ঢাকা ০৪:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ২৬ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে কাউকে ছাড় নয়: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

  • বার্তা কক্ষ
  • আপডেট সময় : ০৯:২৬:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০১৯
  • ৩১৭ বার পড়া হয়েছে

অনলাইন ডেস্ক:

বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে কড়াকড়ি আরোপের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যখনই বিমানে উঠি, তখনই একটি ঘটনা ঘটে বা একটি নিউজ হয়। এটি কেন হয়, আমি জানি না। এখন সবাই আবার ভিআইপি, ভিভিআইপি এরপর আবার আরও “ভি” লাগবে। যত “ভি” লাগুক, বাংলাদেশে (ইমিগ্রেশনে) এরপর আর কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

আজ রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মন্তব্য করেন। ১২ দিনের সরকারি সফরের বিষয়ে দেশবাসীকে অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী।

ফিনল্যান্ড সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনতে গত বুধবার রাতে বিমানের ড্রিমলাইনার বোয়িং ৭৮৭ উড়োজাহাজ ঢাকা থেকে কাতারের উদ্দেশে রওনা দেয়। কিন্তু পাসপোর্ট ছাড়াই বিমানটি চালিয়ে কাতারের দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যান পাইলট ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ।

বিমানের ক্যাপ্টেনের এমন কাজের বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘হয়তো পাসপোর্ট (নেওয়া) ভুলে যেতে পারে, পাসপোর্ট (নিতে) ভোলা কোনো ব্যাপার না। এখানে ইমিগ্রেশনে যারা ছিল, তাদের তো এই নজরটা থাকতে হবে। তারা কেন সেটি চেক করেনি, দেখেনি? আমরা এখন ইমিগ্রেশনে খুব কড়াকড়ি করতে বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকের পাসপোর্টে সিল মারা আছে কি না, তাদের চেক ভালোভাবে হচ্ছে কি না—এসব বাড়াতে হবে। এরপর ভিআইপি এনক্লেভ আছে যেগুলো, সেখানেও তাদের লাগেজ চেক করার ব্যবস্থা করতে হবে। সেখানে কেউ যেতে গেলে টিকিট করে যেতে হবে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব যে কেউ যাওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা আইকাওয়ার যে সিকিউরিটি লেভেল, তার ৭০ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা নিয়ে কোনোমতে একটা ব্যবস্থা ছিল। আমরা বারবার ব্যবস্থা নিচ্ছি, চেক করছি, এ জন্য অনেকের পছন্দ হবে না। কারণ আগে যেগুলো করতে পারত, এখন পারছে না। আমরা ঠাট্টা করে তো বলি স্বর্ণপ্রসবিনী বিমান। খালি আমরা গোল্ড পাই, আমাদের রিজার্ভ বাড়ে, খুব ভালো কথা। সেগুলো বন্ধ করার জন্য যে ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। এই সিকিউরিটির ওপরে ব্রিটিশরা বাধা দিল, একবার অস্ট্রেলিয়া বাধা দিল।’

‘এসব ঘটনা তাঁরা ঘটাতে পারেন, যাঁরা বিমানকে নিয়ে খেলছেন’, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিমানটাকে নিয়ে যারা খেলত, তাদের হয়তো আঁতে একটু ঘা লেগেছে। এখানে কারা কারা কীভাবে চাকরি পেয়েছিল, সেগুলো আপনারা ভালো করে জানেন। আমি বলেছি সব খুঁজে বের করার ব্যবস্থা নিতে হবে। এতগুলো বিমান আমরা কিনে দিলাম, এত সুন্দরভাবে চলছে, আমাদের বাঙালি যে যেখানে আছেন, নিজের দেশের ক্যারিয়ারে চড়ার জন্য পাগল তাঁরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘টিকিট নিয়ে ঝামেলা ছিল, টিকিট নাই অথচ সিট খালি। এখন আর সিট খালি থাকে না, যারা সিটের ব্যবসা করত, তাদেরও তো একটা ক্ষোভ-রাগ-দুঃখ আছে। আমার কাছে শত শত মেইল যাচ্ছে যে আপনি বিমানে আসবেন না। আমি বলেছি বিমানে আসব না মানে? যা হওয়ার হোক, মরলে নিজের প্লেনে তো মরব। নিজের প্লেনে মরলে তো নিজের মাটিতে মরব।’

