নিউজ ডেস্ক::হাসপাতালে কোনো রোগী চিকিৎসা পেলে অথবা হাসপাতালে ভর্তি না করে রোগী ফিরিয়ে দেয়া হলে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা প্রত্যাহার।
করোনা পরিস্থিতিতে কোনও হাসপাতাল বা চিকিৎসক যদি সাধারণ কোনো রোগীকে ফিরিয়ে দেয় তাহলে সেনাবাহিনীর টহল পোস্ট অথবা থানায় জানানোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এমনকি, চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণাও দেয়া হয় গতকাল। তবে, এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর গতকাল বুধবারই চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার ওই ঘোষণা প্রত্যাহার করে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
তবে, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশন তা প্রত্যাহারের দাবি জানায়। না হলে গণপদত্যাগের ঘোষণাও দেন সরকারি চিকিৎসকরা।
বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডার অ্যাসোসিয়েশনের প্রতিবাদ লিপিতে বলা হয়, ‘স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হতে গত ফেব্রুয়ারি মাসেই পর্যাপ্ত সুরক্ষা পোশাক (পিপিই) সরবরাহ করার অনুরোধ জানিয়ে মন্ত্রণালয়ে পত্র পাঠানো হয়। কিন্তু, স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ন্যূনতম প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতাহীন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আমলাগণ সে সময়ে করোনা পরিস্থিতির ভয়াবহতা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হন। যার ফলে স্বাস্থ্য সেবাকর্মীদের যথাযথ সুরক্ষা পোশাকের ঘাটতিসহ সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় চরম ঘাটতি ও এ সংক্রান্ত ভয়াবহ পরিস্থিতি এখন দৃশ্যমান।
প্রতিবাদ লিপিতে আরও বলা হয়, ‘মন্ত্রণালয়ের সুস্পষ্ট ব্যর্থতাকে মেনে নিয়েও কোনো ধরনের ঝুঁকিভাতা বা প্রণোদনা ছাড়াই চিকিৎসা সেবা প্রদানকারী সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান যেখানে পর্যাপ্ত ও ক্ষেত্রবিশেষে কোনো ধরনের সুরক্ষা পোশাক ছাড়াই করোনার মতো মারাত্মক ব্যধিতে আক্রান্তসহ সব রোগীকে চিকিৎসা দেয়ার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চিকিৎসা দিতে গিয়ে এরইমধ্যে যেখানে চিকিৎসকরা এই মারণব্যধিতে আক্রান্ত হয়েছেন সেখানে স্বাস্থ্য সেবা প্রদানকারীদের আর্মি ও পুলিশের মাধ্যমে ব্যবস্থা গ্রহণ ও হেনস্তা করার মতো তীব্র উস্কানিমূলক ও তীব্র জিঘাংসামূলক একটি পত্র জারি করার মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা তার প্রশাসনিক অজ্ঞতা ছাড়াও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের চিকিৎসক কর্মকর্তাসহ সকল কর্মকর্তা কর্মচারিদের সরাসরি অপমান করেছেন।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত ওই পত্রের অপমানের ভার নিয়ে তাদের পক্ষে আর কোনও ধরনের দায়িত্ব পালন সম্ভব হবে না বলেও জানান বিসিএস স্বাস্থ্য ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
চিকিৎসকদের তীব্র প্রতিবাদের প্রেক্ষিতে বুধবার রাতেই স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিটি বাতিল ঘোষণা করে আরেকটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব রোকেয়া খাতুন স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সকল পর্যায়ের হাসপাতালে সাধারণ রোগীর প্রাথমিক ও জরুরি চিকিৎসা এবং নতুন রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাসহ যাবতীয় রোগীদের চিকিৎসা সেবা দিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশন দেয়া হয়। কোনো হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ নির্দেশ অমান্য করলে ভুক্তভোগীকে তাৎক্ষণিকভাবে স্থানীয় সেনাবাহিনীর টহল পোস্টে দায়িত্বরত কর্মকর্তা অথবা নিকটবর্তী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে অবহিত করার জন্য অনুরোধ করা হয়।
এ আদেশ অমান্য করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের রেজিস্ট্রেশন বাতিল, লাইসেন্স বাতিলসহ অন্যান্য আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়।