নিজস্ব প্রতিবেদক: নজিরবিহীন অনিয়মের যাঁতাকলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের চিকিৎসা সেবার ভরসাস্থল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসাপতাল (শেবাচিম)। নার্স ও কর্মচারীদের বেপরোয়া আচরণে হয়রানির শিকার হচ্ছেন সেবাগ্রহীতারা। অতিরিক্ত রোগী ও দর্শনার্থীকে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে বিভিন্ন ধরনের সিন্ডিকেট। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগ রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
হাসপাতালটির ২০১৯-২০২০ইং সালের খাবারের দরপত্র তালিকা যেন রূপপুরের বালিসের দূর্নীতির থেকে কোন অংশে কম নয়! শেবাচিমের পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেনের স্বাক্ষরিত দরপত্র সিডিউল গ্রুপ নং-৪ (মাছ, মাংস ও ডিম) এর গৃহীত দরে দেখা যায় খাসীর মাংস প্রতি কেজি ৭৯০ টাকা, ব্রয়লার মুরগির মাংস প্রতি কেজি ৩৫০ টাকা, প্রতি পিচ ডিম ৯ টাকা ৯০ পয়সা, মাছ-রুই/কাতলা প্রতি কেজি ৪৬০ টাকা, মাছ- গ্রাস কার্প/ মিনার কার্প প্রতি কেজি ৩৯৫ টাকা, ইলিশ মাছ প্রতি কেজি ১৫০০ টাকা, পাংগাস মাছ প্রতি কেজি ৩৮০ টাকা।
চলিত মাসের বাজারদর থেকে জানা যায়, ব্রয়লার মুরগির মাংস প্রতি কেজি ১২৫ থেকে ১৩০টাকা, রুই/কাতলা মাছ প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, গ্রাস কার্প/মিনার কার্প প্রতি কেজি ২৪০ থেকে ৩০০ টাকা, ইলিশ মাছ আকারভেদে প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ১২০০ টাকা, পাংগাস মাছ প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৬০ টাকা।
বরিশালের একাধিক মৎস আড়ৎ মালিকরা জানায়, “মাছের দাম প্রায়ই কমে বাড়ে তবে শেবাচিমের দরপত্র সিডিউলে যে তালিকার কথা বলছেন তার দাম একেবারে অতিরিক্ত, এটা এক ধরনের দূর্নীতি ছাড়া আর কিছু না।”
শুধু খাবারের মূল্য তালিকায় সব কিছুর দাম বেশিই নয় খাবারের মান নিয়ে নানা অভিযোগ রয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। অভিযোগ রয়েছে খাবার তালিকায় বিভিন্ন আইটেম দেয়ার কথা থাকলেও গত ৫/৬ মাস ধরে মাছ/মাংস বাদ দিয়ে শুধু ব্রয়লার মুরগির মাংস দিয়েই দেয়া হচ্ছে রোগীর খাবার।
এছাড়া হাসপাতালের রোগীদের নিম্নমানের খাবার সরবরাহের অভিযোগ পাওয়া গেছে। একাধিক রোগী অভিযোগ করে বলেন, “হাসপাতালে খাবারের মান যেমন খারাপ তেমন এখানের আয়া-বুয়াদের ব্যবহারও খারাপ,” এর জন্য একটা ব্যবস্থা নিতে সরকারের কাছে দাবী জানান তারা।
এক বীর মুক্তিযোদ্ধা জানান, “আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা, দেশের জন্য যুদ্ধ করে দেশকে শত্রু মুক্ত করেছি কি শুধু এভাবে ভোগান্তি পাওয়ার জন্য? শেবাচিম হাসাপাতালে টাকা না হলে কিছুই পাওয়া যায় না, এর সঠিক বিচার চাই।”