ধর্মীয় বিদ্বেষের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীরা যত বেশি শিক্ষিত হবে, নিজের পায়ে দাঁড়াবে—সেটাই হবে জবাব। আমার নারী পাইলট আছে, আমার নারী অফিসার-মেজর জেনারেল আছে, আমরা নারীদের তো সব জায়গায় নিয়ে এসেছি—এটা কি জবাব না?’ তিনি বলেন, হাত মোজা, পা মোজা পরে এটা কী? জীবন্ত একটা টেন্ট হয়ে ঘুরে বেড়ানো।

ভারত সফর ও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অবস্থা হলো চীন-ভারত সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। আমরা সেভাবে চলছি, আমরা ওভাবে চলব। কোন দেশের সঙ্গে কার কী, সেটা আমাদের মাথাব্যথা না। তবে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আমরা আলাদাভাবে ভারত-চীন-জাপানের সঙ্গে কথা বলছি। তারা প্রত্যেকে এটা মেনে নেন, হ্যাঁ এরা মিয়ানমারের নাগরিক তাদের ফিরে যাওয়া উচিত। সব সময় এটাও তাঁরা বলেন, সবাই যদি এদের (মিয়ানমার) বিরুদ্ধে লাগি, তবে এদের মানাবে কে? এটাও একটি ব্যাপার আছে।’

ভাসানচরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে, ‘যারা এদের এখানে ভলান্টিয়ার সার্ভিস দিতে আসে, এরা কোনো দিন চায় না যে কোনো রিফিউজি তাদের দেশে ফিরে যাক। এখানেই সমস্যাটা। আমরা যে চুক্তি-তালিকা করলাম, তারপর হঠাৎ এরা আন্দোলন করল যে তারা যাবে না। এই আন্দোলনের উসকানিটা তাদের কারা দিল? এই সংস্থাগুলো কখনোই চায় না যে এরা ফিরে যাক। কারণ এই বিশাল অঙ্কের টাকা, অনেকের চাকরিবাকরি থাকবে না, এটা কেন হবে? মুশকিলটা হয়েছে মিয়ানমারকে নিয়ে, তারা কিছুতেই এদের নিতে চায় না।’

ট্যাগস :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

আপলোডকারীর তথ্য

জনপ্রিয় সংবাদ

পুলিশের উপর মহলে বড় ধরনের রদবদল

বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে কাউকে ছাড় নয়: মাননীয় প্রধানমন্ত্রী

আপডেট সময় : ০৯:২৬:৪৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৯ জুন ২০১৯

অনলাইন ডেস্ক:

বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে কড়াকড়ি আরোপের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যখনই বিমানে উঠি, তখনই একটি ঘটনা ঘটে বা একটি নিউজ হয়। এটি কেন হয়, আমি জানি না। এখন সবাই আবার ভিআইপি, ভিভিআইপি এরপর আবার আরও “ভি” লাগবে। যত “ভি” লাগুক, বাংলাদেশে (ইমিগ্রেশনে) এরপর আর কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

আজ রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই মন্তব্য করেন। ১২ দিনের সরকারি সফরের বিষয়ে দেশবাসীকে অবহিত করতে সংবাদ সম্মেলনে আসেন প্রধানমন্ত্রী।

ফিনল্যান্ড সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনতে গত বুধবার রাতে বিমানের ড্রিমলাইনার বোয়িং ৭৮৭ উড়োজাহাজ ঢাকা থেকে কাতারের উদ্দেশে রওনা দেয়। কিন্তু পাসপোর্ট ছাড়াই বিমানটি চালিয়ে কাতারের দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নিয়ে যান পাইলট ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ।

বিমানের ক্যাপ্টেনের এমন কাজের বিষয়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘হয়তো পাসপোর্ট (নেওয়া) ভুলে যেতে পারে, পাসপোর্ট (নিতে) ভোলা কোনো ব্যাপার না। এখানে ইমিগ্রেশনে যারা ছিল, তাদের তো এই নজরটা থাকতে হবে। তারা কেন সেটি চেক করেনি, দেখেনি? আমরা এখন ইমিগ্রেশনে খুব কড়াকড়ি করতে বলেছি।’ তিনি বলেন, ‘প্রত্যেকের পাসপোর্টে সিল মারা আছে কি না, তাদের চেক ভালোভাবে হচ্ছে কি না—এসব বাড়াতে হবে। এরপর ভিআইপি এনক্লেভ আছে যেগুলো, সেখানেও তাদের লাগেজ চেক করার ব্যবস্থা করতে হবে। সেখানে কেউ যেতে গেলে টিকিট করে যেতে হবে। আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধব যে কেউ যাওয়ার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘বিমানবন্দরের নিরাপত্তাব্যবস্থা আইকাওয়ার যে সিকিউরিটি লেভেল, তার ৭০ শতাংশ অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগে বিমানবন্দরে নিরাপত্তা নিয়ে কোনোমতে একটা ব্যবস্থা ছিল। আমরা বারবার ব্যবস্থা নিচ্ছি, চেক করছি, এ জন্য অনেকের পছন্দ হবে না। কারণ আগে যেগুলো করতে পারত, এখন পারছে না। আমরা ঠাট্টা করে তো বলি স্বর্ণপ্রসবিনী বিমান। খালি আমরা গোল্ড পাই, আমাদের রিজার্ভ বাড়ে, খুব ভালো কথা। সেগুলো বন্ধ করার জন্য যে ব্যবস্থা আমরা নিচ্ছি। এই সিকিউরিটির ওপরে ব্রিটিশরা বাধা দিল, একবার অস্ট্রেলিয়া বাধা দিল।’

