ঢাকা ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরের হামলার মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০
  • ২৭৫ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে ৩২ বছর আগে ১৯৮৮ সনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা (চট্টগ্রাম গণহত্যা) মামলার রায়ে সোমবার আদালত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে।
পাশাপাশি মামলায় প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত।
চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত বিশেষ জজ মো. ইসমাঈল হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কোতয়ালি থানার তৎকালীন পেট্রোল ইন্সপেক্টর গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল, কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ বড়ুয়া, মো. আবদুল্লাহ ও মমতাজ উদ্দিন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, লালদীঘি ময়দানে আওয়ামী লীগের সমাবেশ ঘীরে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আদালত আজ রায় ঘোষণা করেছেন।
১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি সংঘটিত গণহত্যায় ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত এবং অসংখ্য আহত হন। সেদিন চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি ময়দানে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ ছিল। সমাবেশে যোগ দিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার গাড়িবহর নিউমার্কেট মোড় অতিক্রম করে জিপিওর সামনে আসে। তখন আচমকা গর্জে উঠে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের রাইফেল।
এলোপাতাড়ি গুলিতে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন কুমার বিশ্বাস, স্বপন চৌধুরী, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দু মিয়া, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ, শাহাদাত, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া ও মো. কাসেম। পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের সময় মানববেষ্টনী তৈরি করে শেখ হাসিনাকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
নৃশংস এ হত্যার ঘটনায় ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর আগে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের আমলে এ ঘটনায় কেউ মামলা করার সাহস করেননি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।
আদালতের আদেশে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম এবং অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দাখিল করে।
অভিযোগপত্রে তৎকালীন সিএমপি কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদাসহ আট পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- ইনস্পেক্টর গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল, কনস্টেবল মুশফিকুর রহমান, বশির উদ্দিন, আব্দুস সালাম, প্রদীপ বড়ুয়া, মমতাজ উদ্দিন ও মো. আবদুল্লাহ। গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল ছিলেন কোতয়ালি অঞ্চলের পেট্রোল ইন্সপেক্টর। ঘটনার পর থেকেই তার কোনো হদিস নেই।
এ মামলার বাদী আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা, প্রধান আসামি তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আব্দুল কাদের এবং মামলার অপর দুই আসামি মৃত্যুবরণ করেছেন।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

১৯৮৮ সালে চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার গাড়ি বহরের হামলার মামলায় ৫ জনের মৃত্যুদণ্ড

আপডেট সময় : ০৫:৪৬:৫৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২০ জানুয়ারী ২০২০

নিউজ ডেস্ক: চট্টগ্রামের লালদীঘির মাঠে ৩২ বছর আগে ১৯৮৮ সনে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ও তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যা (চট্টগ্রাম গণহত্যা) মামলার রায়ে সোমবার আদালত পাঁচজনকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে।
পাশাপাশি মামলায় প্রত্যেককে ১০ বছর করে কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছে আদালত।
চট্টগ্রামের ভারপ্রাপ্ত বিশেষ জজ মো. ইসমাঈল হোসেন এই রায় ঘোষণা করেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কোতয়ালি থানার তৎকালীন পেট্রোল ইন্সপেক্টর গোবিন্দ চন্দ্র মণ্ডল, কনস্টেবল মোস্তাফিজুর রহমান, প্রদীপ বড়ুয়া, মো. আবদুল্লাহ ও মমতাজ উদ্দিন।
আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট মেজবাহ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, লালদীঘি ময়দানে আওয়ামী লীগের সমাবেশ ঘীরে গুলি চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় আদালত আজ রায় ঘোষণা করেছেন।
১৯৮৮ সালের ২৪ জানুয়ারি সংঘটিত গণহত্যায় ২৪ জন নেতা-কর্মী নিহত এবং অসংখ্য আহত হন। সেদিন চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি ময়দানে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের পূর্ব নির্ধারিত সমাবেশ ছিল। সমাবেশে যোগ দিতে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার গাড়িবহর নিউমার্কেট মোড় অতিক্রম করে জিপিওর সামনে আসে। তখন আচমকা গর্জে উঠে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের রাইফেল।
এলোপাতাড়ি গুলিতে একে একে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন মো. হাসান মুরাদ, মহিউদ্দিন শামীম, এথলেবার্ট গোমেজ কিশোর, স্বপন কুমার বিশ্বাস, স্বপন চৌধুরী, পঙ্কজ বৈদ্য, বাহার উদ্দিন, চান্দু মিয়া, অজিত সরকার, রমেশ বৈদ্য, বদরুল আলম, ডি কে চৌধুরী, পলাশ দত্ত, আব্দুল কুদ্দুস, গোবিন্দ দাশ, শাহাদাত, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুল মান্নান, সবুজ হোসেন, কামাল হোসেন, বি কে দাশ, সমর দত্ত, হাসেম মিয়া ও মো. কাসেম। পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণের সময় মানববেষ্টনী তৈরি করে শেখ হাসিনাকে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়।
নৃশংস এ হত্যার ঘটনায় ১৯৯২ সালের ৫ মার্চ আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা বাদী হয়ে চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে মামলা দায়ের করেন। এর আগে স্বৈরাচার এরশাদ সরকারের আমলে এ ঘটনায় কেউ মামলা করার সাহস করেননি। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর মামলার কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।
আদালতের আদেশে সিআইডি মামলাটি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ১২ জানুয়ারি প্রথম এবং অধিকতর তদন্ত শেষে ১৯৯৮ সালের ৩ নভেম্বর দ্বিতীয় দফায় অভিযোগপত্র দাখিল করে।
অভিযোগপত্রে তৎকালীন সিএমপি কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদাসহ আট পুলিশ সদস্যকে আসামি করা হয়।
মামলার অপর আসামিরা হলেন- ইনস্পেক্টর গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল, কনস্টেবল মুশফিকুর রহমান, বশির উদ্দিন, আব্দুস সালাম, প্রদীপ বড়ুয়া, মমতাজ উদ্দিন ও মো. আবদুল্লাহ। গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল ছিলেন কোতয়ালি অঞ্চলের পেট্রোল ইন্সপেক্টর। ঘটনার পর থেকেই তার কোনো হদিস নেই।
এ মামলার বাদী আইনজীবী মো. শহীদুল হুদা, প্রধান আসামি তৎকালীন পুলিশ কমিশনার মীর্জা রকিবুল হুদা, তদন্ত কর্মকর্তা এএসপি আব্দুল কাদের এবং মামলার অপর দুই আসামি মৃত্যুবরণ করেছেন।