নিজস্ব প্রতিনিধি: আজ ১৯ নভেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬ টায় বরিশাল জেলা প্রশাসনের আয়োজনে, জেলা প্রশাসন বরিশালের সম্মেলন কক্ষে। সমসাময়িক বিভিন্ন বিষয়ের পাশাপাশি লবনের কৃত্রিম সংকট সংক্রান্ত গুজব বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। বাজারে পর্যাপ্ত মজুদ থাকা সত্বেও একশ্রেণীর অসাধু ব্যক্তি, ব্যবসায়ী লবণের মজুদ, চাহিদার বিষয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন উপায়ে গুজব ছড়িয়ে বাজারসহ স্থানীয় জনসাধারণের মধ্যে এক ধরনের আতংক সৃষ্টির অপপ্রয়াসে লিপ্ত রয়েছে এ ধরনের অসৎ উদ্দেশ্যে গুজব ছড়ানো সম্পূর্ণ অনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং ভিত্তিহীন যা সরকারকে বিব্রত করার অপচেষ্টা ছাড়া আর কিছুই নয়। বিভাগীয় কমিশনার বরিশাল মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী বলেন, দেশে লবণের কোনো ঘাটতি নেই বর্তমানে দেশের চাহিদার তুলনায় অনেক বেশি পরিমাণে লবন মজুদ রয়েছে। লবণচাষিদের অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সরকারের সার্বিক সহায়তার ফলে লবণ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে বাংলাদেশে লবণের মোট চাহিদা ১৬ লক্ষ ৫৭ হাজার মেট্রিক টন। এঅর্থবছরে মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি রেকর্ড পরিমাণ ১৮.২৪ লক্ষ মেট্রিক টন উৎপাদিত হয়েছে। আজ পর্যন্ত দেশের লবণের মজুদের পরিমান ৬.৫০ লক্ষ মেট্রিক টন। বরিশালে লবণের মাসিক গড় চাহিদা ৭ হাজার মেট্রিক টন, বর্তমানে বরিশাল জোনে লবণের মজুদ রয়েছে ৮ হাজার মেট্রিক টন। বরিশাল জোনের ঝালকাঠি জেলায় লবণের বেশকিছু ফেক্টরি রয়েছে তাদের তথ্য মতে তাদের কাছে ৬৩৭৮ মেট্রিক টন লবণ মজুদ রয়েছে এর মধ্যে ১৭০ মেট্রিক টন লবণ প্যাকেটজাত করার অপেক্ষায় আছে এছাড়া ৬৪ মেট্রিক টন লবণ প্যাকেটজাত করা রয়েছে। যার মাধ্যমে আগামী কয়েক মাস বরিশাল জোনের লবণের চাহিদা মেটানো সম্ভব হবে। এদিকে আজ সারাদিন বরিশাল জেলায় জেলা প্রশাসনের তৎপরতায় বাজার মনিটরিং অব্যাহত আছে এবং বাজার স্বাভাবিক রয়েছে। আজ জেলা প্রশাসন বরিশালের নির্দেশনা বরিশাল জেলার ১০ টি উপজেলার বাজারে বাজারে মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা করা হয়। বরিশাল মহানগরীতে তিনটি টিম মোবাইল কোর্ট অভিযান পরিচালনা কালে নতুল্লাবাদ এলাকায় ১টি প্রতিষ্ঠান আল-মদিনা খাদ্য ভান্ডার কে অতিরিক্ত দামে লবণ বিক্রয় করার অপরাধে ১৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। আগৈলঝাড়া উপজেলায় দুটি প্রতিষ্ঠানকে অতিরিক্ত মূল্যে লবণ বিক্রয় করার অপরাধে ১২ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। হিজলা উপজেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে ২টি দোকানকে অতিরিক্ত মূল্যে লবণ বিক্রয় করার অপরাধে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। মুলাদী উপজেলায় মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে অতিরিক্ত মূল্যে লবণ বিক্রয় করার অপরাধে একটি প্রতিষ্ঠানকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করা হয়। ৬ টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বমোট ১ লক্ষ ৭ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়। পাশাপাশি বরিশাল মহানগর সহ সকল উপজেলায় জেলা প্রশাসনের নির্দেশক্রমে গুজব প্রতিরোধ এবং পণ্যের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে গণসচেতনতা মূলক মাইকিং করা হচ্ছে। সংবাদ সম্মেলনে বরিশাল জেলা প্রশাসক এস, এম, অজিয়র রহমান এর সভাপতিত্বে। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিভাগীয় কমিশনার বরিশাল মুহাম্মদ ইয়ামিন চৌধুরী। পুলিশ সুপার বরিশাল, মোঃ সাইফুল ইসলাম বিপিএম (বার), উপ-পুলিশ কমিশনার, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ, মোঃ মোয়াজ্জেম হোসেন ভূঁঞা, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার বরিশাল, মোঃ শহিদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বরিশাল, শহীদুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) বরিশাল তৌহিদুজ্জামান পাভেল, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয় বরিশাল বৃন্দরাসহ বরিশাল মহানগরীর বিভিন্ন বাজার কমিটির সদস্য এবং বিভিন্ন প্রিন্ট এবং ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। জেলা প্রশাসক বরিশাল বলেন সারাদেশের মতো বরিশাল ও লবণের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে তৎপ্রেক্ষিতে সর্বসাধারণকে গুজবে কান না দিয়ে অতিরিক্ত লবণ না কেনা এবং ব্যবসায়ীদেরকে লবণ মজুদ করে কৃত্রিম সংকট তৈরি না করার জন্য অনুরোধ করেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন কোন ব্যাবসায়ি, ব্যক্তি কর্তৃক গুজব সৃষ্টি এবং কৃত্রিম সংকট সৃষ্টিতে তার সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি উক্ত বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে নিজ নিজ স্থান থেকে বরিশাল জেলার সকল সাংবাদিকবৃন্দের সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনার পাশাপাশি এ সংবাদ সংবাদমাধ্যমে প্রচার এবং সকলের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন।
দৃষ্টি আকর্ষণ: