়ারী গ্রামে।
মামলাটিকে এয়ারপোর্ট থানা পুলিশ বছরের সেরা সাফল্য হিসাবে দেখছেন।