অনলাইন ডেস্কঃ
শিরিন খানম :: ব্রিটিশ যুদ্ধ দেখেছেন খুব কাছ থেকে। তখন যৌবন ছুঁই ছুঁই। গ্রামের মেঠোপথে বেণী দুলানো মেয়েটি বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন হাসতে হাসতে। কেটে গেছে বহু বসন্ত। ‘৪৭-এর দেশভাগ, ৫২-এর ভাষা আন্দোলন আর ৭১’ মুক্তিযুদ্ধ ছাড়াও নানান চড়াই-উৎড়াই দেখতে দেখতে এখনও বেঁচে আছেন। বয়স গুণে গুণে ১৪০। তাঁর নাম খোদেজা বিবি।
৭ ছেলে আর ৩ মেয়ের জননীর জন্ম এবং বেড়ে উঠা কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের বড়গাঁও গ্রামে। বয়সের ছাপ জ্বল জ্বল করছে দেহময়। একটু কষ্ট হয় তবুও হেঁটে চলাফেরা করেন। কোরআন তেলাওয়াত করতে পারছেন এখনো। মাঝে মাঝে চোখে ঝাপসা দেখেন। এসব তথ্য দিয়েছেন খোদেজা বিবির নাতি ভাটেরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান হাজী মোঃ সিরাজ মিয়া। এলাকাবাসীর দাবী বয়স নির্ধারণে বিজ্ঞানের সহায়তা নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টি করতে পারেন তিনি।
দেশের সুনামও বয়ে আনতে পারেন প্রায় দেড়শ বছরের জীবন্ত সাক্ষী। তাদের দাবী বিশ্বের সর্বোচ্চ ১৪০ বছর বয়সের এখনো জীবিত মানুষটি হচ্ছে কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরার খোদেজা বিবি। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি যে, দীর্ঘ বয়সের ভারে কিছুটা ন্যুয়ে পড়া এ মানুষটির স্মৃতি শক্তি এখনো পুরোপুরি বিদ্যমান রয়েছে। দেশে গড় আয়ু যেখানে ৭০ বছর সেখানে দেশে দেড়শত বছরের কাছাকাছি জীবিত খোদেজা বিবিকে নিয়ে এলাকাবাসির মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে।
এ নিয়ে সরকার পদক্ষেপ নিলে তাঁর নাম গীনেস বুকে লেখাতে পারলে বর্হিবিশ্বে দেশের সুনাম বাড়বে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। কুলাউড়া উপজেলার ভাটেরা ইউনিয়নের বড়গাঁও গ্রামের বাসিন্দা খোদেজা বিবি, লকুছ মিয়া সহ এলাকাবাসি ও তার পুত্রদের তথ্যমতে ওই মহিলার বর্তমান বয়স ১৪০ এর কম-বেশি হবে।
স্থানীয় সুত্রমতে, খোদেজা বিবি’র জন্ম হয়েছে ব্রিটিশ যুদ্ধের অনেক আগে। তার পিতার নাম মৃত বাদশা সিকান্দার মিয়া ও মাতার নাম মৃত কমলা খানম। খোদেজা বিবির নাতি জানান, তার বড় চাচার বয়স ১০০ এর উপরে ফুফুর বয়সও ৮৫ এর কম নয়। খোদেজা বিবির ছোট নাতি জানায়, অনেক ছোটবেলা থেকে দাদীকে বৃদ্ধাবস্থায় দেখে আসছি। কিছুদিন আগেও দাদী পায়ে হেঁটে এখানে-ওখানে যেতেন।
ধারনা করছে অনুমানিক ১৪০-১৪৫ বছরের বয়সের ভারে ক্রমান্বয়ে ভাটেরায় এখন আর ঠিক মতো চলাফেরা করতে পারেন না।
কীভাবে এত বছর বেঁচে আছেন ও জন্ম কি ব্রিটিশযুদ্ধের আগে কি-না জানতে চাওয়া হলে খোদেজা বিবি এ প্রতিবেদককে বলেন, ব্রিটিশতো সেদিনের কথা। এর আগেই তিনি বিয়ে করেছেন এবং তার ৭ ছেলে ও ৩ মেয়ে আছে বলে জানান। সমাজ সেবক রুকন জানান, উনার বয়স যদি হয় ১৪০ তাহলে এটি বাংলাদের জন্য গর্বের ও সম্মানের। গীনেচ বুকে বর্তমানে সর্বোচ্ছ ১১৭ বছর বয়সের অধিকারি হচ্ছে জাপানের নাবি সাজাকো। সরকার চাইলে জাপানের সে রেকর্ড ভাংতে পারে খোদেজা বিবির বর্তমান বয়স দিয়ে।
সচেতন মহল বলছেন, সরকার উদ্যোগ নিলে তার ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক বয়স নিরুপণ করতে পারবে। আর যদি তার বয়স ঠিকই ১৪০ হয় তাহলে বাংলাদেশ বিশ্বের কাছে নতুন পরিচিতি পাবে। তারা এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে জেলা প্রশাসকের সহযোগিতা কামনা করেন।