অনলাইন নিউজ ডেস্ক: রাজধানীর মিরপুরের রূপনগর আবাসিক এলাকার ১১ নম্বর সড়কে গ্যাস বেলুন বিক্রি করতে আসেন এক ব্যক্তি। শিশুরা বেলুন কেনার জন্য বেলুন ওয়ালার চারপাশে ভীড় করে। আকস্মিক গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে মুহূর্তেই পাঁচ শিশু মারা যায়, আহত হয় আরও কয়েকজন।
নিহত পাঁচ শিশু হলো: শাহিন (১০), নূপুর (৭), ফারজানা (৯), জান্নাত (১৪) ও রমজান (৮)। রূপনগর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো. সুমন নিহতদের পরিচয় নিশ্চিত করেন। বিস্ফোরণের ঘটনায় আহতদের চিকিৎসার জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে যাদের ভর্তি করা হয়েছে, তাদের মধ্যে ১২ জন শিশু, দুইজন পুরুষ এবং একজন নারী রয়েছেন। তারা হলেন জুয়েল (২৫), আবু সাঈদ (২০), জান্নাত (২৫), তানিয়া (৮), বায়েজিদ (৭), জামেলা (৭), মিজান (৭), মীম (৮), ওজুফা (৯), মোস্তাকিম (৮), মোরসালিনা (৯), নিহাদ (৮), অর্ণব ওরফে রাকিব (১০), জনি (১০) এবং সিয়াম (১১)। এদের মধ্যে আবু সাঈদ বেলুন বিক্রেতা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, একটি ভ্যানগাড়িতে করে ওই ব্যক্তি মিরপুরের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে ঘুরে গ্যাস বেলুন বিক্রি করতেন। আজ বুধবার বিকেলে রূপনগর ১১ নম্বর সড়কের শেষ মাথায় ফজর মাতবরের বস্তির সামনে বেলুন বিক্রি করতে আসেন তিনি। তাঁকে দেখামাত্রই বস্তির শিশুরা তাঁকে ঘিরে ধরে। এ সময় সিলিন্ডারে পাউডার জাতীয় কিছু একটা ভরছিলেন ওই বেলুন বিক্রেতা। এর পরপরই হঠাৎ বিকট শব্দে সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে আশপাশে থাকা ১০-১২ জন প্রায় ১৪/১৫ ফুটের মতো দূরে ছিটকে পড়ে। বিস্ফোরণের পরপরই ঘটনাস্থলে চার শিশুর ছিন্নভিন্ন দেহ পাওয়া যায়। পেটে আঘাত পাওয়া আরেক শিশু দৌড়ে সেখান থেকে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু কিছু দূর যাওয়ার পরই সে লুটিয়ে পড়ে। পরে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শী ঝালমুড়ি বিক্রেতা. মোঃ হোসেন বলেন, ‘বিস্ফোরণের স্থান থেকে কিছুটা দূরে আমি ঝালমুড়ি বিক্রি করি। বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ওই বেলুন বিক্রেতা ভ্যান নিয়ে আমার সামনে এসে দাঁড়ালে আমি তাঁকে চলে যেতে বলি। এরপর একটু সামনে এগিয়ে গিয়ে তিনি একটি টিনশেডের ঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। কিছুক্ষণ পর বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাই।’
বিস্ফোরণে আহত নারী জান্নাত বেগমের স্বামী নজরুল ইসলাম বলেন, বিকেলে বাজার করে ফেরার সময় ১১ নম্বরের সড়কের মাথায় আসতেই বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণে তাঁর স্ত্রীর ডান হাতের একটি অংশ শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে এসে উদ্ধার কার্য পরিচালনা করে।