‘এসব ঘটনা তাঁরা ঘটাতে পারেন, যাঁরা বিমানকে নিয়ে খেলছেন’, উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিমানটাকে নিয়ে যারা খেলত, তাদের হয়তো আঁতে একটু ঘা লেগেছে। এখানে কারা কারা কীভাবে চাকরি পেয়েছিল, সেগুলো আপনারা ভালো করে জানেন। আমি বলেছি সব খুঁজে বের করার ব্যবস্থা নিতে হবে। এতগুলো বিমান আমরা কিনে দিলাম, এত সুন্দরভাবে চলছে, আমাদের বাঙালি যে যেখানে আছেন, নিজের দেশের ক্যারিয়ারে চড়ার জন্য পাগল তাঁরা।’ তিনি আরও বলেন, ‘টিকিট নিয়ে ঝামেলা ছিল, টিকিট নাই অথচ সিট খালি। এখন আর সিট খালি থাকে না, যারা সিটের ব্যবসা করত, তাদেরও তো একটা ক্ষোভ-রাগ-দুঃখ আছে। আমার কাছে শত শত মেইল যাচ্ছে যে আপনি বিমানে আসবেন না। আমি বলেছি বিমানে আসব না মানে? যা হওয়ার হোক, মরলে নিজের প্লেনে তো মরব। নিজের প্লেনে মরলে তো নিজের মাটিতে মরব।’

ধর্মীয় বিদ্বেষের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নারীরা যত বেশি শিক্ষিত হবে, নিজের পায়ে দাঁড়াবে—সেটাই হবে জবাব। আমার নারী পাইলট আছে, আমার নারী অফিসার-মেজর জেনারেল আছে, আমরা নারীদের তো সব জায়গায় নিয়ে এসেছি—এটা কি জবাব না?’ তিনি বলেন, হাত মোজা, পা মোজা পরে এটা কী? জীবন্ত একটা টেন্ট হয়ে ঘুরে বেড়ানো।

ভারত সফর ও রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের বিষয়ে অপর এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের অবস্থা হলো চীন-ভারত সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব। আমরা সেভাবে চলছি, আমরা ওভাবে চলব। কোন দেশের সঙ্গে কার কী, সেটা আমাদের মাথাব্যথা না। তবে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আমরা আলাদাভাবে ভারত-চীন-জাপানের সঙ্গে কথা বলছি। তারা প্রত্যেকে এটা মেনে নেন, হ্যাঁ এরা মিয়ানমারের নাগরিক তাদের ফিরে যাওয়া উচিত। সব সময় এটাও তাঁরা বলেন, সবাই যদি এদের (মিয়ানমার) বিরুদ্ধে লাগি, তবে এদের মানাবে কে? এটাও একটি ব্যাপার আছে।’

ভাসানচরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে দায়ী করে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা আছে, ‘যারা এদের এখানে ভলান্টিয়ার সার্ভিস দিতে আসে, এরা কোনো দিন চায় না যে কোনো রিফিউজি তাদের দেশে ফিরে যাক। এখানেই সমস্যাটা। আমরা যে চুক্তি-তালিকা করলাম, তারপর হঠাৎ এরা আন্দোলন করল যে তারা যাবে না। এই আন্দোলনের উসকানিটা তাদের কারা দিল? এই সংস্থাগুলো কখনোই চায় না যে এরা ফিরে যাক। কারণ এই বিশাল অঙ্কের টাকা, অনেকের চাকরিবাকরি থাকবে না, এটা কেন হবে? মুশকিলটা হয়েছে মিয়ানমারকে নিয়ে, তারা কিছুতেই এদের নিতে চায় না।’