ঢাকা ০৭:২২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরামর্শ না দেয়ার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৮:০৩:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯
  • ২৯৫ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন নিউজ ডেস্ক: রোগীদের অপ্রয়োজনীয় ও অযথা স্বাস্থ্য পরীক্ষা দিয়ে অতিরিক্ত অর্থলাভের প্রবণতার সমালোচনা করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এ ধরনের চর্চা থেকে চিকিৎসকদের বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘প্রায়ই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভুল চিকিৎসা ও রোগীকে হয়রানি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের খবর বের হয়। রাজধানীর নামীদামি ক্লিনিক থেকে শুরু করে মফস্বলের কিছু ক্লিনিক এ অপকর্মের সাথে জড়িত। যার জন্য কিছু চিকিৎসকের অপকর্মের দায় পুরো চিকিৎসক সমাজের ওপর পড়ে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর এক হোটেলে বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটি আয়োজিত আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার কনফারেন্স ‘বাংলাকার্ডিও-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
‘অপকর্মের ফলে চিকিৎসক ও রোগীর আস্থার সম্পর্কে ফাটল ধরে। এসব ব্যাপারে আপনাদের সজাগ থাকতে হবে এবং দোষী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে,’ বলেন তিনি।
বাজারে যাতে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ আসতে না পারে সে বিষয়ে চিকিৎসকদের খেয়াল রাখার তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি। সেই সাথে তিনি দেশে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর চিকিৎসা ব্যবস্থা চালুর জন্য দক্ষ ও প্রশিক্ষিত চিকিৎসক গড়ে তোলার প্রতি জোর দেন।
সরকার দেশে আধুনিক চিকিৎসা প্রবর্তনে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে আধুনিক ও উন্নত যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে।
‘কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে অনেক সময় হাসপাতালে সরবরাহকৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার মতো জনবল থাকে না। থাকলেও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার অভাবে যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে একদিকে জনগণের টাকার অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই,’ বলেন তিনি।
এছাড়া, রাষ্ট্রপতি চিকিৎসা সামগ্রী কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি বলে মত দেন।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘চিকিৎসক হিসেবে আজকে আপনাদের যে অবস্থান তাতে আপনাদের মা-বাবা ও অভিভাবকদের পাশাপাশি এ দেশের সাধারণ মানুষের অনেক অবদান রয়েছে। তাই তাদের কথা ভুলবেন না।’
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও হৃদরোগ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা এ দেশে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ ঘাতক রোগের হাত থেকে আমাদের স্বজনকে-জনসাধারণকে রক্ষা করতে এখনই সচেতন হতে হবে। দেশবাসীকে এ রোগের কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানাতে হবে। হৃদরোগের চিকিৎসা যেহেতু ব্যয়বহুল, তাই প্রতিরোধের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।’
বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটি দেশে হৃদরোগ চিকিৎসায় দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তুলতে সর্বোপরি দেশে হৃদরোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম-প্রশিক্ষণ কর্মশালা এবং বাংলাকার্ডিওর মতো আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটি এ লক্ষ্যে ইতিবাচক অবদান রেখে যাচ্ছে। তারা ভবিষ্যতেও এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক, জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার আবদুল মালিক (অব.), বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম মহিবুল্লাহ, মহাসচিব অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল সাফী মজুমদার, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দিন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এনসি নান্দা অন্যান্যের মাঝে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

চিন্ময় কৃষ্ণের সমর্থকদের হামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী নিহত

অপ্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরামর্শ না দেয়ার জন্য চিকিৎসকদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি

আপডেট সময় : ০৮:০৩:৫২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ ডিসেম্বর ২০১৯

