ঢাকা ০৬:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ছাত্রীকে নকলে বাধা দেয়ায় শিক্ষককে পেটানো হল

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৭:১৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০১৯
  • ৩৩২ বার পড়া হয়েছে

ধানসিঁড়ি নিউজঃ
পরীক্ষায় নকলের সুযোগ না দেওয়ায় পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. মাসুদুর রহমানকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। কলেজের গেটেই ৩৬তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডার এ প্রভাষককে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে অপদস্থ করা হয়।
ঘটনাটি গত ১২ মে ঘটলেও কলেজের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিষয়টি আলোচনায় আসে মঙ্গলবার রাতে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কলেজ গেট থেকে মোটরসাইকেলে করে বের হওয়ার সময় কয়েকজন যুবক এসে অতর্কিত হামলা চালায় শিক্ষক মাসুদুর রাহমানের উপর। তাকে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও থাপ্পড় মারা হয়। ফেলে দেয়া হয় মাথার পাগড়িও। একপর্যায়ে তিনি বেরিয়ে যেতে চাইলে পেছন থেকে এসে তাকে ফের লাথি মারেন এক যুবক। অবশ্য দুএকজনকে এসময় দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতেও দেখা যায়।
ভিডিওটি শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেকেই। একজন শিক্ষককে এভাবে অপদস্ত করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তারা।
ঘটনার শিকার শিক্ষক মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘গত ৬ মে এইচএসসি পরীক্ষায় সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী নকল করছিল। এ জন্য আমি দুই ছাত্রীর খাতা নিয়ে নেই। এর পর থেকে ওই দুই ছাত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ছাত্র আমার নামে নানা মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে আসছে। মূলত নকল ধরার জন্যই তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে।’
ওই শিক্ষক বলেন, ‘গত ১২ মে দুপুরে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমার ওপর হামলা চালায়। আমাকে কিল-ঘুষি মারে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় আমার মাথার পাগড়ি খুলে পড়ে। এ ছাড়া পেছন থেকে সজোরে লাত্থি মারে। সেসময় আমাকে বলা হয়; তুই আর কলেজে আসবি না কলেজে আসলে তোর হাত কেটে নেবো। বাংলা বিভাগে আগুন ধরিয়ে দেবো। এরপর আমার সিনিয়র শিক্ষকরা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। এরপর থেকে আমার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমাকে কিছুদিনের জন্য কলেজে যেতে মানা করেছেন শিক্ষকরা।’
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ এনেছেন সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শামসুদ্দিন আহমেদ জন্নুন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষক মাসুদুর রহমান কলেজের এক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষক নানাভাবে ওই ছাত্রীকে হয়রানি করে আসছেন। গত ১২ মে যারা হামলা করেছে তারা ছাত্রলীগের কেউ নন, তারা বিক্ষুব্ধ। আমি নিজে এসে ক্ষুদ্ধ ছাত্রদের নিবৃত্ত করেছি এবং ধমক দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে গেছি।’
সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যক্ষ এম এ কুদ্দুস বলেন, ‘এই ঘটনায় সহযোগী অধ্যাপক ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পালকে প্রধান করে এবং ড. ইসমত আরা ও সহকারী অধ্যাপক হারুনুর রশিদসহ কলেজের কর্মচারী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নিয়ে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

ছাত্রীকে নকলে বাধা দেয়ায় শিক্ষককে পেটানো হল

আপডেট সময় : ০৭:১৮:৫৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০১৯

ধানসিঁড়ি নিউজঃ
পরীক্ষায় নকলের সুযোগ না দেওয়ায় পাবনার সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মো. মাসুদুর রহমানকে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। কলেজের গেটেই ৩৬তম বিসিএসের শিক্ষা ক্যাডার এ প্রভাষককে কিল, ঘুষি ও লাথি মেরে অপদস্থ করা হয়।
ঘটনাটি গত ১২ মে ঘটলেও কলেজের সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ভাইরাল হলে বিষয়টি আলোচনায় আসে মঙ্গলবার রাতে।
সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কলেজ গেট থেকে মোটরসাইকেলে করে বের হওয়ার সময় কয়েকজন যুবক এসে অতর্কিত হামলা চালায় শিক্ষক মাসুদুর রাহমানের উপর। তাকে এলোপাথাড়ি কিল, ঘুষি ও থাপ্পড় মারা হয়। ফেলে দেয়া হয় মাথার পাগড়িও। একপর্যায়ে তিনি বেরিয়ে যেতে চাইলে পেছন থেকে এসে তাকে ফের লাথি মারেন এক যুবক। অবশ্য দুএকজনকে এসময় দুর্বৃত্তদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতেও দেখা যায়।
ভিডিওটি শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন অনেকেই। একজন শিক্ষককে এভাবে অপদস্ত করার ঘটনায় নিন্দা জানিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছেন তারা।
ঘটনার শিকার শিক্ষক মো. মাসুদুর রহমান বলেন, ‘গত ৬ মে এইচএসসি পরীক্ষায় সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজে কয়েকজন ছাত্র-ছাত্রী নকল করছিল। এ জন্য আমি দুই ছাত্রীর খাতা নিয়ে নেই। এর পর থেকে ওই দুই ছাত্রীর ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ছাত্র আমার নামে নানা মিথ্যে অভিযোগ দিয়ে আসছে। মূলত নকল ধরার জন্যই তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে।’
ওই শিক্ষক বলেন, ‘গত ১২ মে দুপুরে মোটরসাইকেলে বাড়ি ফেরার সময় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমার ওপর হামলা চালায়। আমাকে কিল-ঘুষি মারে এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এ সময় আমার মাথার পাগড়ি খুলে পড়ে। এ ছাড়া পেছন থেকে সজোরে লাত্থি মারে। সেসময় আমাকে বলা হয়; তুই আর কলেজে আসবি না কলেজে আসলে তোর হাত কেটে নেবো। বাংলা বিভাগে আগুন ধরিয়ে দেবো। এরপর আমার সিনিয়র শিক্ষকরা এগিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং আমাকে বাড়ি চলে যেতে বলেন। এরপর থেকে আমার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমাকে কিছুদিনের জন্য কলেজে যেতে মানা করেছেন শিক্ষকরা।’
ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ এনেছেন সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শামসুদ্দিন আহমেদ জন্নুন। তিনি বলেন, ‘শিক্ষক মাসুদুর রহমান কলেজের এক ছাত্রীকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন। সে প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় ওই শিক্ষক নানাভাবে ওই ছাত্রীকে হয়রানি করে আসছেন। গত ১২ মে যারা হামলা করেছে তারা ছাত্রলীগের কেউ নন, তারা বিক্ষুব্ধ। আমি নিজে এসে ক্ষুদ্ধ ছাত্রদের নিবৃত্ত করেছি এবং ধমক দিয়ে ফিরিয়ে নিয়ে গেছি।’
সরকারি শহীদ বুলবুল কলেজের অধ্যক্ষ এম এ কুদ্দুস বলেন, ‘এই ঘটনায় সহযোগী অধ্যাপক ড. কৃষ্ণেন্দু কুমার পালকে প্রধান করে এবং ড. ইসমত আরা ও সহকারী অধ্যাপক হারুনুর রশিদসহ কলেজের কর্মচারী ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নিয়ে সাত সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।