ঢাকা ১০:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভোলায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৬:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৯
  • ৩৫৭ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্কঃ ভোলায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। হেমন্তের বাতাসে শীতের হিম হিম স্পর্শ। ভোরে কুয়াশার আঁচল সরিয়ে শিশির বিন্দু মুক্তোদানার মতো দৃষ্টি ছড়াতে শুরু করেছে। গ্রামের মাঠ জুড়ে কাঁচা-পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বেশ কিছু এলাকার গাছিরা। খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের জন্য দাঁ ও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে নিপুণ হাতে গাছ প্রস্তুত করছেন অনেকে।

বিগত কয়েক বছর আগে ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে মাঠে আর মেঠোপথের ধারে সারি সারি খেজুর গাছ থাকলেও ধীরে ধীরে তা বিলুপ্ত হয়েছে। তবে কিছু গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে।

জানা গেছে, এক সময় জেলার যেখানে-সেখানে সারিবদ্ধভাবে নয়ন জুড়ানো খেজুর গাছের দৃশ্য চোখে পড়তো। আধুনিকায়ন ও নগরায়নের ফলে বাংলার ঐতিহ্যের অংশ এই খেজুর গাছ আজ বিলুপ্ত প্রায়। অবৈধভাবে ইটভাটায় অবাধে খেজুর গাছ পোড়ানোর কারণে কমে যাচ্ছে খেজুর গাছ। তবে এলাকার কিছু গাছিরা জানান, খেজুরের রস সংগ্রহের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে খেজুর গাছ পরিস্কারের কাজ শুরু করেছেন তারা। এলাকার গাছিরা আশা করছেন ভোলা জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে চাহিদা মত রস ও গুড়ের দাম ভালো পাওয়া যাবে।

আক্ষেপ করে তারা বলেন, আগের মত ভোলার কোথাও খেজুর গাছ দেখা যায় না। যেসব খেজুর গাছ আছে সেগুলোতে তেমন রসও নেই। এখন যেটুকু রস ও গুড় পাওয়া যাচ্ছে তাতে করে আগামীতে আর হয়তো খেজুরের রস, গুড় ও খেজুর গাছের আর দেখাই মিলবে না। পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামের নেছার আলী গাজী নামের এক গাছি বলেন, খেজুর গাছ কমে গেছে। আগের মতো রস হচ্ছে না। অথচ রসের চাহিদা বাড়ছে।

তিনি জানান, খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় হরেক রকমের পিঠা-পুলি, ক্ষীর ও পায়েস। চাহিদার তুলনায় খেজুরের রস ও গুড় কম হওয়ায় দাম অনেক বেশি। শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু এলাকার গাছিরা সকাল থেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খেজুর গাছ ঝুড়ার কাজে।

কয়েকদিন পরেই এসব গাছ থেকে শুরু হবে রস সংগ্রহ। তিনি বলেন, আগের মতো খেজুর গাছ নেই। আগে ভোলার অনেক পরিবার আয়ের অন্যতম উৎস হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তা এখন আর নেই। গ্রামের মানুষ খেজুর গাছের রস ও গুড় শহরে মানুষ কিনে নিয়ে যায় বলে গ্রামের মানুষ রস পায় না।

৮-১০বছর আগে গ্রামে প্রায় প্রতি বাড়িতে খেজুরের রস পাওয়া যেত। কিন্তু প্রায় বিলুপ্তির পথে রসের এই বহুবিধ ব্যবহারের মূল্যবান খেজুর গাছটি। রস সংগ্রহের মৌসুমে গাছির সংকটও রয়েছে। দিন দিন খেজুর গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। যেসব এলাকায় খেজুর গাছ আছে সেগুলোর রস সংগ্রহে গাছির সংকট দেখা দিয়েছে। খেজুর গাছের গুরুত্ব থাকলেও কমে যাচ্ছে খেজুর গাছের সংখ্যা। আগের মতো বাড়ির আশপাশে ও সড়কের পাশে খেজুর গাছ দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্যের দেখা মিলছে না খুব একটা। মঙ্গলবার সকালে কয়েকজন গাছি জানায়, ইটভাটায় যদি খেজুর গাছ জ্বালানো বন্ধ না করে তাহলে অচিরেই ভোলা জেলা থেকে বিলুপ্ত হবে খেজুর গাছ।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