অনলাইন নিউজ ডেস্ক: রোগীদের অপ্রয়োজনীয় ও অযথা স্বাস্থ্য পরীক্ষা দিয়ে অতিরিক্ত অর্থলাভের প্রবণতার সমালোচনা করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। এ ধরনের চর্চা থেকে চিকিৎসকদের বিরত থাকতে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘প্রায়ই বিভিন্ন গণমাধ্যমে ভুল চিকিৎসা ও রোগীকে হয়রানি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের খবর বের হয়। রাজধানীর নামীদামি ক্লিনিক থেকে শুরু করে মফস্বলের কিছু ক্লিনিক এ অপকর্মের সাথে জড়িত। যার জন্য কিছু চিকিৎসকের অপকর্মের দায় পুরো চিকিৎসক সমাজের ওপর পড়ে।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীর এক হোটেলে বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটি আয়োজিত আন্তর্জাতিক কার্ডিওভাসকুলার কনফারেন্স ‘বাংলাকার্ডিও-২০১৯’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।
‘অপকর্মের ফলে চিকিৎসক ও রোগীর আস্থার সম্পর্কে ফাটল ধরে। এসব ব্যাপারে আপনাদের সজাগ থাকতে হবে এবং দোষী ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে,’ বলেন তিনি।
বাজারে যাতে ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ আসতে না পারে সে বিষয়ে চিকিৎসকদের খেয়াল রাখার তাগিদ দেন রাষ্ট্রপতি। সেই সাথে তিনি দেশে আধুনিক ও প্রযুক্তিনির্ভর চিকিৎসা ব্যবস্থা চালুর জন্য দক্ষ ও প্রশিক্ষিত চিকিৎসক গড়ে তোলার প্রতি জোর দেন।
সরকার দেশে আধুনিক চিকিৎসা প্রবর্তনে সম্ভাব্য সব পদক্ষেপ নিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, সারা দেশের হাসপাতালগুলোতে আধুনিক ও উন্নত যন্ত্রপাতি সরবরাহ করা হয়েছে।
‘কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে অনেক সময় হাসপাতালে সরবরাহকৃত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার মতো জনবল থাকে না। থাকলেও প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার অভাবে যন্ত্রপাতির সঠিক ব্যবহার হচ্ছে না। ফলে একদিকে জনগণের টাকার অপচয় হচ্ছে অন্যদিকে মানুষ কাঙ্ক্ষিত সেবা প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ বিষয়ে নজর দেয়ার জন্য আমি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাই,’ বলেন তিনি।
এছাড়া, রাষ্ট্রপতি চিকিৎসা সামগ্রী কেনাকাটায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি বলে মত দেন।
আবদুল হামিদ বলেন, ‘চিকিৎসক হিসেবে আজকে আপনাদের যে অবস্থান তাতে আপনাদের মা-বাবা ও অভিভাবকদের পাশাপাশি এ দেশের সাধারণ মানুষের অনেক অবদান রয়েছে। তাই তাদের কথা ভুলবেন না।’
সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশেও হৃদরোগ ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তা এ দেশে মৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ হিসাবে দাঁড়িয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘এ ঘাতক রোগের হাত থেকে আমাদের স্বজনকে-জনসাধারণকে রক্ষা করতে এখনই সচেতন হতে হবে। দেশবাসীকে এ রোগের কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানাতে হবে। হৃদরোগের চিকিৎসা যেহেতু ব্যয়বহুল, তাই প্রতিরোধের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।’
বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটি দেশে হৃদরোগ চিকিৎসায় দক্ষ ও প্রশিক্ষিত জনবল গড়ে তুলতে সর্বোপরি দেশে হৃদরোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজে প্রশংসনীয় ভূমিকা রাখছে জানিয়ে তিনি বলেন, সেমিনার-সিম্পোজিয়াম-প্রশিক্ষণ কর্মশালা এবং বাংলাকার্ডিওর মতো আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটি এ লক্ষ্যে ইতিবাচক অবদান রেখে যাচ্ছে। তারা ভবিষ্যতেও এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালিক, জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার আবদুল মালিক (অব.), বাংলাদেশ কার্ডিয়াক সোসাইটির সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম মহিবুল্লাহ, মহাসচিব অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল সাফী মজুমদার, জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মীর জামাল উদ্দিন ও যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এনসি নান্দা অন্যান্যের মাঝে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রপতির সংশ্লিষ্ট সচিবরাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।