বাকেরগঞ্জে চিকিৎসার নামে মানসিক রোগীকে পিটিয়ে ও ডুবিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী ভূয়া ফকির সহ তিন জন গ্রেফতার।
নিউজ ডেস্কঃ গত ৩১ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ থানার আউলিয়াপুরে চিকিৎসার নামে কালাম মৃধা(৪২) নামের এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করা হয় এবং ঘটনার পর থেকেই মূল আসামীসহ অন্য আসামী পলাতক ছিল। এ বিষয়ে র্যাব-৮ ছায়াতদন্ত শুরু করে। তদন্তের এক পর্যায়ে র্যাব-৮ এর একটি বিশেষ আভিযানিক দল জানতে পারে যে, ১নং আসামী রিয়াজউদ্দিন ফকির তার স্ত্রী ও ছেলেসহ বরিশালের রূপাতলী এলাকায় অবস্থান করছে। তারপর অভিযান পরিচালনা করে অদ্য ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০ তারিখ সকাল ১১.৩০ ঘটিকার সময় রূপাতলী এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করেছে।
প্রাথমিক ভাবে জানা যায়, কালাম মৃধার স্ত্রী শুক্রবারে সকালে দুই দেবরকে সাথে নিয়ে রিয়াজ ফকিরের বাড়ীতে যায়। রিয়াজ ফকির তাহার চাচাতো ভাই অসীম ফকির সহ ৪/৫ মিলে সকালে ও বিকালে কালাম মৃধাকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে ও বাড়ীর পুকুরে চুবায়। এতে কালাম মৃধা অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে মাজার সংলগ্ন একটি রুমে রাখা হয়। কালাম মৃধা সন্ধ্যায় মারা যাওয়ার পর হত্যাকারীরা তাহার লাশ বাড়ীর পাশে বাগানে ফেলে রাখে। আসামীর দাদা মৃত ফকির আঃ রহমান মুন্সী কালু শাহ দেওয়ান ১ম জীবনে মাদ্রাসার শিক্ষকতা করতেন এবং মুন্সী পদবী গ্রহণ করেন। পরবর্তীতে তিনি ফরিদপুরের দত্তপাড়ায় মোহনসা দেওয়ানের মুরিদ হয়ে এলাকায় এসে দরগাহ/খানকাহ খোলেন। তার মূত্যুর পর আসামীর চাচা সাম দেওয়ান উক্ত পীরদানী চালিয়ে যান এবং নাম দেন দেওয়ান মাজার যা বরিশালের কাউনিয়াতে অবস্থিত। সাম দেওয়ান মারা যাওয়ার পর তার ছেলে খোকন দেওয়ান পীরদানী চালু রাখেন। খোকন দেওয়ান মারা যাওয়ার পর ৪.৫ বছর ধরে বাকেরগঞ্জের আওলিয়াপুরে আসামী পীরদানী ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন।
মৃত কালাম মৃধা মানসিক রোগে ভুগছিলেন। গত ৩১ জানুয়ারি ২০২০ তারিখ শুক্রবারে কামালের চিকিৎসা শুরু করেন। চিকিৎসার নামে রোগীকে রিয়াজউদ্দিনের হুকুমে প্রচন্ড মারধর করে এবং পুকুরে ঠান্ডা পানিতে ১০১ বার চুবায়। ফলে রোগী মারা যায়। আসামী ফকির ব্যবসার মাধ্যমে রোগীদের ভূয়া চিকিৎসা দেয় এবং তাদের কাছ থেকে টাকা, ছাগল, গরু, চাল,মুরগী ইত্যাদি জিনিস গ্রহণ করে থাকে।
আসামীরা হচ্ছেন, ১) মোঃ রিয়াজউদ্দিন ফকির(৪৮), পিতাঃ মৃত কাষ্ণন আলী ফকির, ২) মোছাঃ তাসলিমা আক্তার লাকী(৪২), স্বামীঃ মোঃ রিয়াজউদ্দিন ফকির, ৩) মোঃ তৗহিদুর রহমান(১৮), পিতাঃ মোঃ রিয়াজউদ্দিন ফকির, সর্বসাংঃ আউলিয়াপুর, থানাঃ বাকেরগঞ্জ, জেলাঃ বরিশাল বলে জানায়। আকটকৃত তিন জনই প্রাথমিক ভাবে হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে। গ্রফতারকৃত আসামীদের বাকেরগঞ্জ থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।