ভোলায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা

আপডেট সময় : ০৬:৪৮:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৯

নিউজ ডেস্কঃ ভোলায় খেজুর গাছের রস সংগ্রহ করার জন্য ব্যস্ত সময় পার করছে গাছিরা। হেমন্তের বাতাসে শীতের হিম হিম স্পর্শ। ভোরে কুয়াশার আঁচল সরিয়ে শিশির বিন্দু মুক্তোদানার মতো দৃষ্টি ছড়াতে শুরু করেছে। গ্রামের মাঠ জুড়ে কাঁচা-পাকা ধানের মৌ মৌ গন্ধ। শীত শুরুর সঙ্গে সঙ্গে খেজুর গাছ প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পার করছেন বেশ কিছু এলাকার গাছিরা। খেজুর গাছ থেকে রস আহরণের জন্য দাঁ ও কোমরে দড়ি বেঁধে খেজুর গাছে উঠে নিপুণ হাতে গাছ প্রস্তুত করছেন অনেকে।

বিগত কয়েক বছর আগে ভোলা সদর উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামগুলোতে মাঠে আর মেঠোপথের ধারে সারি সারি খেজুর গাছ থাকলেও ধীরে ধীরে তা বিলুপ্ত হয়েছে। তবে কিছু গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে।

জানা গেছে, এক সময় জেলার যেখানে-সেখানে সারিবদ্ধভাবে নয়ন জুড়ানো খেজুর গাছের দৃশ্য চোখে পড়তো। আধুনিকায়ন ও নগরায়নের ফলে বাংলার ঐতিহ্যের অংশ এই খেজুর গাছ আজ বিলুপ্ত প্রায়। অবৈধভাবে ইটভাটায় অবাধে খেজুর গাছ পোড়ানোর কারণে কমে যাচ্ছে খেজুর গাছ। তবে এলাকার কিছু গাছিরা জানান, খেজুরের রস সংগ্রহের পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে খেজুর গাছ পরিস্কারের কাজ শুরু করেছেন তারা। এলাকার গাছিরা আশা করছেন ভোলা জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে চাহিদা মত রস ও গুড়ের দাম ভালো পাওয়া যাবে।

আক্ষেপ করে তারা বলেন, আগের মত ভোলার কোথাও খেজুর গাছ দেখা যায় না। যেসব খেজুর গাছ আছে সেগুলোতে তেমন রসও নেই। এখন যেটুকু রস ও গুড় পাওয়া যাচ্ছে তাতে করে আগামীতে আর হয়তো খেজুরের রস, গুড় ও খেজুর গাছের আর দেখাই মিলবে না। পশ্চিম ইলিশা ইউনিয়নের দক্ষিণ চরপাতা গ্রামের নেছার আলী গাজী নামের এক গাছি বলেন, খেজুর গাছ কমে গেছে। আগের মতো রস হচ্ছে না। অথচ রসের চাহিদা বাড়ছে।

তিনি জানান, খেজুরের রস ও গুড় দিয়ে তৈরি করা হয় হরেক রকমের পিঠা-পুলি, ক্ষীর ও পায়েস। চাহিদার তুলনায় খেজুরের রস ও গুড় কম হওয়ায় দাম অনেক বেশি। শীত পড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু এলাকার গাছিরা সকাল থেকে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন খেজুর গাছ ঝুড়ার কাজে।

কয়েকদিন পরেই এসব গাছ থেকে শুরু হবে রস সংগ্রহ। তিনি বলেন, আগের মতো খেজুর গাছ নেই। আগে ভোলার অনেক পরিবার আয়ের অন্যতম উৎস হিসেবে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে খেজুর গাছের ওপর নির্ভরশীল ছিল। তা এখন আর নেই। গ্রামের মানুষ খেজুর গাছের রস ও গুড় শহরে মানুষ কিনে নিয়ে যায় বলে গ্রামের মানুষ রস পায় না।

৮-১০বছর আগে গ্রামে প্রায় প্রতি বাড়িতে খেজুরের রস পাওয়া যেত। কিন্তু প্রায় বিলুপ্তির পথে রসের এই বহুবিধ ব্যবহারের মূল্যবান খেজুর গাছটি। রস সংগ্রহের মৌসুমে গাছির সংকটও রয়েছে। দিন দিন খেজুর গাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। যেসব এলাকায় খেজুর গাছ আছে সেগুলোর রস সংগ্রহে গাছির সংকট দেখা দিয়েছে। খেজুর গাছের গুরুত্ব থাকলেও কমে যাচ্ছে খেজুর গাছের সংখ্যা। আগের মতো বাড়ির আশপাশে ও সড়কের পাশে খেজুর গাছ দাঁড়িয়ে থাকার দৃশ্যের দেখা মিলছে না খুব একটা। মঙ্গলবার সকালে কয়েকজন গাছি জানায়, ইটভাটায় যদি খেজুর গাছ জ্বালানো বন্ধ না করে তাহলে অচিরেই ভোলা জেলা থেকে বিলুপ্ত হবে খেজুর গাছ।

Post Views: 9