রোজ রবিবার, ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, সকাল ৬:৫৭


					
				
ও,এম,এস-এর খোলা বাজারে চাল বিক্রির জন্য নতুন এ্যাপস তৈরি করলেন টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার ‘নির্বাহী অফিসার’ (UNO) শামীম আরা নিপা।

ও,এম,এস-এর খোলা বাজারে চাল বিক্রির জন্য নতুন এ্যাপস তৈরি করলেন টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার ‘নির্বাহী অফিসার’ (UNO) শামীম আরা নিপা।

ধানসিঁড়ি নিউজ//সবকিছুই ‘নষ্টদের দখলে’ যায়নি আজও। আর যায়নি বলেই স্বপ্নটা মোটা দাগেই দেখার সাহস পাচ্ছি। চলমান করোনাকালে Open Market Sale (OMS)- এর জন্য ১০ টাকা কেজির চাল নিয়ে বহু ‘নয়-ছয়’ ঘটেছে। ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার সুযোগটিই বারবার গ্রহণ করা হয়েছে এসব ক্ষেত্রে।

ও,এম,এস-এর খোলা বাজারে বিক্রির চাল নিয়ে, দুর্বৃত্ত’দের ‘চালবাজি’ বন্ধ করে দেয়ার পথ দেখিয়েছেন টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার ‘নির্বাহী অফিসার’ (UNO) শ্রদ্ধেয় শামীম আরা নিপা।

তিনি অক্লান্ত পরিশ্রম করে সহজ পদ্ধতিতে, কালিহাতি উপজেলার দুটি পৌরসভার ২৪০০ কর্মহীন মানুষকে ডিজিটাল কার্ডে ১০ টাকা কেজি দরে চাল বিক্রির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

কি করেছেন তিনি?

Open Market Sale (OMS) চাল বিক্রি ব্যবস্থাপনার সব’চে বড় দুর্বলতা হচ্ছে জালিয়াতির মাধ্যমে ডিলারদের বিক্রি দেখানো এবং অসৎ ক্রেতাদের একাধিকবার নির্ধারিত পরিমান চাল (প্রতিবার ১০ কেজি) উত্তোলন। শ্রদ্ধেয় শামীম আরা নিপা এই সুযোগটি বন্ধ করার জন্য তথ্যভাণ্ডার তৈরি করেছেন।

যেখানে যাদের জন্য চাল বিক্রির কার্যক্রম, ডিলার/বিক্রেতার নাম ও ঠিকানাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য রয়েছে। আর ক্রেতাদের দেয়া হয়েছে QR Code যুক্ত ডিজিটাল কার্ড। এই কাজে তিনি স্থানীয় কলেজ ছাত্র, আল আমিন ও তাঁর দলের সদস্যদের সহযোগিতায় বানিয়ে নিয়েছেন একটি অ্যাপ। রাতদিন কাজ করেছেন তাঁরা। এই অ্যাপ OMS ডিলার তার মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করে নিয়েছেন। কোনো ক্রেতা চাল কিনতে এলে তার কার্ডের QR Code স্ক্যান করে পরিচয় যাচাই করবেন।

এতে দুই পক্ষের তথ্যই খুব সহজেই তদারকি সম্ভব। OMS এর চাল একজন ক্রেতা কি পরিমান কিনতে পারবেন সেটি সরকার কর্তৃক নির্ধারিত আছে, আবার বিক্রেতা বা ডিলার কী পরিমাণ চাল বিক্রি করবেন সেটার পরিমাণও নির্দিষ্ট। ডিলার চাইলেই এক্ষেত্রে কার্ড ছাড়া অন্যত্র চাল বিক্রি করতে পারবেনা।

শুধু তাই নয়, এই অ্যাপ চলমান করোনাকালে মানুষকে সুরক্ষা দিতেও সক্ষম। যেহেতু ডিলাররা অ্যানড্রোয়েড ফোনের মাধ্যমে অ্যাপে একবার লগইন করেই কার্ডের QR Code স্ক্যান করে চাল বিক্রি করবে। সঙ্গে সঙ্গেই তা ইলেক্ট্রনিক হিসেবের আওতায় চলে আসবে, ফলে ডিলারদের কাগজে কলমে মাস্টাররোল তৈরির ঝামেলা ও টিপসই নেবার মুহূর্তে ভাইরাস সংক্রমণের যে ঝুঁকির সৃষ্টি হয় তা অনেকটাই কমে যাবে।

এতদিন চালের ক্রয়-বিক্রয়ের পরিমাণ সঠিকভাবে যাচাই করা হতোনা। ফলে নানা ধরনের নেতিবাচক ঘটনার খবর আসতো। এখন শামীম আরা নিপার পদ্ধতিতে সহজেই এই তথ্য পাওয়া যাবে। ফলে কেউ চাইলেই অতি সহজে দুর্নীতি করতে পারবে না।

উল্লেখ্য যে, আজ ১৯ এপ্রিল রোববার এই পদ্ধতি অনুসরণ করে ২৪০০ কর্মহীন মানুষের কাছে ১০ টাকা কেজির OMS চাল বিক্রি করা হয়েছে।

গত এক দশকে আমরা সরকারী-বেসরকারী প্রতিষ্ঠানে বহু দরকারি ও বেদরকারি অ্যাপসের ‘ভানুমতির খেল’ দেখেছি। কিন্তু মানুষের প্রয়োজনে এসব অ্যাপসের মোট কতগুলো কাজে লেগেছে সেটা গবেষণার দাবী রাখে। A2i এবং ICT মন্ত্রণালয় এই ঘোর দুর্দিনে টাঙ্গাইলের কালিহাতি উপজেলার ইউএনও শামীম আরা নিপার দেখানো পথটিকে পুরো বাংলাদেশে ছড়িয়ে দেয়া যায় কিনা সেটাই দেখবার বিষয় এখন।

OMS এর চাল দরিদ্র মানুষের হাতে পৌঁছাবার নিশ্চিত এই পদ্ধতি উদ্ভাবন ও প্রণয়ন করেন ২৯ তম ব্যাচের বিসিএস কর্মকর্তা, শামীম আরা নিপা।

(সরেজমিন তথ্য কৃতজ্ঞতাঃ
শ্রদ্ধেয় সুহৃদ ‘লেখক-গবেষক’ সালেক খোকন)

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন-০১৮২২৮১৫৭৪৮

Md Saiful Islam