ঢাকা ০২:২৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

২৫ মাস পর শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি পেলেন বেগম খালেদা জিয়া

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৪:৩৬:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ মার্চ ২০২০
  • ৩১৮ বার পড়া হয়েছে

নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতির দায়ে ২৫ মাস সাজা ভোগের পর ‘মানবিক বিবেচনায়’ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে মুক্তির আদেশের নথি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষের হাত ঘুরে বুধবার বিকালে ৩টার পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌঁছায়।

এরপর প্রয়োজনীয় অনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম জনান।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে খালেদাকে তার গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ নিয়ে যেতে আগেই হাসপাতালের বাইরে এনে রাখা হয় তার নিশান প্রেটোল গাড়ি। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পাঁচটি গাড়ি ও মাইক্রোবাসও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দেখা যায়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা এবং খালেদা জিয়ার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। কেবিন ব্লকে খালেদার মুক্তির অনুষ্ঠানিকতা শেষে নতুন একটি হুইলচেয়ার নিয়ে যাওয়া হয় ছয় তলার ৬২১ নম্বর কক্ষে।

কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ও জমায়েত না করার বিষয়ে বারবার হুঁশিয়ারির পরও বিএনপি নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় করলে পরিস্থিতি কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়ে। পুলিশ ও বিএনপি মহাসচিবকে হ্যান্ডমাইকে বারবার নেতাকর্মীদের হাসপাতাল চত্বর থেকে সরে যেতে অনুরোধ জানানো হয়।

খালেদার জামিনের জন্য আইনজীবীরা গত দুই বছরে বহুবার আদালতে গেলেও জামিন মঞ্জুর হচ্ছিল না। এই প্রেক্ষাপটে মার্চের শুরুতে তার সাময়িক মুক্তি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার খবর আসে।

তার তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, সরকার নির্বাহী আদেশে দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শর্ত হল- এই সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মঙ্গলবার শুধু বলেন, “খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনায় মানবিক কারণে সরকার সদয় হয়ে দণ্ডাদেশ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

আইন মন্ত্রণালয় তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে মঙ্গলবারেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠায়। এরপর বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নথি যায় গণভবনে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিজেও সকালে গণভবনে যান।

সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর বুধবার নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসে। মন্ত্রণালয় তখন খালেদার মুক্তির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে কারাগারে পাঠায়। এরপর খালেদা জিয়ার মুক্তির কাগজ নিয়ে একজন কারা কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছান।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

২৫ মাস পর শর্তসাপেক্ষে সাময়িক মুক্তি পেলেন বেগম খালেদা জিয়া

আপডেট সময় : ০৪:৩৬:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ মার্চ ২০২০

নিউজ ডেস্ক: দুর্নীতির দায়ে ২৫ মাস সাজা ভোগের পর ‘মানবিক বিবেচনায়’ সরকারের নির্বাহী আদেশে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি পেলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

তার দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে মুক্তির আদেশের নথি প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা কর্তৃপক্ষের হাত ঘুরে বুধবার বিকালে ৩টার পর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে পৌঁছায়।

এরপর প্রয়োজনীয় অনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে মুক্তি দেওয়া হয় বলে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের জেলার মাহবুবুল ইসলাম জনান।

বঙ্গবন্ধু মেডিকেল থেকে খালেদাকে তার গুলশানের বাসা ‘ফিরোজায়’ নিয়ে যেতে আগেই হাসপাতালের বাইরে এনে রাখা হয় তার নিশান প্রেটোল গাড়ি। বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের পাঁচটি গাড়ি ও মাইক্রোবাসও হাসপাতাল প্রাঙ্গণে দেখা যায়।

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা এবং খালেদা জিয়ার পরিবারের কয়েকজন সদস্যও উপস্থিত ছিলেন সেখানে। কেবিন ব্লকে খালেদার মুক্তির অনুষ্ঠানিকতা শেষে নতুন একটি হুইলচেয়ার নিয়ে যাওয়া হয় ছয় তলার ৬২১ নম্বর কক্ষে।

কিন্তু করোনাভাইরাস নিয়ে আতঙ্ক ও জমায়েত না করার বিষয়ে বারবার হুঁশিয়ারির পরও বিএনপি নেতাকর্মীরা হাসপাতালে ভিড় করলে পরিস্থিতি কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়ে। পুলিশ ও বিএনপি মহাসচিবকে হ্যান্ডমাইকে বারবার নেতাকর্মীদের হাসপাতাল চত্বর থেকে সরে যেতে অনুরোধ জানানো হয়।

খালেদার জামিনের জন্য আইনজীবীরা গত দুই বছরে বহুবার আদালতে গেলেও জামিন মঞ্জুর হচ্ছিল না। এই প্রেক্ষাপটে মার্চের শুরুতে তার সাময়িক মুক্তি চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করার খবর আসে।

তার তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার আইনমন্ত্রী আনিসুল হক জানান, সরকার নির্বাহী আদেশে দণ্ডের কার্যকারিতা স্থগিত করে খালেদা জিয়াকে শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

শর্ত হল- এই সময়ে খালেদা জিয়াকে ঢাকায় নিজের বাসায় থেকে চিকিৎসা নিতে হবে। তিনি বিদেশে যেতে পারবেন না।

সরকারের এই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যায় আইনমন্ত্রী আনিসুল হক মঙ্গলবার শুধু বলেন, “খালেদা জিয়ার বয়স বিবেচনায় মানবিক কারণে সরকার সদয় হয়ে দণ্ডাদেশ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

আইন মন্ত্রণালয় তাদের সিদ্ধান্ত জানিয়ে মঙ্গলবারেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সুপারিশ পাঠায়। এরপর বুধবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে নথি যায় গণভবনে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল নিজেও সকালে গণভবনে যান।

সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের পর বুধবার নথি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আসে। মন্ত্রণালয় তখন খালেদার মুক্তির বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে কারাগারে পাঠায়। এরপর খালেদা জিয়ার মুক্তির কাগজ নিয়ে একজন কারা কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় পৌঁছান।